বর্ষা মৌসুমেও রাজধানীসহ দেশজুড়ে চলছে তাপপ্রবাহ। সেই সঙ্গে জ্বালানি সংকটে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমিয়ে দেয়ায় শিডিউল করে দেয়া হচ্ছে লোডশেডিং। ফলে গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন।
আবহাওয়া অধিদপ্তর মঙ্গল-বুধবার থেকে বৃষ্টির সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে। বৃষ্টিও হয়েছে দুদিন। তবে পরিমাণ অনেক কম। এলাকাভেদে সামান্য বৃষ্টিপাত হলেও গরমের তীব্রতা কমেনি সেভাবে।
ভ্যাপসা গরম থেকে একটু স্বস্তি পেতে কিছুদিন থেকেই চাহিদা বেড়েছে এয়ার কন্ডিশনার বা এসির।
বুধবার রাজধানীর বেশ কয়েকটি ইলেকট্রনিকস কোম্পানির শোরুম ঘুরে এ তথ্য জানা গেছে।
বিভিন্ন শোরুমের ম্যানেজার ও বিক্রয় প্রতিনিধিরা বলছেন, তীব্র গরমের কারণে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে এসির চাহিদা। পাশাপাশি ফ্যান ও অন্যান্য এয়ার কুলিং সিস্টেমের বিক্রিও বেশি হচ্ছে।
বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম মার্কেটে রয়েছে বেশ কিছু বড় এসির দোকান। সেখানে অন্যতম একটি শোরুম এম কে ইলেকট্রনিকস।
প্রতিষ্ঠানটির ই-কমার্স ম্যানেজার খালেদ উদ্দিন আমির নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গরম শুরু হলে স্বাভাবিকভাবেই এসি কেনার হিড়িক পড়ে। গত কয়েক দিনে গরম বেশি ছিল, এ সময় আমাদের দৈনিক স্বাভাবিক সেলের চেয়ে আরও ৩০ শতাংশ বেশি কুলিং সিস্টেম যেমন- এয়ার কন্ডিশনার, এয়ারকুলার, ফ্যান ইত্যাদির বিক্রি বেড়ে গেছে। এর বেশির ভাগই এসি বিক্রি হয়েছে। তবে অল্প কিছু ফ্যান ও এয়ারকুলারও বিক্রি হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন ধরনের ব্র্যান্ড আমাদের কাছে আছে। কাস্টমারদের চাহিদা অনুযায়ী আমরা সেগুলো সরবরাহ করছি।’
গরমে বিক্রি বেশি হচ্ছে জানিয়ে আমির বলেন, ‘কিছু কাস্টমার তাদের বাসার কুলিং সিস্টেম যেটা আছে, সেটা দিয়ে গরমটা পার করার চেষ্টা করেন। কিন্তু এবার যে গরমটা পড়ছে তাতে তারাও এসি কিনতে আসছেন। এমন কাস্টমার পাওয়া গেছে গত কয়েক দিনে অনেক।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজ একটু ব্যস্ততা কম। তবে গত কয়েক দিন আমাদের ই-কমার্স সেকশনে যারা কাস্টমার সার্ভ করেন, তারা খুবই ব্যস্ত সময় পার করেছেন। এসি কেনার জন্য অনেক কাস্টমারের জিজ্ঞাসার উত্তর দিতে ব্যস্ত থেকেছেন তারা।’
বনশ্রীর এসি ওয়ার্ল্ড ইলেকট্রনিকসের মফিজুল ইসলাম বলেন, ‘গত বছরের তুলনায় এ বছর এসির বিক্রি কম। তবে গত কয়েক দিন গরম পড়ায় এসির বিক্রি কিছুটা বেড়েছে। আগে দিনে ৩টা থেকে ৪টা বিক্রি হলে সেটা ৫টা থেকে ৭টা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে।’
বাংলামটরের এসি মার্ট শোরুমের ম্যানেজার রাফিজ আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গরমের কারণে এসির বিক্রি বেড়েছে। এখন বাসাবাড়ির এসির চাহিদাই বেশি।’
ওই শোরুমের ক্রেতা ব্যাংক কর্মকর্তা সাইফুল বাশার বলেন, ‘আমার বাবা-মা দুজনেরই বয়স হয়েছে। এই তীব্র গরমে তাদের বেশ কষ্ট হচ্ছে। তাই পরিবারের সবার কথা ভেবেই এসি কিনব বলে এসেছি। যে বাসায় থাকি সেখানে ফ্যান আছে, তবে গরমে সেটার সার্ভিস যথেষ্ট নয়।’
ধানমন্ডির হায়ারের শোরুমের সেলস ইনচার্জ এম এ রাজু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আজ এসির বিক্রি কিছুটা কম। গরম বাড়লে এসি বিক্রিও বাড়ে। গতকাল পর্যন্ত আমরা ৮ থেকে ১০টা এসি বিক্রি করেছি। সেটা কয়েক দিন আগেও এর অর্ধেক বিক্রি হয়েছে।’
ক্রেতাদের চাহিদার কথা বিবেচনা করে কোম্পানিগুলো দিচ্ছে নানা রকম ছাড়, এক্সচেঞ্জ অফার, ক্যাশ ভাউচারসহ বিভিন্ন গিফট।