ঈদুল আজহায় বিপুলসংখ্যক পশু জবাই হলেও সে তুলনায় চামড়া সংগ্রহ করতে পারেননি ব্যবসায়ীরা। নগদ টাকার সংকট ও লবণের দাম বেশি হওয়ায় কুষ্টিয়ার চামড়া মোকামে অনেকটাই হাহাকার চলছে। লক্ষ্যমাত্রার চার ভাগের এক ভাগও চামড়া সংগ্রহ করতে পারেননি আড়তদাররা।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ‘যারা লবণ দিয়ে চামড়া সংগ্রহ করে রাখেন, সেসব ফড়িয়া বাকিতে চামড়া দিচ্ছেন না। এমনকি তারা আড়তে যোগাযোগও করছেন না। আবার ট্যানারি মালিকরা কুষ্টিয়ার ব্যবসায়ীদের কয়েক বছরের বকেয়া পরিশোধ করেননি। এতে ব্যবসায়ীরা পড়েছেন নগদ টাকার সংকটে। এ অবস্থায় তারা চামড়া কিনতে পারছেন না।’
চামড়ার আড়তদার রাজু আহমেদ বলেন, ‘ফড়িয়ারা কোরবানির চামড়া সংগ্রহ করেছেন। তারা লবণ দিয়ে নিজ নিজ হেফাজতে তা রেখে দিয়েছেন। আড়তে যোগাযোগ করছেন না। পরে বেশি দাম পেলে এবং নগদ টাকা পেলে চামড়া বিক্রি করবেন। আবার অনেকে স্থানীয় আড়তে না দিয়ে সুযোগ পেলেই সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচার করবেন।’
কুষ্টিয়া শহরের বাবর আলী গেট এলাকায় আছে দেশের অন্যতম চামড়ার মোকাম, যা চামড়াপট্টি বলে খ্যাত। এই মোকামে ৫০ জন ব্যবসায়ী চামড়া ব্যবসা ধরে রেখেছেন। কুষ্টিয়া ও আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে পশুর চামড়া এখানে আসে।
এবার কোরবানির পর ১৪-১৫ জন ব্যবসায়ীকে আড়ত খুলে সক্রিয়ভাবে চামড়া কিনতে দেখা গেছে। অন্যরা হাত গুটিয়ে বসে আছেন নানা কারণে। ঢাকা ও সাভারের ট্যানারি মালিকদের কাছে ১০ কোটি টাকার বেশি বকেয়া পড়ে আছে বলে দাবি করেন ব্যবসায়ীরা।
কুষ্টিয়া চামড়া ব্যবসায়ী সমিতি এবার ১ লাখ থেকে সোয়া লাখ গরুর চামড়া এবং আড়াই লাখ থেকে ৩ লাখ ছাগলের চামড়া সংগ্রহ করার লক্ষ্যমাত্রা ধরেছিল।
সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনিস কোরাইশী বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ৩০ হাজার পিস গরু ও ৬০ হাজার পিস ছাগলের চামড়া সংগ্রহ হয়েছে। এসব চামড়া দ্বিতীয় দফায় লবণ দিয়ে ট্যানারিতে পাঠানোর জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে।’
এদিকে চামড়া পাচার ঠেকাতে কুষ্টিয়ার সীমান্তে কঠোর অবস্থান নিয়েছে বিজিবি। বেড়েছে টহল।
কুষ্টিয়া বিজিবির ৪৭ নম্বর ব্যাটালিয়নের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোরশেদ বলেন, ‘জেলার সীমান্তজুড়ে টহল ও গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। কেউ চামড়া পাচার করতে পারবে না।’