বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারকে পুঁজিবাজারের উন্নয়নে পাশে পাওয়ার আশা করেছেন নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন-বিএসইসির চেয়ারম্যান শিবলী-রুবাইয়াত-উল ইসলাম।
গভর্নরের দায়িত্ব গ্রহণের পরদিন বুধবার তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এই আশার কথা বলেন বিএসইসি প্রধান। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ ও আব্দুল হালিম।
বৈঠক শেষে শিবলী রুবাইয়াত বলেন, ‘পুঁজিবাজারের উন্নয়নে দেশের আর্থিক খাতের প্রধান দুই নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের মধ্যে সমন্বয়ের কোনো বিকল্প নেই। সদ্য যোগদানকৃত গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের যোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে আরও ঘনিষ্ঠ ও নিবিড় সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করবে।’
গত সেপ্টেম্বর থেকে পুঁজিবাজার নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির মধ্যে ভিন্ন চিন্তার বিষয়টি সামনে আসে।
প্রায় এক বছর ধরে পুঁজিবাজার নিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির সঙ্গে নানা বিষয়ে মতভেদের কারণে বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগের সীমা বা এক্সপোজার লিমিট গণনার পদ্ধতিই নয় কেবল, আরও নানা বিষয়ে দুই পক্ষের চিন্তা ভিন্ন।
এ নিয়ে এক দফা সরাসরি এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের মধ্যস্থতায় আরও এক দফায় বৈঠক হলেও দুই পক্ষ কাছাকাছি আসেনি। আর পুঁজিবাজারে প্রভাব ফেলে এমন সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে দুই পক্ষ সমন্বয় করে কাজ করবে বলে ২০১৪ সালে সরকারের পক্ষ থেকে যে ঘোষণা দেয়া হয়, সেটি মেনে চলার ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো আগ্রহ দেখা যায়নি।
পুঁজিবাজার নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রক্ষণশীল মনোভাবের জন্য যে কর্মকর্তাকে দায়ী করা হয়, তাকে ১৯ বছর পর বদলি করায় নতুন এক ধরনের সমীকরণ অবশ্য তৈরি হয়েছে।
নতুন গভর্নর পুঁজিবাজার নিয়ে ভিন্নভাবে ভাববেন- এমন আশার কথাও বলছে বিএসইসি।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব হিসেবে আব্দুর রউফ তালুকদার সর্বদা পুঁজিবাজারবান্ধব নেতৃত্ব প্রদান করেছেন।
বিএসইসি, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক গ্রুপ ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের (এফডিআই) যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট ডেভেলপমেন্ট কনফারেন্স-২০২১’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি পুঁজিবাজারের উন্নয়নে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের অর্থনীতির সম্ভাবনা তুলে ধরার পাশাপাশি প্রবাসী বাংলাদেশি এবং বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে বিএসইসির যুক্তরাষ্ট্র ও সুইজারল্যান্ডে আয়োজিত রোড শোতেও তিনি অংশ নেন। এগুলো পুঁজিবাজার তথা সামগ্রিক অর্থনীতির প্রতি তার দায়বদ্ধতার প্রমাণ হিসেবেই দেখা হচ্ছে।