বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নতুন গভর্নরের তিন অগ্রাধিকার

  •    
  • ১২ জুলাই, ২০২২ ১৮:৪৪

‘মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করাই হবে ব্যাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কাজ। এক্সচেঞ্জ রেটকে নিয়ন্ত্রণে আনা দ্বিতীয় বড় দায়িত্ব এবং তৃতীয় হলো বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ানো।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের দায়িত্ব নিয়েই তিনটি অগ্রাধিকারের কথা বলেছেন আবদুর রউফ তালুকদার। তিনি পণ্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ করতে চান, ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্য ধরে রাখতে চান, পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়াতে চান।

অর্থসচিব হিসেবে চার বছর দায়িত্ব পালন করার অভিজ্ঞতায় ঋদ্ধ রউফ দায়িত্ব নিয়ে মঙ্গলবার বিকেলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কনফারেন্স হলে এক সংবাদ সম্মেলনে আসেন।

তিনি এমন এক সময় দায়িত্ব নিয়েছেন, যখন সারা বিশ্বের অর্থনীতিই চাপে। পণ্যমূল্য ও জ্বালানির ঊর্ধ্বগতির কারণে অনিশ্চয়তা চলছে দেশে দেশে। বাংলাদেশও তার বাইরে নয়।

গভর্নর বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করাই হবে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কাজ। এক্সচেঞ্জ রেটকে নিয়ন্ত্রণে আনা দ্বিতীয় বড় দায়িত্ব এবং তৃতীয় হলো বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ানো। এ ক্ষেত্রে সরকার এবং বাংলাদেশ ব্যাংক একসঙ্গে কাজ করবে।

‘এখন মূল্যস্ফীতি যে পর্যায়ে এটা বাজারে অতিরিক্ত টাকার সরবরাহের কারণে আসেনি, বরং আমদানি করা পণ্যের মূল্য বেশি সে কারণে।’

ব্যাংকের বেঁধে দেয়া সুদহার তুলে নেয়া হবে কি না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘ক্যাপ উঠে গেলেই যে সুদের হার কমবে, তার কোনো মানে নেই। আরও কমতে পারে। বিনিয়োগ বাড়াতে চাই। উচ্চ সুদহারের কারণে খেলাপি বাড়ে। কম থাকলে খেলাপি বাড়ে না।’

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ

কেন্দ্রীয় ব্যাংক মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ইতোমধ্যে কয়েকটি পদক্ষেপ নিয়েছে উল্লেখ করে আব্দুর রউফ বলেন, ‘ব্যাংকের নীতি সুদহার বাড়ানো হয়েছে। সরকারও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। মূল্যস্ফীতি আমাদের অভ্যন্তরীণ কোনো সমস্যা না। বিশ্ববাজারে পণ্যের উচ্চ মূল্যের কারণেই দেশে ঊর্ধ্বমুখী মূল্যস্ফীতির পারদ। আমি মনে করি কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয় একযোগে কাজ করলে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।’

চাপে নেই

বৈশ্বিক প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে গভর্নর হিসেবে যোগদান করে কোনো চাপ অনুভব করছেন কীনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি চাপের মধ্যে কাজ করে এসেছি৷ যে পদে কাজ করে এসেছি সেটাতেও চাপ ছিল।

‘নতুন কোনো চাপ অনুভব করছি না। চাপে ছিলাম এতোদিন। প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়ন খুব চ্যালেঞ্জিং কাজ ছিল। যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। যে কোনো চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত আছি।’

চার বছর পর কেন্দ্রীয় ব্যাংককে কেমন দেখতে চান- এমন প্রশ্নের জবাবে নতুন গভর্নর বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংককে ইন্টেলেকচুয়াল ইনস্টিটিউশনে রূপান্তর হতে দেখতে চাই। বাংলাদেশ ব্যাংককে প্রফেশনাল অর্গানাইজেশন হিসেবে দেখতে চাই। এখনও প্রফেশনাল আছে। এটাকে আরও উৎকর্ষের মধ্যে দেখতে চাই।

‘কেন্দ্রীয় ব্যাংক যেন একটা এপেক্স রেগুলেটর হিসাবে কাজ করে। চার বছরে এটাই আমার লক্ষ্য।’

মূল চ্যালেঞ্জ

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, এক্সচেঞ্জ রেট ঠিক রাখা ও রিজার্ভ ধরে রাখা মূল চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন নতুন গভর্নর।

তিনি বলেন, ‘এছাড়াও বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এর মধ্যে খেলাপি ঋণ ও মূলধন ঘাটতি পূরণ করে আর্থিক স্থিতিশীলতা ঠিক রাখা, নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানে মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনা, বেসরকারি খাতে ঋণ বাড়িয়ে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা অন্যতম৷’

ঋণ দাতা সংস্থাগুলোর সংস্কার প্রস্তাব কতটা গ্রহণ করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক- এমন প্রশ্নের জবাবে গভর্নর বলেন, ‘বাংলাদেশের অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। বিদেশি অর্থায়ন বন্ধ হওয়ার পরও আমরা পদ্মা সেতু করতে সক্ষম হয়েছি।

‘আমরা আইএমএফকে বলেছি, বাজেট বক্তৃতায় যা বলা হয়েছে সেভাবে রির্ফম করা হবে। আইএমএফ কী বললো সেটা নয়, বাজেটে তুলে ধরা প্রস্তাব অনুযায়ী সংস্কার করবে সরকার।’

বাংলাদেশ ব্যাংক স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে কীনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিভিন্ন আইনে বাংলাদেশ ব্যাংককে নির্দিষ্ট ক্ষমতা দেয়া আছে। এসব আইন অনুযায়ী কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাজ করতে কোথাও কোনো বাধা নেই।’

রউফ তালুকদার ১৯৮৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে (বিসিএস ১৯৮৫ ব্যাচ) বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে যোগ দেন। দীর্ঘ বর্ণাঢ্য কর্মজীবনে বিভিন্ন সরকারি পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। তবে পাবলিক ফাইন্যান্স এবং অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় বিশেষত্বের কারণে তার কর্মজীবনের বেশির ভাগ সময়ই কেটেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগে।

২০১৮ সালের ১৮ জুলাই অর্থসচিবের দায়িত্ব নেয়ার আগে অর্থ বিভাগে ১৮ বছরেরও বেশি সময় কাজ করেছেন আবদুর রউফ তালুকদার। এ ছাড়া তিনি শিল্প মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয় এবং তথ্য মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন।

ঈদের ছুটি শেষে প্রথম কর্মদিবসের সকাল ১০টায় বাংলাদেশ ব্যাংকের দ্বাদশ গভর্নর হিসেবে যোগ দেন রউফ তালুকদার।

এ বিভাগের আরো খবর