বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ঈদের আগে মাছের আগুন দাম, শূন্য ব্যাগে হতাশ ক্রেতা

  •    
  • ৯ জুলাই, ২০২২ ১৫:১৮

কারওয়ান বাজারে যে কাচকির দাম দিন দুয়েক আগেও কেজি বিক্রি হয়েছে সাড়ে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায়, সেই দাম শনিবার হাঁকা হচ্ছে ৭০০ টাকা। কাচকির পিছু ধেয়ে রুই, কাতলা, ইলিশসহ সব মাছই বিক্রি হচ্ছে অনেক বেশি দামে।

এক দিন পরেই ঈদুল আজহা। শেষ মুহূর্তে সরগরম পশুর হাট। সবার নজর যখন পশু কেনাবেচার দিকে, নিউজবাংলা ঢুঁ মেরেছে রাজধানীর মাছের বাজারেও।

সেখানের পরিস্থিতি অভাবনীয়। যারা ভাবছেন ঈদের আগের দিন কিছুটা সস্তায় মাছ কিনে ফ্রিজ ভরবেন, তাদের আশা এবার অন্তত পূরণ হচ্ছে না। কারণ, পশুর হাটের চেয়েও আগুন দাম এখন মাছের বাজারে।

কারওয়ান বাজারে যে কাচকির দাম দিন দুয়েক আগেও কেজি বিক্রি হয়েছে সাড়ে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায়, সেই দাম শনিবার হাঁকা হচ্ছে ৭০০ টাকা। কাচকির পিছু ধেয়ে রুই, কাতলা, ইলিশসহ সব মাছই বিক্রি হচ্ছে অনেক বেশি দামে।

দাম হঠাৎ বাড়ার কারণ হিসেবে সেই বহু পুরোনো যুক্তিই দিচ্ছেন মাছ বিক্রেতারা, আর সেটা হলো, ‘জোগান কম’।

রাজধানীর কারওয়ান বাজার ও মগবাজার ঘুরে মাছের হঠাৎ ‘দামি’ হয়ে ওঠার কারণ খুঁজেছে নিউজবাংলা। দেখা গেছে, গত কয়েক বছরে ঈদের সময়ে মাংসের পাশাপাশি মাছের বিভিন্ন ডিশের চাহিদাও বেড়েছে। আবার ঈদের আগের দিন ‘কম দামে’ মাছ কিনে সংরক্ষণের সুযোগ খোঁজেন অনেকে। মাছ বিক্রেতারাও অনেকটা কম দামে পণ্য ছেড়ে দিয়ে সন্ধ্যার আগেই দোকান গোটানোর পথ খুঁজতেন।

তবে শনিবার মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বদলে গেছে সেসব দিন। মাছের বাজার পরিণত হয়েছে ‘এক দামের’ বাজারে। ক্রেতাকে দর-কষাকষির সুযোগ দিতেও নারাজ বিক্রেতা।

কাচকি মাছের কেজি ৭০০ টাকা কেন- জানতে চাইলে কারওয়ান বাজারের বিক্রেতা কদম আলী নিউজবাংলা প্রতিবেদককে বলেন, ‘আপনে সারা বাজার ঘুইরা আইসেন। হের পর আমার লগে কথা কইয়েন।’

দুরু দুরু বুকে আরেকবার প্রশ্নটি করতেই শুকনো গলায় তার জবাব, ‘আরে ভাই বুঝেন না ক্যান? বাজারে কি মাছ আছে? কারও কাছে কাচকি মাছ দেহাইতে পারবেন? আমি তিন কেজি মাছ পাইছি। বেশি দামে কিনছি, তাই এই দামেই বিক্রি করমু।’

আরেক বিক্রেতা সোলায়মান বলেন, ‘বাজারে তো মাছই নাই। দাম তো বাড়বোই। গতকাল রাতে তেমন মাছ আসে নাই। এই জন্য বাজারের এই (দামের) অবস্থা।’

তিনি বলেন, ‘যেসব ট্রাকে করে মাছ আসত সেগুলোতে এখন গরু আসছে। তাই আড়তে মাছ নাই বললেই চলে। আর অধিকাংশ আড়তদারও বাড়ি চলে গেছেন, তাই বাজারে মাছের সরবরাহ কম।’

কিন্তু তাই বলে এক রাতের ব্যবধানে দ্বিগুণ দাম! বিষয়টি যেন মানতেই পারছেন না কারওয়ান বাজারে মাছ কিনতে আসা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রিগ্যান পাটোয়ারি।

একরাশ হতাশা নিয়ে তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ভাই কী বলব বলেন? জীবনেও শুনি নাই কাচকি মাছের কেজি ৭০০ টাকা। শুধু কি কাচকি, কোনো মাছেই হাত দেয়া যাচ্ছে না।’

গৃহিণী আসমা বেগমও এমন লাগাম ছাড়া দামে ভীষণ ক্ষুব্ধ। তিনি বলেন, ‘সরবরাহ কম এই অজুহাতে বিক্রেতারা অস্বাভাবিক দাম হাঁকছেন। এটা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না।

‘আমাদের ব্যবসায়ীরা হলো সুযোগ সন্ধানী। তারা সুযোগের সদ্ব্যবহার করছেন।’

বাজার ঘুরে দেখা গেছে চাষের রুইয়ের কেজি সাধারণত ২৮০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে থাকে। সেই মাছ কিনতে শনিবার কেজিপ্রতি গুনতে হয়েছে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা। জ্যান্ত রুই মাছের কেজি আগে ৩০০ টাকা থাকলেও এখন তা ৫৫০ টাকা।

কাতলা, চিংড়ি, শিং, মাগুর, ইলিশের দামও বেজায় চড়া।

কারওয়ান বাজারে দেশি জাতের চিংড়ি ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে, যা কয়েক দিন আগেও ছিল ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা। ট্যাংরার কেজি শনিবার ছিল ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, বোয়াল ৯০০ থেকে ১০০০ টাকা।

আইড়, চিতল, বেলে মাছ আকারভেদে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ১২০০ টাকায়। মাঝারি আকারের ইলিশ কিনতে গুনতে হচ্ছে কেজিপ্রতি ১২০০ টাকা, যা কয়েক দিন আগেও ছিল ৮০০ টাকা।

এ বিভাগের আরো খবর