শিল্প উৎপাদন অব্যাহত রাখতে বিদ্যুৎ রেশনিংয়ের আহ্বান জানিয়েছেন ব্যবসায়ীদের সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি জসিম উদ্দিন। জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব স্টেকহোল্ডারকে নিয়ে স্বল্প, মাঝারি ও দীর্ঘমেয়াদি রোডম্যাপ তৈরির আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার এফবিসিসিআই আয়োজিত পাওয়ার, এনার্জি অ্যান্ড ইউটিলিটিজ-বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির তৃতীয় সভায় এ আহ্বান জানান তিনি।
সংগঠনের সহসভাপতি এম এ মোমেন বলেন, ‘বাংলাদেশ জ্বালানি খাতে আগের থেকে অনেক বেশি উন্নত। দেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোর কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখতে বিদ্যুতের এ সংকট মোকাবিলায় সবাইকে একসঙ্গে কাজ কেরতে হবে।’
গত এক দশকে দেশে বিদ্যুৎ খাতে ব্যাপক উন্নতির পর দেশের শতভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে। গত কয়েক বছরে লোডশেডিং শব্দটিও সরকার ব্যবহার করত না। কোথাও কোথাও বিদ্যুতের যাওয়া-আসাকে সরবরাহ লাইনের বিভ্রাট হিসেবে বলা হতো। সেই সমস্যা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা চলছে বলেও জানানো হয়েছে।
কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে তরল গ্যাস ও এলএনজির দাম এক বছরে ১০ গুণ হয়ে যাওয়ার পর স্পট মার্কেট থেকে আর গ্যাস না কেনার সিদ্ধান্তের প্রভাব পড়েছে বিদ্যুৎ উৎপাদনে। গ্যাস সংকটের কারণেই ঘাটতি প্রায় দুই হাজার মেগাওয়াট। পরিকল্পিত লোডশেডিং করেই পরিস্থিতি সামাল দিতে চাইছে সরকার।
এই পরিস্থিতিতে গ্রাহকদের মধ্যে অসন্তোষ স্পষ্ট। ভীষণ উদ্বিগ্ন ব্যবসায়ীরাও। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ না থাকলে বিকল্প ব্যবস্থায় উৎপাদন চালিয়ে গেলে খরচ পড়ে যায় বেশি। আবার গত এক যুগের নানা পদক্ষেপের কারণে সব কারখানায় বিকল্প ব্যবস্থাপনা সেভাবে গড়েও ওঠেনি।
গ্যাসভিত্তিক কেন্দ্রে উৎপাদন বন্ধ রাখতে হলে কয়লা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনে জোর দেয়ার তাগিদ দেন এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক ও কমিটির ডিরেক্টর ইনচার্জ আবুল কাসেম খান। বিদ্যুৎ খাতের চুক্তিগুলো পুনরায় বিবেচনা করার আহ্বানও জানান তিনি।
জ্বালানি নিরাপত্তার উন্নয়নে জোর দিয়ে কমিটির চেয়ারম্যান ও এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুমায়ুন রশিদ বলেন, ‘আগামীতে জ্বালানি খাতে বিপুল মানুষের কর্মসংস্থান হবে। দেশের রপ্তানি অঞ্চলগুলোতে বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ অব্যাহত রাখতে হবে। এমতাবস্থায় এ খাতে শক্তিশালী ও দীর্ঘস্থায়ী পরিকল্পনা গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি।’
বেসরকারি খাতকে সংযুক্ত করে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান সভায় উপস্থিত সদস্যরা।