মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরতে এক মাসের ব্যবধানে নীতি সুদহার আরেক দফা বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এক সার্কুলার জারি করে বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, মূল্যস্ফীতির বাড়তি চাপ সামাল দিতে বাজারে অর্থ প্রবাহ নিয়ন্ত্রণে রাখতে এখন থেকে নীতি সুদহার নির্ধারিত হবে ৫ দশমিক ৫০ শতাংশ।
২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম দিন ১ জুলাই থেকে এই নতুন সুদ হার কার্যকর হবে।
এর আগে গত ২৯ মে এই সুদ হার ৪ দশমিক ৭৫ ভাগ থেকে ২৫ বেসিস পয়েন্ট বৃদ্ধি করে ৫ শতাংশ করা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার তা আরও ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ৫ দশমিক ৫০ শতাংশ করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সার্কুলারে বলা হয়, ‘গত ২৭ জুন মনিটরি পলিসি কমিটির ৫৫তম সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক বাংলাদেশ ব্যাংকের রেপো সুদ হার বিদ্যমান বার্ষিক শতকরা ৫ ভাগ থেকে ৫০ বেসিস পয়েন্ট বৃদ্ধি করে শতকরা ৫ দশমিক ৫০ ভাগে পুননির্ধারণ করা হলো।’
তবে রিভার্স রেপো সুদহার বিদ্যমান বার্ষিক ৪ শতাংশে অপরিবর্তিত থাকবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে এই হারে ঋণ দিয়ে থাকে, যা ব্যাংকিং খাতে মৌলিক নীতিনির্ধারণী সুদের হার বা রেপো সুদ হার হিসেবে পরিচিত।
প্রায় ২ বছর পর ২২ মে বাংলাদেশ ব্যাংক এই হার বাড়িয়েছিল। ২০২০ সালে জুলাইয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক পলিসি রেট ৫ দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে ৫০ বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে ৪ দশমিক ৭৫ করেছিল।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ সিদ্ধান্তের ফলে মুল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি ব্যাংক ঋণ নেওয়ার পরিমাণ কমে আসতে পারে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সবশেষ তথ্যে দেখা যায়, আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় বাজারে পণ্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার মধ্যে মে মাসে পয়েন্ট টু পয়েন্ট (মাসভিত্তিক বা মাসওয়ারি) দেশে মূল্যস্ফীতির হয়েছে ৭ দশমিক ৪২ শতাংশ হারে, যা ৮ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
রেপো সুদহার হিসেবে পরিচিত নীতি সুদহার বাড়ানোর অর্থ হল কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে অর্থ ধার করতে ব্যাংকগুলোকে এখন বাড়তি সুদ দিতে হবে। ব্যাংকগুলো সাধারণত এক থেকে সাত দিনের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এমন সুদে টাকা ধার করে থাকে। এর মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাজারে তারল্য ও বিনিয়োগ নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে।
আর রিভার্স রেপোর মাধ্যমে বাংকগুলো তাদের উদ্বৃত্ত অর্থ কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা রাখে।