দুধ উৎপাদনে খামারিদের ৫ শতাংশ রেয়াতি সুদে দেয়া ঋণ সমন্বয়ের মেয়াদ বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগামী ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত পুনঃঅর্থায়ন কর্মসূচির আওতায় ব্যাংকগুলো থেকে নেয়া ঋণ পরিশোধ করতে পারবেন খামারিরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষি ঋণ বিভাগ সোমবার এ-সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করে সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী, বেসিক, আইএফআইসি, মিডল্যান্ড, ন্যাশনাল, কৃষি, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন, আনসার-ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠায়।
এতে বলা হয়, বিতরণ করা ঋণের বিপরীতে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে দেয়া ব্যাংকগুলোর পুনঃঅর্থায়ন করা ঋণ আদায় ও সমন্বয় এবং ব্যাংকগুলোর ক্ষতিপূরণ দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সুদ ভর্তুকি দেয়াসহ স্কিমটির মেয়াদ ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।এর আগে এ-সংক্রান্ত ইস্যু করা ওই স্কিম-সংক্রান্ত সার্কুলারের অন্যান্য নির্দেশনা অপরিবর্তিত থাকবে।
দেশকে দুধে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার জন্য ২০১৫ সালে ৫ শতাংশ সুদে ঋণ দেয়ার লক্ষ্যে একটি পুনঃঅর্থায়ন কর্মসূচি হাতে নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।ওই সময় এ-সংক্রান্ত নীতিমালায় ঋণের সুদহার নির্ধারণের ক্ষেত্রে বলা হয়, এ কর্মসূচির আওতায় ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ব্যাংক রেটে পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা পাবে (বর্তমানে ব্যাংক রেট ৫ শতাংশ, যা পরিবর্তনশীল)। অর্থাৎ গ্রাহক পর্যায়ে তখন এই ঋণের সুদের হার ছিল সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ।এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক ২০০ কোটি টাকার এ পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠন করে। ৫ শতাংশ সুদে এ তহবিল থেকে ঋণ পাবেন খামারিরা। গ্রাহক পর্যায়ে ৫ শতাংশ সুদে ঋণ বিতরণ করা হলেও ব্যাংক পাবে ১০ শতাংশ। বাকি ৫ শতাংশ সরকার ভর্তুকি হিসেবে দেবে।
একক ও যৌথ নামে এই ঋণ নেয়া যাবে। একটি বকনা বাছুর কেনার জন্য ৪০ হাজার টাকা এবং লালন-পালনের জন্য ১০ হাজার টাকা করে ঋণ নেয়া যায়। ফলে একজন খামারি সর্বোচ্চ চারটি বকনা বাছুরের জন্য সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা ঋণ নিতে পারেন। এ ঋণ পুরোপুরি জামানতহীন।
২০১৮ সালে গ্রাহক পর্যায়ে ঋণের সুদ ১ শতাংশ কমিয়ে ৪ শতাংশ করা হয়।এই ঋণ বিতরণ করতে গিয়ে ব্যাংক ও বিশেষায়িত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো বাজারের প্রচলিত সুদের তুলনায় কম সুদে ঋণ বিতরণ করায় তাদের যে পরিমাণ সুদ ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে, সেই পরিমাণ অর্থ কেন্দ্রীয় ব্যাংক ভর্তুকি হিসেবে দেবে।
নির্দেশনা অনুযায়ী, ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো বিতরণ করা ঋণের বিপরীতে সুদ ক্ষতি বা ভর্তুকি বাবদ বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে অতিরিক্ত ৫ শতাংশ দাবি করতে পারত। পরে এ হার ১ শতাংশ কমিয়ে ৪ শতাংশ করা হয়।