ইসলামী ফাইন্যান্স উইং খোলার অনুমোদন পেয়েছে ব্যাংক বহির্ভুত আর্থিক প্রতিষ্ঠান স্ট্র্যাটেজিক ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেড-এসএফআইএল।
রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগের পরিচালক জুলকার নায়েন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ অনুমোদন দেয়া হয়।
এসএফআইএলে ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর লেখা চিঠিতে বলা হয়, “এসএফআইএলর আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয়ে 'ইসলামী ফাইন্যান্স উইং' খোলার নীতিগত অনুমোদন দেয়া হলো।”
স্ট্র্যাটেজিক ফাইন্যান্সের এমডি ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইরতেজা আহমেদ খান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গ্রাহকরা এখন ইসলামী ধারার লেনদেন বেশি পছন্দ করছে। মুসলিমপ্রধান দেশ হওয়ায় বাংলাদেশের অনেক মানুষ সুদের সঙ্গে যুক্ত হতে চান না, ইসলামী লেনদেনে আস্থা পান তারা। এজন্য আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকে ইসলামী ফাইন্যান্স উইং খোলার আবেদন করি।’
তিনি জানান, তাদের ৯৮ শতাংশ শেয়ারহোল্ডার প্রাতিষ্ঠানিক। এর মধ্যে ৫০ শতাংশ কানাডা ও আমেরিকার সরাসরি বিনিয়োগ (এফডিআই) রয়েছে। আর বাকি ২ শতাংশ ব্যক্তিকেন্দ্রিক। ফলে সুশাসন ও ব্যবস্থাপনা পরিধি নিয়মতান্ত্রিকভাবে পরিচালিত হয়। এটা আমাদের শক্তি। আমানতকারীদের আস্থা বাড়ানোর ক্ষেত্রে এটা একটা ভালো উদাহরণ।
দেশে আর্থিক খাতের বয়স বিবেচনায় এসএফআইএল নবীন। ‘স্বচ্ছতার বন্ধন’– এই স্লোগান সামনে রেখে করোনার মধ্যে যাত্রা শুরু করে এসএফআইএল। তবে এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি তার পরিচালন দক্ষতা, স্বচ্ছতা এবং গ্রাহকসেবার ক্ষেত্রে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। আমানত সংগ্রহ ও ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রেও মিলেছে কাঙিক্ষত সাফল্য।
অতি সতর্কভাবে ঋণ বিতরণ করায় প্রতিষ্ঠার দেড় বছর পরেও প্রতিষ্ঠানটির বিতরণকৃত ঋণের এক টাকাও খেলাপি হয়নি।
অনুমোদন পেতে যেসব কাজ করতে হবে
ইসলামী ফাইন্যান্স উইং খোলার জন্য এসএফআইএলকে কিছু কার্যক্রম নিতে হবে বলে চিঠিতে বলা হয়।
এগুলো হলো:
>> এসএফআইএলকে নিবন্ধিত সংঘ-স্মারক সংশোধনপূর্বক ইসলামী শরীয়াহভিত্তিক অর্থায়ন ব্যবসা পরিচালনাকে কোম্পানির অন্যতম ব্যবসায়িক উদ্দেশ্য হিসেবে সংযুক্ত করতে হবে;
>>কোম্পানির সংঘ-বিধি সংশোধন করে একটি স্বতন্ত্র শরীয়াহ্ সুপারভাইজরি কমিটি গঠন করতে হবে;
>> ব্যবসা পরিচালনার জন্য প্রতিষ্ঠানের প্রধান কার্যালয়ে একটি পৃথক ইসলামী অর্থায়ন বিভাগ গঠন করতে হবে;
>>কী কী আমানত, ঋণ, লিজ, বিনিয়োগ, ফাইন্যান্সিং সুবিধা প্রদান করা হবে তা সংবলিত প্রোডাক্ট পলিসি গাইডলাইন প্রণয়ন;
>>বিদ্যমান তহবিল থেকে প্রস্তাবিত ইসলামী শরীয়াহ ভিত্তিক অর্থায়ন ব্যবসার পৃথক তহবিল গঠন;
>> শরীয়াহ ভিত্তিক অর্থায়ন ব্যবসা পরিচালনার জন্য একটি অপারেশনাল ম্যানুয়াল প্রণয়ন;
>>আমানত ও বিনিয়োগের বিপরীতে মুনাফার হার নির্ধারণ বা হিসাবায়নের নীতিমালা প্রণয়ন;
>>ইসলামী শরীয়ারভিত্তিক অর্থায়ন ব্যবসার জন্য পৃথক হিসাবরক্ষণ নীতি ও পদ্ধতি গ্রহণপূর্বক পৃথক আর্থিক বিবরণী প্রস্তুত;
>> বাংলাদেশ ব্যাংকের ইসলামী ব্যাংকিং নীতিমালার আলোকে এসব নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে হবে;
>> ইসলামী শরীয়াহ ভিত্তিক অর্থায়ন ব্যবসা পরিচালনার জন্য পূর্ণাঙ্গভাবে প্রস্তুতি করা হয়েছে মর্মে স্বতন্ত্র শরীয়াহ সুপারভাইজরি কমিটি কর্তৃক প্রত্যয়নপত্র দাখিল;
এবং
>>নীতিগত অনুমোদন পা্ওয়ার ছয় মাসের মধ্যে এসব নির্দেশনা পরিপালনপূর্বক 'ইসলামী ফাইন্যান্স উইং’ এর মাধ্যমে ইসলামী শরীয়াহ ভিত্তিক অর্থায়ন ব্যবসা পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের চূড়ান্ত অনুমোদন নিতে হবে।