বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

অবশেষে জাগছে এমারেল্ডের স্পন্দন

  •    
  • ২৫ জুন, ২০২২ ১৬:৫৩

আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের দাম ব্যাপকভাবে বেড়ে যাওয়ার পর দেশের চাহিদা পূরণে সরকার এবার দেশীয় উৎপাদন বাড়ানোয় নজর দিয়েছে। এর অংশ হিসেবে মোট ভোজ্যতেলের এক-তৃতীয়াংশ ধানের কুঁড়ার তেল দিয়ে পূরণ করার কথা জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

ছয় মাস চেষ্টার পর ধানের কুঁড়ার তেল বাজারে নিয়ে আসার প্রস্তুতি শেষ করেছে শেরপুরের এমারেল্ড অয়েল।

বেসিক ব্যাংক ঋণ কেলেঙ্কারিতে ডুবে যাওয়া কোম্পানিটির সব দায়দেনা নিজেরা তুলে নিয়ে কারখানাটিতে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয় গত ৯ জানুয়ারি। তবে সেই তেল এতদিন বাজারে ছাড়া হয়নি।

আগামী মঙ্গলবার স্পন্দন ব্র্যান্ডের তেলের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। রাজধানীর একটি হোটেলে হবে এই অনুষ্ঠান।

২০১৭ সালে বন্ধ হয়ে যাওয়ার আগেও একই ব্র্যান্ডের তেল বাজারে ছাড়ত এমারেল্ড। গত বছর এ কোম্পানিটির পরিচালনায় আসে জাপান প্রবাসীর কোম্পানি মিনোরি বাংলাদেশ। এরপর প্রাণ ফেরে কোম্পানিটিতে।

আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের দাম ব্যাপকভাবে বেড়ে যাওয়ার পর দেশের চাহিদা পূরণে সরকার এবার দেশীয় উৎপাদন বাড়ানোয় নজর দিয়েছে। এর অংশ হিসেবে মোট ভোজ্যতেলের এক-তৃতীয়াংশ ধানের কুঁড়ার তেল দিয়ে পূরণ করার কথা জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

২০১৪ সালে এমারেল্ড অয়েল বাজারে আসার পর আরও বেশ কিছু কোম্পানি এই ধানের কুঁড়ার তেল বা রাইস ব্র্যান অয়েল বাজারে নিয়ে আসে। কিন্তু এরারেল্ড বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর অন্যদের উৎপাদনও সেভাবে বাড়েনি। পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতিতে এখন এই তেল নিয়েই নতুন আশাবাদ তৈরি হয়েছে।

২০০৯ সালে জামালপুরের সৈয়দ হাসিবুল গনি গালিব শেরপুর শহরের শেরীপাড়ায় গড়ে তোলেন এমারেল্ড অয়েল কারখানা। এখানকার স্পন্দন ব্র্যান্ডের তেল জনপ্রিয় হয় দ্রুত।

প্রায় পাঁচ বছর উৎপাদন চালিয়ে গেলেও বেসিক ব্যাংক ঋণ কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে দুদকের মামলায় জেলে যেতে হয় গনিকে। দীর্ঘদিন জেলে থাকার পর জামিনে মুক্তি পেয়ে দেশের বাইরে চলে যান তিনি। বন্ধ হয়ে যায় স্পন্দনের কারখানা।

শেরপুরের শেরীপাড়ায় এমারেল্ড অয়েলের কারখানা

২০২০ সালে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির নেতৃত্বে পরিবর্তনের পর শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের নেতৃত্বাধীন কমিশন বন্ধ হয়ে যাওয়া কোম্পানিগুলো নতুন করে চালু করতে পর্ষদ পুনর্গঠনের উদ্যোগ নেয়। এরই মধ্যে উৎপাদন শুরু করেছে এমারেল্ড, আলহাজ্ব টেক্সটাইল, রিংসাইন টেক্সটাইল। সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইলও উৎপাদন শুরুর অপেক্ষায়।

এর মধ্যে এমারেল্ডের দায়িত্ব দেয়া হয় মিনোরি বাংলাদেশের কাছে। গত জানুয়ারিতে ক্রুড অয়েল উৎপাদন শুরু হলেও গ্যাস কম থাকায় উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটে। এই ক্রুড অয়েল খুলনা ফিড মেইলে নিয়ে মাছের ও মুরগির খাদ্য তৈরি করার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছিল। পরে কারখানার সব যন্ত্রপাতি মেরামত করে তেল উৎপাদন শুরু হতে যাচ্ছে।

কারখানাটির ইনচার্জ আহসান হাবিব বেগ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন মিলটি বন্ধ থাকায় অনেক যন্ত্রপাতি খারাপ হয়ে গিয়েছিল। তাই পুরোপুরি উৎপাদন চালু করতে দেরি হয়েছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে খাবার উপযোগী তেল উৎপাদন করে বাজারজাত করতে পারব বলে আশা করছি।’

তিনি বলেন, ‘জনগণের মধ্যে এ তেলের চাহিদা রয়েছে। গ্যাসের চাপ সমস্যার সমাধান হলে সে চাহিদা পূরণ করতে পারব।’

এমারেল্ডের উৎপাদনে ফেরার খবরে শেরপুরের তেল ব্যবসায়ী ও ভোক্তারা বেশ খুশি।

শেফালী বেগম নামে এক ক্রেতা বলেন, ‘স্পন্দন তেলটা একসময় ব্যবহার করতাম, ভালোই ছিল। কিন্তু তেলটা বাজারে বেশি দিন পাওয়া যায়নি। শুনলাম বাজারে নতুন করে আবার আসছে। আবার এ তেল ব্যবহার করতে পারব।’

শেরপুর শহরের কলেজ মোড়ের বাসিন্দা ডেইজি আক্তার বলেন, ‘এ তেল পরিমাণে কম দিলেই হয়। আবার বাজারে এলে ব্যবহার করব।’

স্পন্দন তেলের ব্যবসা করতেন পৌর শহরের খোয়ারপাড়ের ডালিম এন্টারপ্রাইজের মালিক ডালিম মিয়া। তিনি বলেন, ‘এ তেল বাজারে একসময় খুব চলত। দাম একটু বেশি থাকলেও বাজারে চাহিদা ভালোই ছিল। এখন বাজারে এলে আবার জনপ্রিয়তা পাবে।’

এ বিভাগের আরো খবর