এবার দেশে কোরবানিযোগ্য পশুর সংখ্যা ১ কোটি ২১ লাখ ২৪ হাজার ৩৮৯টি।
কোরবানির হাটে এসব পশু সরবরাহের মাধ্যমে কোরবানি উদযাপনে সরকারের পক্ষ থেকে পরিপূর্ণ প্রস্তুতি আছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফার্মগেটে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে কোরবানির পশুর চাহিদা নিরূপণ, সরবরাহ ও অবাধ পরিবহন নিশ্চিতকরণ বিষয়ে আন্তমন্ত্রণালয় সভায় এ কথা জানানো হয়।
মন্ত্রী বলেন, ‘চাহিদার চেয়ে অতিরিক্ত পশু প্রস্তুত আছে। ফলে কোরবানির জন্য কোনোরকম সংশয়, সংকট বা আশঙ্কার কারণ নেই।
তিনি জানান, কোরবানির হাটে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করা হবে। রোগগ্রস্ত পশু হাটে বিক্রি করতে দেয়া হবে না।
মন্ত্রী বলেন, ‘কোরবানির পশুর জন্য অতীতে পরমুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হতো। আমাদের প্রাণিসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা, খামারি ও উদ্যোক্তারা সম্মিলিতভাবে কাজ করায় প্রাণিসম্পদ খাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। এ খাতে আমাদের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন মাংসে আমাদের স্বয়ংসম্পূর্ণতা এসেছে।’
কোনো খামারি নিজ বাড়ি থেকে পশু বিক্রি করলে তাকে হাসিল দিতে হবে না বলেও জানান মন্ত্রী। বলেন, কোনো খামারি তার পশু দূরবর্তী হাটে নিতে চাইলে, রাস্তায় জোর করে নামাতে বাধ্য করা যাবে না। হাটে আনার পথে কেউ প্রাণী বিক্রি করলে তার কাছ থেকে ইজারা গ্রাহক জোর করে চাঁদা বা হাসিল গ্রহণ করতে পারবে না।
নগদ টাকা বহন না করে বিকল্প উপায়ে স্মার্ট পদ্ধতিতে খামারিরা যাতে আর্থিক লেনদেন করতে পারে সে জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে সমন্বয় করে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান রেজাউল করিম।
মন্ত্রী বলেন, ‘গত বছর অনলাইন প্ল্যাটফর্মে প্রচুর গবাদিপশু বিক্রি হয়েছিল। এ বছরও এই পদ্ধতি অব্যাহত থাকবে, যা ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের জন্য সুখকর অবস্থা তৈরি করবে। অনলাইনে ক্রয়কৃত গরু পছন্দ না হলে টাকা ফেরত নেয়ার ব্যবস্থাও এ বছর সংযোজন করা হচ্ছে। যাতে ক্রেতারা কোনোভাবেই প্রতারিত না হয়।’
মহাসড়কে বা যান চলাচলে বিঘ্ন হতে পারে, এমন স্থানে হাট বসানো যাবে না বলেও সভায় বলা হয়। সড়কে বা সেতুতে কোরবানির পশু পরিবাহী গাড়িকে প্রাধান্য দেয়ার কথাও জানানো হয়।
এ ক্ষেত্রে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ চালু করা হবে। অধিদপ্তরের হটলাইন ১৬৩৫৮ চালু থাকবে। পশু পরিবহনে খামারিদের সমস্যা সমাধানে এ নিয়ন্ত্রণ কক্ষ কাজ করবে।
সিলেট অঞ্চলে বন্যায় গবাদিপশুর ক্ষতির কারণে খামারিদের সহায়তা করার বিষয়টিও চিন্তাভাবনা করছে সরকার। কোরবানির সময় ওই অঞ্চলে দেশের অন্য এলাকা থেকে পশু নেয়ার ব্যবস্থাও করা হবে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ইয়ামিন চৌধুরী, অতিরিক্ত সচিব শ্যামল চন্দ্র কর্মকার, তৌফিকুল আরিফ ও এস এম ফেরদৌস আলম, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদা ছাড়াও স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, রেলপথ মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরা সভায় অংশ নেন।