বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

উত্থানে শুরু, পতনে শেষ

  •    
  • ১৯ জুন, ২০২২ ১৫:২৯

বাজেট ঘোষণার পর টানা তিন কর্মদিবসে ১১৮ পয়েন্ট সূচক পড়লেও পরের দুই দিনে ৬৪ পয়েন্ট উত্থান হওয়ার পর রোববার ভালো দিন কাটবে ভেবেছিলেন যারা, হতাশ হয়েছেন। শেয়ারদর ও সূচক বেড়ে লেনদেন শুরু হলেও বেলা যত গড়ায়, তত বেশি কমে যায় তা। লেনদেনের গতি কমে যাওয়াটা আরও হতাশার।

পুঁজিবাজারে কালো টাকা নামে পরিচিতি পাওয়া অপ্রদর্শিত আয় বিনিয়োগের সুযোগ বহাল রাখার ইঙ্গিত দেয়ার পর বৃহস্পতিবার উত্থানের সঙ্গে মিল রেখে নতুন সপ্তাহের প্রথম দিন লেনদেনের শুরুটা ছিল ঝলমলে। কিন্তু শেষ বেলায় পুরো বিপরীত চিত্র।

রোববার লেনদেনের প্রথম ১৫ মিনিটে ৩৪ পয়েন্ট বেড়ে গেলেও দিন শেষ হয়েছে সূচকের ১৯ পয়েন্ট পতনের মধ্য দিয়ে।

বৃহস্পতিবার ২৩ কর্মদিবস পর লেনদেন প্রথমবারের মতো ১ হাজার কোটি টাকার ঘর ছাড়ালেও সেটি আবার কমে গেছে। লেনদেন হয়েছে ৮৯৫ কোটি ৭৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা।

৬২টি কোম্পানির দর বাড়লেও কমে গেছে ২৮২টির। ৩৮টি দর ধরে রাখতে পারে কোনো রকমে।

আগের কর্মদিবসে বেড়েছিল ১৯৮টি কোম্পানির দর, কমেছিল ১৩৫টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৪৮টির দর।

বুধবার পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম একটি অনুষ্ঠানে বলেন, তিনি পুঁজিবাজারে অপ্রদর্শিত আয় বিনিয়োগের সুযোগ বহাল রাখার পক্ষে। একই দিন সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, আগামী অর্থবছরের বাজেটে যেসব প্রস্তাব রাখা হয়েছে, সেগুলো বাস্তবায়ন হলে পুঁজিবাজার অবশ্যই চাঙা হবে। পাচার হওয়া টাকা দেশে ফিরিয়ে আনার যে সুযোগ দেয়া হয়েছে, সেগুলো এলে একটি অংশ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ হবে বলেই বিশ্বাস করেন তিনি।

একই দিন বাংলাদেশ ব্যাংকের অফ-সাইট সুপারভিশন বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক আমিনুর রহমানকে বদলির খবর আসে গণমাধ্যমে।

আমিনুর তুমুল আলোচিত ছিলেন এ কারণে যে তিনি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এমন সব বিষয় দেখভাল করতেন, যা পুঁজিবাজারের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রভাব ছিল।

কয়েক বছর ধরেই বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আলোচনা ছিল যে বাংলাদেশ ব্যাংক পুঁজিবাজার নিয়ে রক্ষণশীল। প্রায়ই এমন সিদ্ধান্ত এসেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে, যা বাজারের জন্য নেতিবাচক বার্তা দিয়েছে।

গত সেপ্টেম্বর থেকে পুঁজিবাজারে ধীরগতির পেছনে যেসব কারণ উঠে এসেছিল তার মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির মধ্যে মতদ্বৈধতার বিষয়টি সামনে এসেছে। পুঁজিবাজারে প্রভাব ফেলে, এমন সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে দুই সংস্থা সমন্বয় করে সিদ্ধান্ত নেবে- ২০১৪ সালে সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়টি জানানো হয়। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রায়ই নানা সময় একক সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা নিয়ে বিএসইসি একাধিকবার প্রকাশ্যেই তাদের অসন্তোষ জানিয়েছে।

পুঁজিবাজারে প্রভাব ফেলে, বাংলাদেশ ব্যাংকের এমন নানা সিদ্ধান্ত গ্রহণে আমিনুর রহমানের ভূমিকা ছিল। বাজার চাঙা করতে সম্প্রতি সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে যেসব প্রস্তাব ও পরামর্শ দেয়া হয়, তার মধ্যে একটি ছিল আমিনুরের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া।

বাজেট ঘোষণার পর টানা তিন কর্মদিবসে ১১৮ পয়েন্ট সূচক পড়লেও পরের দুই দিনে ৬৪ পয়েন্ট উত্থান হওয়ার পর রোববার ভালো দিন কাটবে ভেবেছিলেন যারা, হতাশ হয়েছেন।

রোববার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেনের চিত্র

শেয়ারদর ও সূচক বেড়ে লেনদেন শুরু হলেও বেলা যত গড়ায়, তত বেশি কমে যায় তা। লেনদেনের গতি কমে যাওয়াটা আরও হতাশার।

মিয়া আব্দুর রশিদ সিকিউরিটিজের শীর্ষ কর্মকর্তা শেখ ওহিদুজ্জামান স্বাধীন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আজকে বাজার কিছুটা সংশোধনের মধ্যে গেছে। যেগুলোর দর বেড়েছিল, সেগুলোর অ্যাডজাস্টমেন্ট হয়েছে।’

লেনদেন কমার ব্যাপারে তিনি বলেন, 'সংশোধনের কারণে অনেকেই ট্রেড করেননি। তাই লেনদেন কম হয়েছে।’

জনাব স্বাধীন বলেন, ‘আমার মনে হয়, সার্বিকভাবে বাজার সংশোধনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সিলেটের বন্যা ও বাজেট নিয়ে এখনও আলোচনা হচ্ছে, চূড়ান্ত হওয়ার পর বাজারের সার্বিক পরিস্থিতি বোঝা যাবে।’

সূচক কমাল যারা

সূচকের পতনে প্রধান ভূমিকায় ছিল রবি এবং ব্র্যাক ব্যাংক। রবির শেয়ারের দর কমেছে ১.০৩ শতাংশ। এতে করে সূচক কমেছে পেয়েছে ৩.০১ পয়েন্ট।

ব্র্যাক ব্যাংকের শেয়ারদর ১.৭১ শতাংশ কমায় সূচক হারিয়েছে ২.০১ পয়েন্ট।

ওয়ালটনের কারণে সূচক কমেছে ১.৯৭ পয়েন্ট। কোম্পানিটির শেয়ার দর ০.৩১ শতাংশ কমেছে।

আইসিবির দরপতনে ১.২০ শতাংশ পরপতনে ১.৮৫ পয়েন্ট, লাফার্জ হোলসিমের ১.১১ পয়েন্ট দরপতনে ১.৭৮ পয়েন্ট সূচক কমেছে।

এছাড়া স্কয়ার ফার্মা ১.৩৬ পয়েন্ট, বিকন ফার্মা ১.১১ পয়েন্ট, আল আরাফাহ ব্যাংক ১.০২ পয়েন্ট, বার্জার পেইন্টস ০.৮১ পয়েন্ট এবং ডাচ-বাংলা ব্যাংক সূচক কমিয়েছে ০.৮০ পয়েন্ট।

সব মিলিয়ে এই ১০ কোম্পানি সূচক ফেলেছে ১৫.৭২ পয়েন্ট।

বিপরীতে বেক্সিমকো লিমিটেড এবং গ্রামীণফোনের সূচক বাড়ানোর চেষ্টায় ছিল। বেক্সিমকোর দর ২.৬৭ শতাংশ বাড়ায় সূচকে যোগ হয়েছে ৬.০৫ পয়েন্ট। গ্রামীণফোনের দর ০.৬২ শতাংশ বাড়ায় সূচক বেড়েছে ৪.৯২ পয়েন্ট।

বেক্সিমকো গ্রুপের আরেক কোম্পানি বেক্সিমকো ফার্মা সূচক বাড়িয়েছে ১.৮০ পয়েন্ট। কোম্পানিটির দর ১.২৯ শতাংশ বেড়েছে।

পাওয়ার গ্রিডের দর ১.৭৯ শতাংশ বাড়ার কারণে সূচক বেড়েছে ১.৩৭ পয়েন্ট। ইউনাইটেড পাওয়ারের ০.৪৮ শতাংশ দর বৃদ্ধিতে সূচক বেড়েছে ১.৩৩পয়েন্ট।

এছাড়া বাংলাদেশে শিপিং করপোরেশন ১.৩২ পয়েন্ট, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল ১.১৬ পয়েন্ট, ইউনিলিভার ০.৭৬ পয়েন্ট, রেকিট বেনকিজার ০.৬৯ পয়েন্ট এবং জেএমআই হাসপাতাল ০.৫৫ পয়েন্ট সূচক বাড়িয়েছে।

সব মিলিয়ে এই ১০ কোম্পানি সূচক বাড়িয়েছে ১৯.৯৫ পয়েন্ট।

দর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০

ধারাবাহিকভাবে দর বাড়ছে ইন্স্যুরেন্স খাতের কোম্পানি মেঘনা ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের। সম্প্রতি তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানিটির লেনদেন শুরু হয়েছে ৮ জুন। ৯.৮৪ শতাংশ দর বেড়েছে কোম্পানিটির। ১৯ টাকা ৩০ পয়সা থেকে বেড়ে ২১ টাকা ২০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে কোম্পানিটির।

দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা মুন্নু ফেব্রিক্সের দর বেড়েছে ৯.৩৬ শতাংশ। কোম্পানিটি বিদ্যুৎ

সিনোবাংলা ইন্ডাস্ট্রিজের দর বেড়েছে ৭.৫৮ শতাংশ। কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ার ৫৪ টাকা ১০ পয়সা থেকে হাতবদল হয়েছে ৫৮ টাকা ২০ পয়সায়।

৬.৯৪ শতাংশ দর বেড়ে ১১৪ টাকা ৯০ পয়সায় শেয়ার লেনদেন হয়েছে আল-হাজ্ব টেক্সটাইলের।

প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের দর ৪.৮৯ শতাংশ বেড়ে ৭৯ টাকা ৪০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে।

উৎপাদন শুরু করে তেল বাজারজাতকরণের অপেক্ষায় থাকা এমারেল্ড অয়েলের দর বেড়েছে ৪.৪২ শতাংশ।

বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন, ঢাকা ডাইং, এইচ. আর টেক্সটাইল, হাক্কানি পাল্প, ইনফর্মেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক এবং ইনটেক লিমিটেড ছিল দর বৃদ্ধির শীর্ষ তালিকায়।

দরপতনের শীর্ষে যেগুলো

দর কমার শীর্ষ তালিকায় উঠে আসা দুই কোম্পানি সার্কিট ব্রেকার স্পর্শ করেছে। এর মধ্যে সিএপিএম আইবিবিএল ইসলামিক মিউচ্যুয়াল ফান্ডের দর ৩০ পয়সা বা ২ শতাংশ কমেছে। মেঘনা কনডেন্সড মিল্কের দর কমেছে ৫০ পয়সা বা ২ শতাংশ।

দর পতনের তালিকায় তৃতীয় স্থানে থাকা ন্যাশনাল পলিমারের শেয়ারের দর কমেছে ১ টাকা ১১ পয়সা বা ২ শতাংশ।

আরেক কোম্পানি গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্সের দরও ২ শতাংশ কমেছে। আগের দিনের তুলনায় কোম্পানিটির শেয়ারদর কমেছে ৮০ পয়সা।

এছাড়াও সিলভা ফার্মার ১.৯৯ শতাংশ, নাহি অ্যালমুনিয়ামের ১.৯৮ শতাংশ, ইউনিক হোটেলের ১.৯৮ শতাংশ, ফেডারেল ইন্স্যুরেন্সের ১.৯৮ শতাংশ, পপুলার লাইফের ১.৯৮ শতাং এবং সোনারগাঁও হোটেলের শেয়ারের দর ১.৯৮ শতাংশ করে কমেছে।

এ বিভাগের আরো খবর