অর্থপাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন রোধের মামলায় চলতি অর্থবছরের (২০২১-২২) প্রথম ১০ মাসে ৮৬৬ কোটি টাকা জব্দ করেছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। তদন্তাধীন নয়টি মামলার বিপরীতে এই টাকা জব্দ করা হয়।
রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) শনিবার অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশে মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন কার্যক্রম প্রতিরোধের ২০ বছর’ শীর্ষক সেমিনারে এ তথ্য তুলে ধরা হয়।
বিএফআইইউ-এর প্রধান মাসুদ বিশ্বাসের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরে সাতটি মামলার বিপরীতে জব্দ করা হয় ৩৮ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। আর গত পাঁচ বছরে ৬৩টি তদন্তাধীন মামলার বিপরীতে জব্দ করা হয়েছে ১ হাজার ৩৩৩ কোটি টাকা।
বিএফআইইউ-এর জব্দ করা অর্থের মধ্যে চলতি অর্থবছরের এপ্রিল পর্যন্ত ২৭ কোটি টাকা সরকারি কোষাগারে জমা হয়েছে। এছাড়া গত ৫ অর্থবছরে সরকার পেয়েছে ১ হাজার ২৭৩ কোটি টাকা।
ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় শনিবার বিএফআইইউ আয়োজিত সেমিনারে বক্তব্য দেন গভর্নর ফজলে কবির। ছবি: নিউজবাংলা
সুইস ব্যাংকে জমা অর্থের তথ্য চেয়েছে বিএফআইইউ
দেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থের বিষয়ে তথ্য চেয়ে সুইস ন্যাশনাল ব্যাংকের (এসএনবি) কাছে আবেদন করা হয়েছে বলে জানান বিএফআইইউ-এর অতিরিক্ত পরিচালক মো. কামাল হোসেন।
তিনি জানান, প্রতিবারের মতো এবারও তথ্য চাওয়া হয়েছে বিএফআইইউ-এর পক্ষ থেকে।
সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এসএনবি বৃহস্পতিবার তাদের বার্ষিক প্রতিবেদনে সুইস ব্যাংকগুলোতে জমা হওয়া বিভিন্ন দেশের ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের অর্থ ও সম্পদের তথ্য প্রকাশ করে।
তাতে দেখা যায়, ২০২১ সালে সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশিদের নামে জমা টাকার পরিমাণ এক বছরে ৫৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৭ কোটি ১১ লাখ সুইস ফ্রাঙ্ক।
বিএফআইইউ-এর অতিরিক্ত পরিচালক বলেন, ‘পাচার করা অর্থ উদ্ধার জটিল কাজ। বিএফআইইউ বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের ৬৭ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের অর্থ সম্পর্কে তথ্য পেয়েছে সুইস ন্যাশনাল ব্যাংকের কাছ থেকে।’
এদিকে বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন দেশে টাকা পাচারের বিষয়ে তদন্তে নেমে এ পর্যন্ত ৮০০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করেছে বিএফআইইউ।
বাংলাদেশ থেকে মূলত যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, হংকং, দুবাই, সিঙ্গাপুর ও ইউরোপের দেশগুলোতে অর্থ পাচার হয় বলে সেমিনারে জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ এবং ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন এবিবির চেয়ারম্যান ও ব্র্যাক ব্যাংকের এমডি সেলিম আর. এফ. হোসেন।
দেশের বিভিন্ন ব্যাংকের এমডিসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।