আর্থিক প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তাদের ঋণ পরিশোধে দেয়া সুবিধা আরও তিন মাস বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
করোনা মহামারি বা অন্য কোনো কারণে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়া ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ঋণের দায় শোধে বিশেষ সুবিধা দিয়ে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি সার্কুলার জারি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
গ্রাহকদের ঋণের দায় এড়াতে বড় অঙ্কের সুদ মওকুফ সুবিধাসহ ঋণ পরিশোধের সুযোগ দিতে ‘এককালীন এক্সিট’ নামে ওই সার্কুলারে বলা হয়, ‘আর্থিক প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকরা ঋণের দুই শতাংশ পরিশোধ করলেই ঋণ নিয়মিত থাকবে। তবে পরবর্তী বছরে ওই ঋণ শোধ করতে হবে।’
‘তবে এ সুবিধা নিতে হলে ৩০ এপ্রিলের মধ্যে সংশ্লিষ্ট গ্রাহককে ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ঋণের সর্বশেষ স্থিতির কমপক্ষে ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিয়ে আবেদন করতে হবে।’
বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগ থেকে জারি করা সার্কুলারে আবেদনের এই সময়সীমা ৩১ জুলাই পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী বা ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে পাঠানো সার্কুলারে বলা হয়, ‘নির্ধারিত ৩০ এপ্রিলের মধ্যে আবেদন করতে না পারায় ঋণ সমন্বয়ে সদিচ্ছুক অনেক গ্রাহক মন্দমানে শ্রেণিকৃত ঋণ সমন্বয় করতে পারছে না। এ প্রেক্ষাপটে এক্সিট পলিসির আওতায় গ্রাহকদের ঋণ পরিশোধের সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর খেলাপি ঋণ আদায় ও তারল্য পরিস্থিতি উন্নয়নে আবেদন দাখিলের সময়সীমা ৩১ জুলাই পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হলো।’
সার্কুলারে আরও বলা হয়, ‘এ সময়ে প্রাপ্ত আবেদনগুলো সংশ্লিষ্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠান ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নিষ্পত্তি করবে। আর আগে দেয়া সার্কুলারের অন্য সব নির্দেশনা অপরিবর্তিত থাকবে।
এর আগে এ সংক্রান্ত নির্দেশনায় বলা হয়, এককালীন বা সর্বোচ্চ এক বছরের মধ্যে ঋণ পরিশোধের শর্তে ব্যাংক-বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ গ্রাহকরা সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ সুদ মওকুফ সুবিধা পাবেন। সার্কুলার জারির আগে ঋণের কোনো কিস্তি বা অংশবিশেষ পরিশোধ করে থাকলে তা ‘ডাউন পেমেন্ট’ হিসেবে গণ্য হবে না।
২ শতাংশ ডাউন পেমেন্টসহ এমন আবেদন পেলে সংশ্লিষ্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে ৬০ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিতে হবে।
তবে জাল-জালিয়াতি বা কোনো ধরনের প্রতারণা বা অনিয়মের মাধ্যমে নেয়া ঋণের ক্ষেত্রে এ সুবিধা মিলবে না।
সংশ্লিষ্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদ চাইলে এমন গ্রাহককে ঋণের আরোপিত সুদের সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ মওকুফ করতে পারবে। এর বাইরে অনারোপিত সুদ বা অন্য কোনো জরিমানা বা চার্জ বা ফিও মওকুফ করতে পারবে। তবে কোনোভাবেই মূল ঋণ মওকুফ করতে পারবে না।
ঋণ প্রদানের দিন থেকে ঋণ সমন্বয় বা পুরো আদায়ের দিন পর্যন্ত আদায়যোগ্য অর্থের ওপর ‘কস্ট অফ ফান্ড’ সুদ (ইসলামি শরিয়াহ মাফিক অর্থায়নের ক্ষেত্রে মুনাফা) আরোপ করতে পারবে আর্থিক প্রতিষ্ঠান।
সম্পূর্ণ পরিশোধ না করা পর্যন্ত এ ঋণ ‘শ্রেণীকৃত’বা খেলাপি হিসেবে বিবেচনা করা হবে।