বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

জ্বালানি তেলের দাম আবার বাড়ানোর চিন্তা

  •    
  • ১৪ জুন, ২০২২ ১৮:৫৮

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, ‘বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়েছে। বিপিসি প্রতিদিন শত কোটি টাকা লোকসান দিচ্ছে। এ অবস্থায় জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয়ের কথা ভাবছে সরকার। তবে দামটা যেন গ্রাহকের সহনীয় পর্যায়ে থাকে সে বিষয়টি আগে দেখা হবে।’

বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে দিনে ১০০ কোটি টাকার বেশি লোকসান দিয়ে চলেছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)। ধারাবাহিক ভর্তুকির চাপে জ্বালানির দর সমন্বয়ের কথা ভাবছে সরকার। এর আগে গত বছরের ৩ নভেম্বর ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ১৫ টাকা করে বাড়ায় সরকার।

মঙ্গলবার বিদ্যুৎ ভবনে বাংলাদেশ পাওয়ার ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটে (বিপিএমআই) এক সেমিনারে এ কথা জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

তিনি বলেন, ‘বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিপিসি প্রতিদিন শত কোটি টাকা লোকসান দিচ্ছে। গ্রাহকেরা চাপে পড়ুক এটাও সরকার চায় না। তবে এটা সবার জন্য সহনীয় পর্যায়ে রাখতে সরকার কাজ করছে।

‘বর্তমানে বিশ্ব যে অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে এবং দেশের বর্তমান যে অবস্থা তাতে এই সময়ে জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয় করব কিনা, সেটা আগে ভাবতে হবে। এ নিয়ে কাজ করছে সরকার। তবে গ্রাহকের জন্য যেন দাম সহনীয় পর্যায়ে থাকে সে বিষয়টি আগে দেখা হবে।’

নসরুল হামিদ বলেন, ‘সরকার চায় দক্ষিণাঞ্চলে মানুষের ভাগ্য উন্নয়ন করতে। পায়রা বন্দর শুধু একটা বন্দর নয়, পায়রাকে কেন্দ্র করে বিশাল কর্মযজ্ঞ চলছে। ওই অঞ্চলের চেহারা বদলে যাচ্ছে। দেশের উন্নয়নের জন্য সারাদেশে কানেকটিভিটি দরকার। সারাদেশে কানেকটিভিটি করতে কাজ করে যাচ্ছি। পদ্মা সেতু দিয়ে গ্যাস সঞ্চালন লাইন নেয়া হয়েছে। অন্যদিকে ভোলার গ্যাস কীভাবে বরিশাল হয়ে পটুয়াখালীতে নেয়া যায় সে লক্ষ্যে কাজ চলছে।’

এদিকে জ্বালানি বিভাগ বলছে, বিশ্ব বাজারে জ্বালানি তেলের রেকর্ড মূল্যবৃদ্ধির ফলে দেশে ডিজেল বিক্রিতে বিপিসির লিটার প্রতি লোকসান যাচ্ছে ৪৪ টাকা ৪২ পয়সা। ৩ জুনের দর অনুযায়ী বিপিসি দৈনিক লোকসান দিচ্ছে ৮৯ কোটি ৫৭ লাখ ২৬ হাজার ৫০০ টাকা।

বিপিসির দেয়া তথ্যমতে, আন্তর্জাতিক বাজারে ৩ জুন ব্যারেল প্রতি জ্বালানি তেলের দর উঠেছে ১৬৭ দশমিক ১৭ ডলার। প্রিমিয়াম খরচ ২ দশমিক ৮১ ডলার দিয়ে দর দাঁড়াচ্ছে ১৬৯ দশমিক ৯৮ ডলার। এতে করে লিটার প্রতি আমদানি খরচ পড়ছে ৯৭ টাকা ৮২ পয়সা। ডিজেলের লিটার প্রতি ভ্যাট-ট্যাক্স রয়েছে ১৬ টাকা ৭ পয়সা, পরিবহনসহ অন্যান্য খরচ রয়েছে ৪ টাকা ৬৬ পয়সা।

আমদানি খরচ, ভ্যাট-ট্যাক্স ও অন্যান্যসহ লিটার প্রতি খরচ দাঁড়াচ্ছে ১১৮ টাকা ৫৬ পয়সা। এর বাইরে রয়েছে বিক্রেতার ভ্যাট ১ টাকা ৫৭ পয়সা, বিক্রয় ও বিতরণ মার্জিন ১ টাকা ৫০ পয়সা, খুচরা বিক্রেতার কমিশন ২ টাকা ৭৯ পয়সা, বিপিসির মার্জিনসহ অন্যান্য খরচ রয়েছে ৫ টাকা ৮৬ পয়সা।

সব মিলে লিটার প্রতি জ্বালানি তেলের মূল্য দাঁড়ায় ১৩০ টাকা ৩৫ পয়সা। আর এখন ডিজেল খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা দরে। সে হিসাবে বিপিসির মার্জিনসহ লিটার প্রতি লোকসান দাঁড়াচ্ছে ৫০ টাকা ৩৫ পয়সা। বিপিসির মার্জিন বাদ দিলেও লিটারে লোকসান যাচ্ছে ৪৪ টাকা ৪২ পয়সা।

দেশে বেশি চাহিদা ডিজেলের। গত ৩ জুন চাহিদা ছিল ১ কোটি ৭৭ লাখ ৯০ হাজার লিটার। দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় যেসব তেল আসছে সেগুলোর দর তুলনামূলক কম। আবার ক্রুড অয়েল আমদানি করে পরিশোধন করলে কয়েক টাকা সাশ্রয় হয়। তবে এ খাতে বড় অংকের ভ্যাট-ট্যাক্স রয়েছে।

বিপিসি জানায়, অকটেনে বর্তমানে লোকসান হচ্ছে লিটার প্রতি ৩৪ টাকা। পেট্রোল ও জেট ফুয়েলে কোনো লোকসান নেই এই মুহূর্তে। জেট ফুয়েলের বর্তমান দর অভ্যন্তরীণ রুটে লিটার প্রতি ১১১ টাকা ও আন্তর্জাতিক রুটে ১ ডলার ৯ সেন্ট।

এদিকে বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার রাত পৌনে ৮টায় ব্রেন্ট অপরিশোধিত তেলের দর ছিল প্রতি ব্যারেল ১২৪ ডলার ৩০ সেন্ট। অন্যদিকে ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট তেল ১২২ ডলার ৯০ সেন্টে বিক্রি হয়েছে।

এই দর গত দুই মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়তে শুরু করে। করোনা মহামারির মধ্যেও টানা বেড়েছে তেলের দাম। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করায় তা আরও ঊর্ধ্বমুখী হয়।

গত বছরের অক্টোবরের শেষ দিকে দুই ধরনের তেলের দামই ৮০ ডলার ছাড়িয়ে যায়। সে সময় বাংলাদেশ সরকারও ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে এক লাফে ১৫ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম ৮০ টাকা নির্ধারণ করে।

এ বিভাগের আরো খবর