বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বাজেটের পর পুঁজিবাজার পড়ছেই

  •    
  • ১৪ জুন, ২০২২ ১৫:০৩

শেষে টানা তিন দিনে ১১৮ পয়েন্ট সূচকের পতন হলো। এর মধ্যে রোববার ৪৮ পয়েন্ট, সোমবার ৩৯ পয়েন্ট এবং মঙ্গলবার সূচক পড়ল আরও ৩০ পয়েন্ট।

১০ শতাংশ শেয়ার ছাড়া হয়েছে, এমন কোম্পানির করপোরেট কর আড়াই শতাংশ কমা ছাড়া পুঁজিবাজারের জন্য কোনো ঘোষণা না থাকার পর টানা তিন কর্মদিবস সূচকের পতন দেখল বিনিয়োগকারীরা।

এই করপোরেট কর আবার ব্যাংক, বিমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ওপর প্রযোজ্য হবে না। লভ্যাংশের ওপর থেকে দ্বৈত কর প্রত্যাহার, অপ্রদর্শিত আয় বিনিয়োগের সুযোগ দেয়ার যে দাবি উঠেছিল, সেগুলোও উপক্ষো করেছেন অর্থমন্ত্রী।

ঈদের পর থেকে টানা পতনের মধ্যে থাকা পুঁজিবাজার বাজেট ঘোষণার আগে আগে চাঙা হয়ে উঠতে থাকলেও গত বৃহস্পতিবার বাজেট ঘোষণার দিন দেখা যায় ধীরগতি।

এরপর দুই দিনের সাপ্তাহিক ছুটি শেষে টানা তিন দিনে ১১৮ পয়েন্ট সূচকের পতন হলো। এর মধ্যে রোববার ৪৮ পয়েন্ট, সোমবার ৩৯ পয়েন্ট এবং মঙ্গলবার সূচক পড়ল আরও ৩০ পয়েন্ট।

৮৯টি কোম্পানির শেয়ারের দর বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ২৩৬টির দর। অপরিবর্তিত ছিল আরও ৫৭টির দর।

শেয়ারদর ও সূচক কমলেও লেনদেনের গতি বাড়ছে। রোববার যেখানে ৬৩৬ কোটি ৪০ লাখ ৭০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল, পরদিন তা বেড়ে হয় ৭৯৮ কোটি ১৯ লাখ ৭২ হাজার টাকা। সেটি আরও বেড়ে হয়েছে ৮৭৪ কোটি ৯১ লাখ ৯৮ হাজার টাকা।

মঙ্গলবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের লেনদেনের চিত্র

পুঁজিবাজারের লেনদেন নিয়ে ট্রেজার সিকিউরিটিজের চিফ অপারেটিং অফিসার মোস্তফা মাহবুব উল্লাহ নিউজবাংলাকে বলেন, 'বাজেটে প্রত্যাশার প্রতিফলন হয়নি, এটার প্রতিক্রিয়া বাজারে রয়েছে।’

বাজেটে প্রত্যাশা পূরণ না হওয়ায় বড় বিনিয়োগকারীরা অভিমান নিয়ে দূরে সরে আছেন কি না- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, 'সেটা এভাবে না বলে বলা যায় যে, বাজার যদি গরম হয় তখন কেউ না এসে থাকতে পারবে না। অর্থাৎ আমরা যদি বাজার জমাতে পারি তাহলে যারা দূরে সরে আছেন তারাও চলে আসবেন।

'এক্ষেত্রে মূল যে বিষয়টা সেটা হলো, আমরা নীতিনির্ধারণের মাধ্যমে বা পলিসিগতভাবে বাজারকে কতটা সাপোর্ট দিতে পারছি এবং বাজারকে কতটা ভালো জায়গায় নিতে পারছি।'

কিন্তু বাজেট ঘোষণার পরে তো স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষ তো অভিনন্দন জানিয়েছে- এমন মন্তব্যের জবাবে মাহবুব উল্লাহ বলেন, ‘গত ১০-১২ বছর ধরে দেখা যায়, বাজেট হওয়ার পরে কাঙ্খিত কিছু না পেলেও অভিনন্দন জানানোর একটা ট্রেন্ড চালু হয়ে গেছে। বাজেট প্রতিক্রিয়ায় স্টক এক্সচেঞ্জগুলো ৭ থেকে ৮টি প্রস্তাব বিবেচনার দাবি উঠছে, তাহলে অভিনন্দন জানানো হয় কেন?’

দর বৃদ্ধির শীর্ষ তালিকায় ফের দুর্বল কোম্পানি

বাজেটের পর থেকে পুঁজিবাজারে ভাটার যে টান দেখা যাচ্ছে, সেটির প্রভাব দেখা যাচ্ছে না স্বল্প মূলধনি ও দুর্বল কোম্পানির ক্ষেত্রে।

আগের দুই দিনের মতোই দর বৃদ্ধির শীর্ষ তালিকায় এমন সব কোম্পানি দেখা গেছে, যেগুলোর লভ্যাংশের ইতিহাস খুব ভালো নয়, যাদের আয়ের ধারাবাহিকতা নেই।

সবচেয়ে বেশি ৯.৯৭ শতাংশ বেড়েছে শাইনপুকুর সিরামিকসের শেয়ারদর, যেটি দর গত ১৪ এপ্রিলের পর থেকে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে। সেদিন শেয়ারদর ছিল ২৫ টাকা, মঙ্গলবার দাঁড়িয়েছে ৪৮ টাকা ৫০ পয়সা।

লোকসানের কারণে টানা সাত বছর লভ্যাংশ না দেয়া কেম্পানিটি গত দুই বছরে যথাক্রমে ২ ও আড়াই শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে। চলতি বছর প্রথম তিন প্রান্তিকে শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে কেবল ২৭ পয়সা।

দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা মিরাকল ইন্ডাস্ট্রিজের দর বেড়েছে ৯.৭১ শতাংশ। কোম্পানিটি গত বছর শেয়ার প্রতি কেবল ১০ পয়সা লভ্যাংশ দিয়েছে। চলতি বছর প্রথম তিন প্রান্তিকে শেয়ার প্রতি ১ টাকা ২১ পয়সা লোকসান দেখানোর কারণে লভ্যাংশ পাওয়া অনিশ্চিত।

তৃতীয় অবস্থানে ছিল মুন্নু ফেব্রিক। ওটিসি থেকে ফেরার পর এই কোম্পানিটি গত বছর কোনো লভ্যাংশ দেয়নি। পরে চলতি অর্থবছরে ১ শতাংশ, অর্থাৎ শেয়ার প্রতি ১০ পয়সা অন্তর্বর্তী লভ্যাংশ দিয়েছে। গত তিন কর্মদিবসে শেয়ারদর বেড়েছে ৩০ শতাংশের মতো।

চতুর্থ অবস্থানে ছিল নতুন তালিকাভুক্ত মেঘনা ইন্স্যুরেন্স, যেটি পর পর পাঁচ দিন দর বৃদ্ধির সর্বোচ্চ সীমা ছুঁয়ে লেনদেন শেষ করেছে। ১০ টাকায় তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির শেয়ারের বর্তমান দর ১৬ টাকা।

লোকসানের কারণে গত বছর লভ্যাংশ না দেয়া খান ব্রাদার্স চলতি অর্থবছরের তৃতীয় প্রান্তিক পর্যন্ত লোকসানেই। এই কোম্পানিটির শেয়ারদর এক লাফে বেড়েছে ৯.৪৮ শতাংশ। আগের দিন দর ছিল ১১ টাকা ৬০ পয়সা, সেটি বেড়ে হয়েছে ১২ টাকা ৭০ পয়সা।

শীর্ষ দশের অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে জেএমআই হসপিটালের দর ৯.০৬ শতাংশ, নাহী অ্যালুমিনিয়ামের দর ৮.৭৬ শতাংশ, এস আলম কোল্ডরোল স্টিলের শেয়ারদর ৮.৬৮ শতাংশ, লোকসানি মেঘনা কনডেন্সড মিল্কের দর ৬.৭২ শতাংশ এবং প্রাইম ইন্স্যুরেন্সের দর বেড়েছে ৬.৩০ শতাংশ।

অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে একটির দর ৫ শতাংশের বেশি, ৫টির দর ৪ শতাংশের বেশি, ৪টির দর ৩ শতাংশের বেশি বেড়েছে।

ঢালাও পতনে বিপুল সংখ্যক কোম্পানি

দরপতনের সর্বোচ্চ সীমা ২ শতাংশে নামিয়ে আনার পর থেকে সর্বোচ্চ সীমায় দর কমার পর ক্রেতা উধাও হয়ে যাওয়ার যে চিত্র দেখা যাচ্ছে, সেটির আরেক দৃষ্টান্ত দেখা গেল। এদিনও ২ শতাংশ বা আশেপাশে দর হারিয়ে ফেলা কোম্পানিগুলোর শেয়ারের ক্রেতা পাওয়া যায়নি।

সবচেয়ে বেশি দরপতনের তালিকায় ওয়ান ব্যাংককে দেখালেও এর শেয়ারদর প্রকৃতপক্ষে এত কমেনি। ব্যাংকটি এবার তার শেয়ারধারীদেরকে ৫ শতাংশ করে বোনাস শেয়ার দেবে বলে জানিয়েছে। সোমবার রেকর্ড ডেটে শেয়ারদর ছিল ১১ টাকা ৩০ পয়সা। লভ্যাংশ সমন্বয়ে দর দাঁড়ায় ১০ টাকা ১০ টাকা ৬০ পয়সা। এক দিনে কমা সম্ভব ছিল ২০ পয়সা। কমেছে ততটাই।

ইন্দোবাংলা ফার্মা, এপেক্স ট্যানারি, রেনউইক যগেশ্বর, জিলবাংলা সুগার, জেমিসি সি ফুড, প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্সম সিএপিএম আইবিবিএল মিউচ্যুয়াল ফান্ড, ইস্টার্ন লুব্রিকেন্ট, রূপালী ইন্স্যুরেন্স, এপেক্স ফুটওয়্যারের দরও কমেছে দুই শতাংশের কাছাকাছি।

এ বিভাগের আরো খবর