বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা নেই বাজেটে: সানেম

  •    
  • ১৩ জুন, ২০২২ ২০:৩৯

সায়মা হক বিদিশা বলেন, ‘উচ্চ মূল্যস্ফীতির বাস্তবতায় যেখানে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ বাড়ানো দরকার ছিল, সেখানে এবারের প্রস্তাবিত বাজেটে এ খাতে প্রকৃত বরাদ্দ কমেছে।’

প্রস্তাবিত বাজেটে সামষ্টিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় যে পদক্ষেপ নেয়া জরুরি, সেখানে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনার অভাব রয়েছে বলে মনে করে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সানেম।

সংস্থাটি মনে করে, মূল্যস্ফীতি সংক্রান্ত যে সংকট এখন আছে, তা সমাধানের সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা বাজেটে নেই। পণ্য ও সেবার বাড়তি চাহিদা কীভাবে সামাল দেয়া হবে সেটাও বলা হয়নি।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমদানি পণ্যের শুল্ক এখনও কমানো হয়নি। কাছাকাছি সময়ে তেল ও জ্বালানির দর সমন্বয় মূল্যস্ফীতিতে চাপ ফেলতে পারে বলে মনে করে সানেম।

সোমবার রাজধানীর ব্র্যাক ইন সেন্টারে সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) বাজেট পর্যালোচনা তুলে ধরেন সানেমের গবেষণা পরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশা।

তিনি বলেন, ‘উচ্চ মূল্যস্ফীতির বাস্তবতায় যেখানে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ বাড়ানো দরকার ছিল, সেখানে এবারের প্রস্তাবিত বাজেটে এ খাতে প্রকৃত বরাদ্দ কমেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সরকারের অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় সামাজিক নিরাপত্তা খাতে জিডিপির ২ শতাংশ বরাদ্দ দেয়ার বিষয়ে বলা হয়েছে। কিন্তু এ বছর পেনশন, বৃত্তি ও সুদ বাদে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে প্রকৃত বরাদ্দ এক শতাংশের মতো। এমনকি গত বছরের চেয়েও এবার বরাদ্দ কমানো হয়েছে।

বর্তমান প্রেক্ষাপটে মাথাপিছু সামাজিক ভাতার বরাদ্দ বৃদ্ধি করা দরকার ছিল বলে মনে করেন সায়মা হক। বলেন, ‘ওপেন মার্কেট সেইল বা ওএমএসে বরাদ্দ না বাড়িয়ে উল্টো কমানো হয়েছে।’

বৈষম্য প্রসঙ্গে সায়মা হক বলেন, ‘২০১৬ সালের পর সরকারি পরিসংখ্যান নেই। সেই ২০১৬ সালের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, দেশের মোট সম্পদের ৩৮ দশমিক ১০ শতাংশ শীর্ষ ধনীর হাতে পুঞ্জীভূত। আর কোভিডকালে বৈষম্য আরও বেড়েছে। যদিও এ বিষয়ে সরকারি পরিসংখ্যান নেই।

বৈষম্য কমাতে তিনি কর কাঠামো সংস্কারের পরামর্শ দেন। অর্থাৎ যার যত বেশি সম্পদ, তার ওপর তত বেশি হারে করারোপ করা।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সানেমের নির্বাহী পরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক সেলিম রায়হান।

তিনি বলেন, ‘এ বছরের বাজেট পরবর্তী সময়ে বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনা প্রসঙ্গে যত আলোচনা হচ্ছে, বাজেটের মূল কাঠামো নিয়ে ঠিক ততটা হচ্ছে না। এটা সব দিক থেকেই অনৈতিক। সানেম এই নীতি সমর্থন করে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘টাকা পাচার হলো কেন তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা উচিত। পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনার যে প্রক্রিয়া প্রস্তাব করা হয়েছে তা বাদ দেয়া উচিত, এটি নৈতিকভাবে অসমর্থনযোগ্য।’

এই বাজেট বৃহৎ ব্যবসাবান্ধব উল্লেখ করে সেলিম রায়হান বলেন, ‘কর্পোরেট কর ছাড় দেয়া হয়েছে, যা বড় বড় ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। কিন্তু গত দুই বছরে দেশের ক্ষুদ্র, অতি ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তারা যেমন পুনরুদ্ধারে খুব একটা সহায়তা পায়নি, তেমনি এই কর ছাড় তাদের জন্য প্রযোজ্য নয়।’

তিনি বলেন, ‘তথ্যের ঘাটতি সব সময়ই একটি বড় সমস্যা হিসেবে দেখা গেছে। বিশেষ করে কোভিডের সময় তা আরও বেশি প্রকট হয়ে ওঠে। তখন দেশের বেসরকারি গবেষণা সংস্থাগুলো দারিদ্র্য নিয়ে বেশ কয়েকটি জরিপ করে। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে সেরকম জরিপ বা গবেষণা করা হয়নি।’

বেসরকারি গবেষণা সংস্থাগুলোর জরিপ নিয়ে নানা ধরনের প্রশ্ন তোলা প্রসঙ্গে সেলিম রায়হান আহ্বান জানান। বলেন, ‘সরকার বিশেষ করে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) দেশের অন্যান্য গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও অর্থনীতিবিদদের নিয়ে একটি সম্মেলন করতে পারে। সেখানে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের জরিপ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করতে পারে।

অনুষ্ঠানে সানেমের গবেষকরা উপস্থিত ছিলেন।

এ বিভাগের আরো খবর