বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বাজেট আশানুরূপ নয়: বেসিস

  •    
  • ১১ জুন, ২০২২ ২০:১৩

আবু দাউদ খান বলেন, ‘বাজেটে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের জন্য বরাদ্দ গত বছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ১৬ দশমিক ৬৯ শতাংশ, অর্থাৎ প্রায় ২৭৪ কোটি টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এই অর্থ কোন কোন প্রকল্প বা খাতে ব্যয় হবে এবং তার মাধ্যমে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প ও এই খাতের ব্যবসায়ীরা কীভাবে উপকৃত হবেন, সে বিষয়ে সুস্পষ্ট কোনো ধারণা বা ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।’

২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে বেসিসের প্রস্তাবের আশানুরূপ প্রতিফলন ঘটেনি বলে দাবি করেছে সংগঠনটি।

শনিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বেসিস অডিটোরিয়ামে আয়োজিত বাজেট-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে বেসিস নেতারা এমন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।

বেসিসের বাজেট প্রতিক্রিয়ার সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন বেসিস সহসভাপতি (প্রশাসন) আবু দাউদ খান, বেসিস সহসভাপতি (অর্থ) ফাহিম আহমেদ ও বেসিস পরিচালক এ কে এম আহমেদুল ইসলাম বাবু।

গত ৯ জুন জাতীয় সংসদে ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালকে ধন্যবাদ জানায় বেসিস।

দেশের সফটওয়্যার খাতের সংগঠনটির সহসভাপতি (প্রশাসন) আবু দাউদ খান বলেন, ‘বাজেটে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের জন্য বরাদ্দ গত বছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ১৬ দশমিক ৬৯ শতাংশ, অর্থাৎ প্রায় ২৭৪ কোটি টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এই অর্থ কোন কোন প্রকল্প বা খাতে ব্যয় হবে এবং তার মাধ্যমে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প ও এই খাতের ব্যবসায়ীরা কীভাবে উপকৃত হবেন, সে বিষয়ে সুস্পষ্ট কোনো ধারণা বা ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।’

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বাজেটে বেসিসের প্রস্তাবের আশানুরূপ প্রতিফলন ঘটেনি। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিদেশি বিনিয়োগ উৎসাহিত করতে তারা কর অব্যাহতির সময়সীমা ২০২৪ সাল থেকে বাড়িয়ে ২০৩০ সাল পর্যন্ত করার প্রস্তাব করেছিল। বিষয়টি বাজেটে গুরুত্ব পায়নি। অন্যদিকে স্থানীয় সফটওয়্যার ও প্রযুক্তিনির্ভর সেবার ওপর এখন ব্যবসায় পর্যায়ে ৫ শতাংশ হারে উৎসে মূল্য সংযোজন কর কাটা হয়। দেশের সফটওয়্যার শিল্পের অনুকূলে স্থানীয় বাজার সম্প্রসারণের উদ্দেশ্যে তা প্রত্যাহারের প্রস্তাবও দিয়েছিল বেসিস।

পাশাপাশি সব মন্ত্রণালয় ও তাদের অধিভুক্ত সংস্থাগুলোর অভ্যন্তরীণ উন্নয়নের জন্য যে বাজেট রয়েছে তার অন্তত ১০ শতাংশ সফটওয়্যার এবং আইটিইএস কেনার জন্য বরাদ্দ করারও প্রস্তাব করেছিল বেসিস। কিন্তু এগুলোর বিষয়ে এবারের বাজেটে কোনো সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেখা যায়নি বলে দাবি করে বেসিস।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সাইবার সিকিউরিটি এখন শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্বের সমস্যা। ঠিকমতো নিরাপত্তা বিধান না করার ফলে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির মতো ঘটনা ঘটেছে। আর সাইবার সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় সাইবার সিকিউরিটি সফটওয়্যার পণ্যগুলোর ওপর উচ্চ শুল্কহার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। এগুলো বিবেচনায় নিয়ে সাইবার সিকিউরিটি সফটওয়্যারের জন্য নতুন করে এইচএস কোড নির্ধারণ করে শুল্কহার নির্ধারণ করার বিষয়ে আমরা বলেছিলাম, যা আমরা এবারের বাজেট বক্তৃতায় প্রতিফলিত হতে দেখিনি।

পাশাপাশি তথ্যপ্রযুক্তি খাতে নারীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করতে তাদের জন্য ২ শতাংশ সুদে ঋণ দেয়ার লক্ষ্যে অন্তত ৩০০ কোটি টাকার তহবিল ও আইসিটি খাতে নারীদের কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে, নারীদের জন্য কর্মসুযোগ সৃষ্টিকারী সফটওয়্যার ও আইটি প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়োগকৃত নারী কর্মকর্তা/কর্মচারীর মাসিক বেতনের ১০ শতাংশ সরকারি আর্থিক প্রণোদনা দেয়ার ব্যাপারে বলেছিল বেসিস।

অন্যদিকে টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স (টিএ) প্রকল্প গ্রহণের জন্য ৫০০ কোটি টাকা তহবিল তৈরির প্রস্তাবও করে। একই সঙ্গে অনলাইনে লেনদেন উৎসাহিত করতে ক্রেতা এবং মার্চেন্ট উভয়কে যথাক্রমে ৩ ও ২ শতাংশ হারে নগদ প্রণোদনা প্রদানের প্রস্তাব করে।

সরকার যদিও তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে গুরুত্ব দিয়ে ২০৪১ সাল নাগাদ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে, ২০২২ সালকে তথ্যপ্রযুক্তি বর্ষপণ্য হিসেবে ঘোষণা করেছে, কিন্তু তার সঙ্গে সংগতি রেখে বাজেটে বেসরকারি খাতের অংশীদারত্ব বৃদ্ধি পায়, সে বিষয়ে বিশেষ কোনো পরিকল্পনা আমাদের চোখে পড়েনি, অথচ আজকের প্রায় ৪৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাংলাদেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড হিসেবে কাজ করেছে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বেসরকারি খাত।

তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম, বিশেষত ল্যাপটপ, প্রিন্টার, টোনার ইত্যাদির ওপর ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (মূসক বা ভ্যাট) আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে করে এ খাতের ব্যবসায়ী এবং ভোক্তা উভয়েরই ব্যয় বৃদ্ধি পাবে।

এ ক্ষেত্রে দেশে দ্রুত ল্যাপটপ তৈরির ইকোসিস্টেম গড়ে তুলে দেশীয় ল্যাপটপ উৎপাদন বহুগুণে বৃদ্ধি করার পরিকল্পনা থাকতে হবে, নতুবা এর ফলে আমদানি করা ল্যাপটপের দাম বেড়ে গিয়ে দেশের ফ্রিল্যান্সারদের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাওয়ার একটা আশঙ্কা সৃষ্টি হতে পারে।

এবারের প্রস্তাবিত বাজেটে স্টার্টআপ উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করতে বাজেটে স্টার্টআপ উদ্যোক্তাদের আয়কর রিটার্ন দাখিল ব্যতীত অন্য সব ধরনের রিপোর্টিংয়ের বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতি দেয়া হচ্ছে। সরকারের সময়োপযোগী এসব পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানিয়েছেন বেসিস নেতারা।

বেসিসের সহসভাপতি (অর্থ) ফাহিম আহমেদ আশা ব্যক্ত করেন যে সরকার বাজেট আলোচনার মাধ্যমে বিষয়গুলো বিবেচনা করবে।

এ বিভাগের আরো খবর