বিদেশে পাচার হয়ে যাওয়া অর্থ দেশে ফেরত আসবে বলে আশাবাদী অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেছেন, ‘আমরা (সরকার) পাচার হয়ে যাওয়া টাকা দেশে ফেরত আনতে সর্বাত্মক চেষ্টা করব। আশা করছি, টাকা ফেরত আসবে।’
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে শুক্রবার বাজেট-উত্তর সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
প্রথা অনুযায়ী বাজেট ঘোষণার পরের দিন সংবাদ সম্মেলনে বাজেটের বিভিন্ন দিক ব্যাখা করেন অর্থমন্ত্রী।
সকালে সংবাদ সম্মেলনে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) সমালোচনা করে বলেছে, পাচার হওয়া টাকা দেশে আনার উদ্যোগ অনৈতিক। এই টাকা কেউ দেশে ফেরত আনবে না বলেও জানানো হয় ওই সংবাদ সম্মেলনে।
বাজেট ঘোষণার পর দেশের সব অর্থনীতিবিদ একই কথা বলেছেন।
এ বিষয়ে এক সংবাদিক অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর অনেক দেশই বিভিন্ন সময়ে এ ধরনের সুযোগ দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রও দিয়েছে। সার্বিক বিষয় চিন্তা করে আমরা এই সুযোগ দিয়েছি। এই টাকা দেশের মানুষের হক। এই টাকা ফেরত আনতে আমরা চেষ্টা করব। আশা করছি সফল হব।’
সেই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে নিজের উত্থাপন করা প্রস্তাবিত বাজেটের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এই অর্থবছরে অনেক চড়াই-উতরাই আসবে। তবে এবারের বাজেট বাস্তবায়ন হলে দেশের অর্থনীতি আগের তুলনায় অনেক শক্তিশালী হবে।’
জাতীয় সংসদে বৃহস্পতিবার আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য পৌনে ৭ লাখ কোটি টাকার বেশি বাজেট পেশ করেন মন্ত্রী। এতে জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় সাড়ে ৭ শতাংশ। আর মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৬ শতাংশে আটকে রাখার লক্ষ্য নেয়া হয়েছে।
দেশকে করোনা মহামারিপূর্ব উন্নয়নের ধারায় ফিরিয়ে আনতে নতুন বাজেটে বেশ কিছু প্রস্তাব করেছেন মন্ত্রী। এর মধ্যে থাকছে বিনিয়োগ বাড়াতে পাচার হয়ে যাওয়া অর্থ দেশে আনার সুযোগ এবং করপোরেট করে ছাড়।
বাজেট প্রস্তাবে তিনি বলেন, ‘বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে আয়কর অধ্যাদেশে নতুন বিধান যুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। সে অনুযায়ী বিদেশে অবস্থিত কোনো সম্পদের ওপর কর পরিশোধ করা হলে আয়কর কর্তৃপক্ষসহ সরকারের কেউ এ বিষয়ে কোনো প্রশ্ন তুলবে না।’
বিদেশে অর্জিত স্থাবর সম্পত্তি দেশে না আনলে এর ওপর ১৫ শতাংশ, অস্থাবর সম্পত্তির ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ এবং নগদ অর্থের ওপর ৭ শতাংশ কর বসানোর সুপারিশ করেছেন অর্থমন্ত্রী।
বাজেট-উত্তর সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়ন হলে দেশের অর্থনীতি আগের তুলনায় অনেক শক্তিশালী হবে।’