বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পাচার টাকা দেশে আনার উদ্যোগ অনৈতিক: সিপিডি

  •    
  • ১০ জুন, ২০২২ ১২:০৯

সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘পাচার করা টাকা কর দিয়ে দেশে আনার যে সুযোগ দেয়া হয়েছে, এতে সৎ করদাতাদের নিরুৎসাহিত করা হয়। এটা অনৈতিক। এটা থেকে কোনো অর্থ আসবে না। কারণ যারা দেশের বাইরে টাকা পাচার করে, তারা দেশে ফিরে আসার জন্য টাকা পাচার করে না।’

প্রস্তাবিত বাজেটে পাচার করা টাকা দেশে আনার যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তা নৈতিকতা পরিপন্থি বলে মনে করে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি)।

বাজেট ঘোষণার পরের দিন শুক্রবার রাজধানীর লেক শোর হোটেলে জাতীয় বাজেট ২০২২-২৩ পর্যালোচনা তুলে ধরেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন।

তিনি বলেন, ‘পাচার করা টাকা কর দিয়ে দেশে আনার যে সুযোগ দেয়া হয়েছে, এতে সৎ করদাতাদের নিরুৎসাহিত করা হয়। এটা অনৈতিক। এটা থেকে কোনো অর্থ আসবে না। কারণ যারা দেশের বাইরে টাকা পাচার করে তারা দেশে ফিরে আসার জন্য টাকা পাচার করে না।’

অর্থমন্ত্রী বাজেটে ছয়টি চ্যালেঞ্জের কথা বলেছেন। সেগুলো হলো- মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনা এবং অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা; গ্যাস, বিদ্যুৎ ও সারের মূল্য বৃদ্ধির ভর্তুকির জন্য অর্থের সংস্থান করা; বৈদেশিক অর্থের ব্যবহার এবং প্রকল্পগুলো নির্ধারিত সময়ে শেষ করা; শিক্ষা-স্বাস্থ্য প্রকল্প যথাসময়ে বাস্তবায়ন করা; অভ্যন্তরীণ মূল্য সংযোজন কর আহরণের পরিমাণ বৃদ্ধি ও ব্যক্তি আয়করদাতা বৃদ্ধি করা; টাকার বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখা ও রির্জাভ সন্তোষজনক রাখা।

ফাহমিদা বলেন, ‘বাজেটে ৫.৬ শতাংশ মূল্যস্ফীতির হিসাব কীভাবে এলো, এটা কীভাবে কমবে তা বলা হয়নি। সারা বিশ্বে অর্থনীতির অস্থিরতা চলছে। সেখানে আমাদের মূল্যস্ফীতি কীভাবে কমে যাবে সে বিষয় নিয়ে বাজেটে সুস্পষ্ট নির্দেশনা নেই।

‘সামষ্টিক অর্থনীতিতে দেখা যায় রাজস্ব আদায়, বেসরকারি খাতে ঋণ, রপ্তানি ভালো অবস্থানে আছে। নেতিবাচক দিকে আছে কিছু সূচক। এর মধ্যে রিজার্ভ নিচের দিকে নামছে। ঋণখেলাপির পরিমাণ বেড়েছে। মুদ্রার অবনমন ঘটছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম নাগালের বাইরে চলে গেছে। কিন্তু জিডিপি প্রবৃদ্ধি বাজেটে বেশি ফোকাস করা হচ্ছে।’

বাজেটে ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্য বাড়বে বলা হয়েছে। কিন্তু এটা কীভাবে সম্ভব সেটা বোধগম্য নয় বলে মন্তব্য করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক।

বাজেট ঘাটতি বাস্তবসম্মত নয় বলে মত দেন তিনি। বলেন, ‘বাজেট ঘাটতি জিডিপির ৫.৫ শতাংশ ধরা হয়েছে। কিন্তু এটা বাস্তবসম্মত মনে হয়নি। ঘাটতি পূরণে বিদেশি নির্ভরতা বাড়ছে। সেটা কতটা ব্যবহার করতে পারব তা এখন দেখার বিষয়।’

রাজস্ব নিয়ে তিনি বলেন, ‘রাজস্ব বোর্ডকে এমন লক্ষ্য দেয়া হয় যা আদায় সম্ভব হয় না। রাজস্ব কীভাবে বাড়ানো যায় সেদিকে জোর দিতে হবে।’

বার্ষিক উন্নয়নে পাঁচটি খাতে অগ্রাধিকার

বার্ষিক উন্নয়নে পাঁচটি খাত অগ্রাধিকার পেয়েছে বলে জানান সিপিডির নির্বাহী পরিচালক।

২০২৩ সালে যেসব প্রকল্প শেষ হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে, সেটা ঠিক সময়ে শেষ হবে না বলে মনে করে সিপিডি।

সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘প্রকল্পের সংখ্যা অনেক বেশি। চলমান প্রকল্পে বরাদ্দ বেড়েছে। কিছু প্রকল্পে স্বল্প বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু সেসব প্রকল্প কোনো কাজে লাগে না।’

নিম্ন আয়ের মানুষের সুবিধা নেই

ব্যক্তি আয়ের ক্ষেত্রে করমুক্ত আয়ের সীমা তুলে দেয়ার প্রস্তাব করেছিল সিপিডি। কিন্তু সেটা অপরিবর্তিত রয়েছে বলে জানান ফাহমিদা খাতুন। বলেন, ‘এই সীমা বাড়ানো হলে সাধারণ মানুষকে কিছুটা স্বস্তি দেয়া যেত। বেতনের বাইরে বিভিন্ন সুবিধার কর বাড়িয়ে ১০ লাখ টাকা করা হয়েছে। এতে নিম্ন আয়ের মানুষকে কোনো সুবিধা দেয়া হয়নি।’

সিপিডির সুপারিশ

সিপিডি চারটি সুপারিশ করেছে।

  • নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের কর তুলে নেয়া
  • আমদানির ক্ষেত্রে ছোট ব্যবসায়ীদের কর সুবিধা
  • ভতুর্কিতে পর্যাপ্ত অর্থ রাখা
  • সামাজিক নিরাপত্তা খাত বাড়ানো

সিপিডির বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘বিদেশে পাচার করা টাকা কর দিয়ে দেশে আনার সুযোগ নৈতিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক- তিন দিক থেকেই অনৈতিক।’

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘টাকা বাইরে দুর্নীতি আর অবৈধভাবে নিয়ে গেছে। এটা নৈতিকভাবে যৌক্তিক নয়। কারণ বৈধভাবে টাকা বাইরে নেয়ার সুযোগ নেই।’

এর আগে টাকা সাদা করার যে সুযোগ দেয়া হয়েছিল সেটাতে খুব বেশি রাজস্ব বাড়েনি বলে জানান তিনি।

এই সুবিধার ফলে টাকা পাচার আরও বাড়বে বলে মনে করেন মোস্তাফিজুর রহমান। বলেন, ‘যারা টাকা পাচার করেন তারা ইঙ্গিত পেয়ে গেলেন যে বাইরে টাকা পাঠালেও দেশে নিয়ে আসা সম্ভব হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর