রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাকশিল্পে বর্তমানে দশমিক ৫ শতাংশ উৎসে কর ধার্য রয়েছে। আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে এটি বাড়িয়ে ১ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তবে খাতসংশ্লিষ্টরা চাচ্ছেন বিদ্যমান করহার আরও পাঁচ বছর বহাল রাখা হোক।
জাতীয় সংসদে বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী বাজেট উপস্থাপনের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় এমন অবস্থান তুলে ধরেছে তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ।
সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এস এম মান্নান কচি বাজেট প্রতিক্রিয়ায় বলেন, বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে দেশের রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাকশিল্পে এই বাড়তি কর বহন করাটা সংশ্লিষ্টদের পক্ষে দুরূহ হয়ে পড়বে।
‘শিল্প টিকে থাকলে রাজস্ব আসবে, নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হবে। বর্তমান উৎসে করহার আগামী পাঁচ বছর বহাল রাখলে শিল্পটি চলমান সংকটকালে কিছুটা স্বস্তিতে থাকবে। দেশের শিল্প ও কর্মসংস্থানের স্বার্থে বিষয়টি চূড়ান্ত বাজেটে বিবেচনার জন্য আমরা প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীর সুবিবেচনা প্রত্যাশা করি।’
বিজিএমইএর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বলেন, ‘টালমাটাল বিশ্ব পরিস্থিতি দেশের পোশাকশিল্পের জন্য ইতোমধ্যে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে একদিকে জ্বালনি তেলসহ খাদ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে, অন্যদিকে ইউরোপসহ বেশ কিছু দেশে অর্থনৈতিক মন্দার আশঙ্কা বাড়ছে। সেসব দেশে মূল্যস্ফীতি তীব্র আকার ধারণ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দেশগুলো সুদের হার বাড়াচ্ছে। এটি আন্তর্জাতিক বাজারে আমাদের পণ্যের চাহিদা ও ক্রয়ক্ষমতা কমিয়ে দেয়ার আশঙ্কা তৈরি করছে।’
এস এম মান্নান দাবি করেন, ‘এবারের বাজেটের মূল বিষয় হলো উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় পরিবর্তন এনে দেশকে আরও অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধিশালী করা। আর তা করতে হলে অর্থনীতিতে অবদান রাখা শিল্প, বিশেষ করে পোশাকশিল্পের প্রতি বিশেষ নজর দেয়াটা জরুরি।
‘গত বছর তৈরি পোশাক খাতের রপ্তানি ছিল ৩১ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার। এ বছর আমরা ৪১ বিলিয়ন ডলার আশা করছি। এভাবে রপ্তানি বাড়াতে পারলে করহার না বাড়িয়েও রাজস্ব বাড়ানো সম্ভব। এতে করে সামষ্টিক অর্থনীতি উপকৃত হবে।’
এদিকে নিজেদের স্বার্থ-সংশ্লিষ্টতার বাইরে প্রস্তাবিত বাজেটকে যুগান্তকারী বলে উল্লেখ করেছে বিজিএমইএ। বলা হয়েছে, বাজেটে করপোরেট করহার কমানোসহ অনেক ভালো পদক্ষেপ রয়েছে। এসব পদক্ষেপ অর্থনীতিকে গতিশীল করবে, ব্যবসায় সক্ষমতা বাড়াবে।