প্রস্তাবিত বাজেটে স্বল্প আয়ের ব্যবসায়ীদের জন্য থোকভিত্তিক করব্যবস্থা প্রবর্তন, আয় অনুসারে কয়েকটি শ্রেণিতে ভাগ করে পৃথক করকাঠামো গঠন এবং আয় অনুযায়ী কর ছাড়ের বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত থাকা প্রয়োজন বলে মনে করে রংপুর চেম্বার।
পাশাপাশি নতুন উদ্যোক্তাদের সহজ শর্তে ব্যাংক ঋণ সুবিধার ব্যবস্থা থাকলে তরুণ উদ্যোক্তারা ব্যবসা ও শিল্প স্থাপনে আগ্রহী হতো বলেও সংগঠনটি মনে করে।
বাজেট পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এই অনুরোধ করেন রংপুর চেম্বারের সভাপতি মোস্তফা সোহরাব চৌধুরী টিটু।
তিনি বলেন, ‘প্রস্তাবিত বাজেটে অপ্রয়োজনীয় ও বিলাসী পণ্য আমদানি নিরুৎসাহিত করতে নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক বৃদ্ধি করার পাশাপাশি মেড ইন বাংলাদেশ পণ্যে কর অব্যাহতি থাকায় অটোমোবাইল, থ্রি হুইলার, ফোর হুইলার, হোম অ্যাপ্লায়েন্স, ও হাল্কা প্রকৌশল শিল্পের বিকাশ ঘটবে বলে রংপুর চেম্বার মনে করে।
‘এ ছাড়া খেলাপি ঋণ কমাতে করারোপ, সমুদ্রগামী জাহাজের আয় করমুক্ত, সব রপ্তানি খাতে একই হারে কর, পাশাপাশি কর জাল বাড়াতেও টিআইএনের (করদাতা শনাক্তকরণ নম্বর) রিটার্ন জমা স্লিপ বাধ্যতামূলক করার মতো বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত থাকায় ব্যবসা-বাণিজ্যের গতি বহুগুণে ত্বরান্বিত হবে।’
টিটু বলেন, ‘প্রস্তাবিত বাজেটে ২০৪১ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) অর্জন, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার ব্যাপক পরিকল্পনা থাকলেও সারা দেশে প্রবৃদ্ধি এবং মাথাপিছু আয় বাড়লেও রংপুর বিভাগে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে দারিদ্র্য।
‘তাই এবারের প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া রংপুর অঞ্চলের দারিদ্র নিরসন ও ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে রংপুর বিভাগের জন্য পোশাক ও কৃষি ভিত্তিক শিল্প জোন গড়ে তোলার পাশাপাশি উন্নয়ন বৈষম্য দূরীকরণে রংপুর বিভাগের আট জেলার উন্নয়নে বিশেষ বরাদ্দ রাখার পাশাপাশি এ বিভাগের শিল্পায়নে আলাদা ঋণ, কর ও ভ্যাট নীতি প্রণয়ন উচিত ছিল। রংপুরে প্রস্তাবিত স্পেশাল ইকোনমিক জোন ও উত্তরাঞ্চলের উন্নয়নের স্বার্থে ‘নর্থ বেঙ্গল ডেভেলপমেন্ট মিনিস্ট্রি গঠনের মতো বিষয়গুলোও অর্ন্তভুক্ত থাকা উচিত ছিল।’
রংপুর চেম্বারের সভাপতি বলেন, ‘অত্যন্ত দুঃখজনক যে, বাজেটে অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া রংপুর বিভাগের ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্পায়নের জন্য তেমন কোনো সুযোগ-সুবিধা ও অর্থ বরাদ্দের প্রস্তাব না থাকায় রংপুর চেম্বার হতাশ।’
তাই রংপুর অঞ্চলের দারিদ্র্য নিরসন ও ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে রংপুর চেম্বারের প্রস্তাবগুলো সংশোধিত বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
টিটু বলেন, ‘বাজেটের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যসমূহ অর্জনের জন্য বেসরকারি বিনিয়োগে প্রাণ ফেরানো, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় রাখাসহ আঞ্চলিক বৈষম্য নিরসনে সরকারের বিভিন্ন পরিকল্পনা, পন্থা, অর্থের সুষম বণ্টন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতামূলক কর্মসূচি ও কৌশল এমনভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে যাতে সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং দারিদ্র বিমোচন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির ক্ষেত্রে ইতিবাচক সুফল বয়ে আনতে পারে রংপুর চেম্বার।’