করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে সৃষ্ট সংকটময় পরিস্থিতিতে খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতে নতুন বাজেটে কৃষি খাতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে বাজেট বক্তব্যে এই প্রস্তাব করেন।
২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে কৃষি মন্ত্রণালয়কে ২৪ হাজার ২২০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। আর খাদ্য মন্ত্রণালয়ের জন্য বরাদ্দ প্রস্তাব দেয়া হয়েছে ৫ হাজার ৬৭২ কোটি টাকা।
বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্ব অর্থনীতিতে ২০২০ সালের শুরু থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত কোভিড-১৯ মহামারির বিরূপ প্রভাব এবং রাশিয়া-ইউক্রেন সংকটে সৃষ্ট মূল্যস্ফীতি মোকাবিলাকে সর্বাপেক্ষা অগ্রাধিকার দিয়ে বাজেটে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ দেয়ার প্রস্তাব করা হচ্ছে।
‘খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কৃষি হচ্ছে আমাদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার খাত। বিগত কয়েক বছর ধরে কৃষি খাতে যে অগ্রগতি অব্যাহত রয়েছে তা আরও বেগবান করে অধিক খাদ্য উৎপাদনের লক্ষ্যে গবেষণা ও সম্প্রসারণ, কৃষি যান্ত্রিকীকরণ, সেচ ও বীজে প্রণোদনা, কৃষি পুনর্বাসন এবং সারে ভর্তুকি প্রদান চলমান থাকবে।’
এ বছরের মতো আগামী বছরেও ভর্তুকি ব্যবস্থাপনায় চাপ পড়তে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। এটি বাজেট ব্যবস্থাপনায় চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
অর্থমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, ‘সামগ্রিক পরিস্থিতিতে সরকারের ভর্তুকি ব্যবস্থাপনার ওপরও চাপ সৃষ্টি হয়েছে। ২০২১-২০২২ অর্থবছরের বাজেটে সরকারের ভর্তুকি ও প্রণোদনা বাবদ ব্যয়ের প্রাক্কলন ছিল ৫৩ হাজার ৮৫২ কোটি টাকা। কিন্তু আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জ্বালানি ও সারের মূল্য বৃদ্ধির কারণে জ্বালানি তেল, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও সারে ভর্তুকি বাবদ সরকারের ব্যয় বাড়ছে।
‘তাই ২০২১-২০২২ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে ভর্তুকি ও প্রণোদনা বাবদ ব্যয়ের প্রাক্কলন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৬ হাজার ৮২৫ কোটি টাকা, যা জিডিপির ১ দশমিক ৭০ শতাংশ। ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের বাজেটের প্রাথমিক প্রাক্কলনে এ বাবদ ব্যয় আরও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮২ হাজার ৭৪৫ কোটি টাকা, যা জিডিপির ১ দশমিক ৯০ শতাংশ।
‘আন্তর্জাতিক বাজারে তেল, গ্যাস ও সারের মূল্যের সাম্প্রতিক যে গতিপ্রকৃতি তাতে ভর্তুকি ব্যয় আরও ১৫ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। আর তা আগামী অর্থবছরের বাজেট ব্যবস্থাপনায় একটি চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করতে পারে।’