বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

অর্থনীতি চাঙা করতে বিপুল ভর্তুকি

  •    
  • ৯ জুন, ২০২২ ১৮:৩১

বাজেটে ভর্তুকি, প্রণোদনা এবং নগদ ঋণ খাতে মোট ৮২ হাজার ৭৪৫ কোটি টাকা খরচ করার কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে ভর্তুকি হিসেবে ব্যয় করা হবে ৪২ হাজার ৪৫ কোটি টাকা, প্রণোদনা হিসেবে ৩০ হাজার ৭০০ কোটি এবং নগদ ঋণ হিসেবে ১০ হাজার কোটি টাকা।

ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ পরিস্থিতিতে গোটা বিশ্ব এখন অর্থনৈতিক সংকটের মুখে। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিতে সেই সংকট কাটিয়ে নতুন উদ্দীপনা আনতে কৌশল হিসেবে বেছে নিয়েছেন ভর্তুকি, প্রণোদনা এবং নগদ ঋণ খাতে ব্যয় বাড়ানোর উদ্যোগকে। তার লক্ষ্য এর মাধ্যমে চলমান অর্থনীতি, উদ্যোক্তা-ব্যবসায়ী তথা ক্রেতা-ভোক্তার সক্ষমতার উন্নয়ন।

অর্থমন্ত্রীর প্রস্তাবিত বাজেটে ভর্তুকি, প্রণোদনা এবং নগদ ঋণ খাতে মোট ৮২ হাজার ৭৪৫ কোটি টাকা খরচ করার কথা বলা হয়েছে। এই খরচ মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ১ দশমিক ৯০ শতাংশ। এর মধ্যে ভর্তুকি হিসেবে ব্যয় করা হবে ৪২ হাজার ৪৫ কোটি টাকা, প্রণোদনা হিসেবে ৩০ হাজার ৭০০ কোটি এবং নগদ ঋণ হিসেবে ১০ হাজার কোটি টাকা।

বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তৃতায় দাবি করেছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে তেল, গ্যাস ও সারের মূল্যের সাম্প্রতিক যে গতি-প্রকৃতি, তাতে ভর্তুকি ব্যয় ১৫-২০ শতাংশ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, যা বাজেট বাস্তবায়নে একটি বিরাট চ্যালেঞ্জ হতে পারে।

চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে ভর্তুকি, প্রণোদনা এবং নগদ ঋণ খাতে বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছিল মোট ৫৩ হাজার ৮৫২ কোটি টাকা, যা মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) হিসাবের ১ দশমিক ৫৬ শতাংশ।

তবে বাজেট পেশের কয়েক মাসের মধ্যেই দেশে বৈশ্বিক অস্থিরতার নেতিবাচক প্রভাব ঠেকাতে সেই বরাদ্দ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় অর্থ মন্ত্রণালয়।

ফলে সংশোধিত বাজেটে ভর্তুকি, প্রণোদনা এবং নগদ ঋণ খাতে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৬৬ হাজার ৮২৫ কোটি টাকা। বরাদ্দ বিবেচনায় এই অর্থ জিডিপির ১ দশমিক ৭০ শতাংশ।

এ হিসাবে নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত ভর্তুকি, প্রণোদনা এবং নগদ ঋণ খাতে ব্যয় ২০২১-২২ অর্থবছর থেকে ২৮ হাজার ৮৯৩ কোটি টাকা এবং সংশোধিত বাজেট থেকে ১৫ হাজার ৯২০ কোটি টাকা বেশি।

বাজেট প্রণয়নে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বৈশ্বিক সংকটের কারণে সরকার চায় অভ্যন্তরীণ কৃষি ও শিল্পের উৎপাদন বাড়িয়ে চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহের সক্ষমতা বাড়াতে, বিশ্ববাজারে রপ্তানিমুখী শিল্পের টিকে থাকার পরিবেশ নিশ্চিত করতে, দ্রব্যমূল্য ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রেখে মূল্যস্ফীতিকে বাজেটের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ৫ দশমিক ৫ শতাংশের মধ্যে সহনীয় রাখতে।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল আশা করছেন, ভর্তুকি, প্রণোদনা এবং নগদ ঋণ বৃদ্ধির ইতিবাচক প্রভাব বৈশ্বিক ঝুঁকি থেকে অর্থনীতিতে নতুন করে উদ্দীপনা জোগাবে। এটা একদিকে দেশের অর্থনীতির স্থিতিশীলতা রক্ষায় যেমন কাজ করবে, তেমনি উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করে জনগণকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির চাপ থেকেও স্বস্তি দেয়া সম্ভব হবে।

বাজেটে ভর্তুকি বাড়িয়েও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ কথা বলা হয়েছে। পণ্যমূল্য সহনীয় রাখতে এবং উৎপাদন খরচ কমাতে বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১৮ হাজার কোটি টাকা। বিদায়ী অর্থবছরের জন্য এ খাতে বরাদ্দ ছিল ৯ হাজার কোটি টাকা। এর পাশাপাশি এবার স্বল্প আয়ের মানুষের খাদ্যনিরাপত্তায় ভর্তুকি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে আরও ৬ হাজার ৭৪৫ কোটি টাকা। এ ছাড়া টিসিবির মাধ্যমে বছরজুড়ে ফ্যামিলি কার্ডের আওতায় সারা দেশে এক কোটি পরিবার তথা পাঁচ কোটি মানুষকে সরবরাহ করা হবে সুলভ মূল্যের পণ্য। অন্যান্য খাতেও ১৭ হাজার ৩০০ কোটি টাকা ভর্তুকি প্রদানের মাধ্যমে সরকার মূল্যস্ফীতিকে নিয়ন্ত্রণ করতে চায়।

অন্যদিকে খাদ্যের জোগান বাড়াতে অভ্যন্তরীণ কৃষি ও শিল্পের বিনিয়োগ বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ জন্য বাজেটে কৃষকদের উৎসাহিত করতে কৃষি খাতে এবার দেশে রেকর্ড ১৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে কৃষির যান্ত্রিকীকরণ, সেচ ও বীজে প্রণোদনা, কৃষি পুনর্বাসন ও সারে ভর্তুকিতে এ টাকা খরচ করা হবে।

এর পাশাপাশি বাজেটের আওতায় নগদ ঋণ দেয়া হবে আরও ১০ হাজার কোটি টাকা। রপ্তানিমুখী শিল্পের উৎপাদন বাড়িয়ে রপ্তানি আয়ের মাধ্যমে এবং প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের মাধ্যমে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার চাকাও গতিশীল রাখার লক্ষ্য সরকারের। এর জন্য রপ্তানিমুখী শিল্পের জন্য নগদ প্রণোদনা খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৮ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। পাটজাত দ্রব্যাদি রপ্তানিতে প্রণোদনা রাখা হয়েছে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা।

এ বিভাগের আরো খবর