এবারের বাজেটে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বিভিন্ন পণ্যের ওপর শুল্ক-কর বাড়ানোর প্রস্তাব করেছেন। বাড়তি কর প্রস্তাব কার্যকর হলে ওই সব পণ্যের দাম বাড়তে পারে। যে সব পণ্যের দাম বেড়ে যেতে পারে:
সিগারেট: নিম্নস্তর ও মধ্যস্তর মানের সিগারেটের সম্পূরক শুল্ক গড়ে ৬৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে বাড়তি শুল্ক হার কার্যকর হলে বাজারে সিগারেটের দাম বেড়ে যাবে।
আমদানিকরা মোটরসাইকেল: ২৫০ সিসির বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন মোটর সাইকেল আমদানিতে ফোর স্ট্রোকের ক্ষেত্রে ১০০ শতাংশ এবং টু স্ট্রোকের ক্ষেত্রে ২৫০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে।
রেলওয়ে সেবা: যারা প্রথম শ্রেণির টিকিটে রেলওয়েতে যাতায়াত করতে চান তাদের খরচ বাড়বে। কারণ, প্রস্তাবিত বাজেটে এই প্রথমবারের মতো প্রথম শ্রেণির টিকিটের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করার কথা বলা হয়েছে। টিকিটের যা দাম তার সঙ্গে এই ভ্যাট যুক্ত করা হবে। ফলে টিকিটের পেছনে দাম বেশি পড়বে।
মেডিটেশন সেবা: এতদিন মেডিটেশন সেবার ওপর কোনো ভ্যাট ছিল না। এবার এই সেবাকে ভ্যাটের আওতায় আনার প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে যারা মেডিটেশন সেবা গ্রহণ করবেন, তাদের খরচ বাড়বে।
সোলার প্যানেল: বর্তমানে সোলার প্যানেল আমদানিতে শূন্য শতাংশ আমদানি শুল্ক প্রযোজ্য রয়েছে। দেশীয় সোলার সেক্টরের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আমদানি করা সোলার প্যানেলের ওপর বিদ্যমান আমদানি শুল্ক শূন্য শতাংশ থেকে বৃদ্ধি করে ১ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। বাড়তি শুল্কহার কার্যকর হলে সোলার প্যানেলের দাম বাড়বে।
বিলাসবহুল গাড়ি: ৪ হাজার সিসির ওপরে বিলাসবহুল গাড়িতে সম্পূরক শুল্ক, নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক ও আগাম কর আরোপ করায় ওই সব গাড়ির আমদানি খরচ বাড়বে। এর ফলে এ ধরনের গাড়ি আমদানিতে মোট করভার ৫০০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৮০০ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
রেফ্রিজারেটর: ফ্রিজের স্থানীয় উৎপাদন পর্যায়ে মূল্য সংযোজন কর ৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী। নতুন কর হার কার্যকর করা হলে বাজারে ফ্রিজের দাম বাড়তে পারে।
বাটার ও চিজ: বাটার ও চিজ আমদানিতে ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে ওই সব খাদ্যপণ্যের দাম বাড়তে পারে।
ফোনের বিদেশি চার্জার: দেশে উৎপাদিত মুঠোফোন উৎপাদনকারী শিল্প প্রতিষ্ঠানকে আরও বিকশিত করার লক্ষ্যে বিদেশি চার্জারের আমদানি শুল্ক ১৫ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি করে ২৫ শতাংশ করা হয়েছে।
গ্যাস লাইটার: বর্তমানে দেশে গ্যাস লাইটার বা দেশলাই উৎপাদিত হচ্ছে। তাই দেশীয় শিল্পের সুরক্ষার জন্য পণ্যটি আমদানির ক্ষেত্রে সম্পূরক শুল্ক ১০ শতাংশ আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে।এ ছাড়া লাইটারের যন্ত্রাংশের আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ হতে বৃদ্ধি করে ২৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে করে বাজারে গ্যাস লাইটারের দাম বাড়বে।
ওয়াটার পিউরিফায়ার: পানি বিশুদ্ধকরণের জন্য ব্যবহৃত ওয়াটার পিউরিফায়ারের আমদানি শুল্ক ১ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে।
ক্যাশ রেজিস্ট্রার: ক্যাশ রেজিস্ট্রারের ক্ষেত্রে আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ নির্ধারণ করার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী, যা আগে ছিল শূন্য শতাংশ। বাড়তি শুল্কহার কার্যকর হলে এই পণ্যটির দাম বেড়ে যাবে।
বিদেশি পাখি: বর্তমানে দেশে সৌখিন পাখি আমদানি হচ্ছে। এ পণ্যের ওপর ৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক প্রযোজ্য রয়েছে। পাখিগুলো বিলাসবহুল হওয়ায় আমদানি শুল্ক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
এ ছাড়া আমদানিকরা বিলাসী পণ্য যেমন বডি স্প্রে, প্রসাধনী পণ্য, জুস ও প্যাকেটজাত খাদ্য আমদানিতে নতুন করে শুল্ক আরোপ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে বাজারে এ সব পণ্যের দাম বেড়ে যেতে পারে।