বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বাজেটের দিনে লেনদেনে ভাটা, দুর্বল শেয়ারের আধিপত্য

  •    
  • ৯ জুন, ২০২২ ১৫:৪৯

বৃহস্পতিবারের লেনদেনের বিষয়ে মিয়া আব্দুর রশিদ সিকিউরিটিজের শীর্ষ কর্মকর্তা শেখ ওহিদুজ্জামান স্বাধীন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আজকে লেনদেন ও সূচক কমেছে। কারণ অনেকেই বাই অর্ডার হোল্ড করে রেখেছে। যেহেতু বাজেট ঘোষণা হচ্ছে আজকে, তাই বাজেটে কী আসছে, পুঁজিবাজারের জন্য কী রয়েছে, এসব জেনে বিনিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নেবেন অনেকে।’

বাজেট ঘোষণার দিন পুঁজিবাজারে কমল লেনদেন। কিছুটা কমল সূচকও। আর প্রবণতা হিসেবে স্বল্প মূলধনি ও দুর্বল কোম্পানির দর বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করা যায়।

বেশির ভাগ সিকিউরিটিজের মূল্যহ্রাস সূচক পতনে দায়ী হলেও যতগুলো কোম্পানির দর বেড়েছে, সেগুলোর বেশির ভাগই ছিল লোকসানি বা খুবই কম লভ্যাংশ ঘোষণা করে এসব কোম্পানি।

দিনভর লেনদেন হওয়া সিকিউরিটিজের মধ্যে ১৩৭টি কোম্পানির দর বেড়েছে। এর চেয়ে ৫৯টি বেশি অর্থাৎ ১৯৬টি কোম্পানির দর পতন হয়েছে। এর মধ্যে শতাধিক কোম্পানির দর পতন হয়েছে দিনের সর্বোচ্চ সীমা ও এর আশপাশেই। আর গতকালের দরে লেনদেন হয়েছে ৪৭টি কোম্পানির শেয়ার।

লেনদেনের শুরুর প্রথম আধা ঘণ্টা ঊর্ধ্বমুখী ছিল সূচক। ৪৮ পয়েন্ট বেড়ে লেনদেন হচ্ছিল তখন। তবে পরের এক ঘণ্টাতেই দর পতনে ২২ পয়েন্ট পড়ে যায়। এরপর ঘণ্টা দেড়েকে দর বৃদ্ধিতে সূচক বেড়ে লেনদেন হলেও শেষ পর্যন্ত আগের দিনের চেয়ে ৩ পয়েন্ট কমে লেনদেন শেষ হয়।

সূচকের সঙ্গে এক দিন পরেই লেনদেন আবার চলে এলো ৮০০ কোটির নিচে। আগের দিনই ছিল ৯০০ কোটির ওপর। হাতবদল হয়েছে ৭৫৮ কোটি ২৬ লাখ ৬২ হাজার টাকা। এর চেয়ে কম লেনদেন হয়েছিল মঙ্গলবার ৭৩৯ কোটি ৮১ লাখ ৩৮ হাজার টাকা।

আগের দিন চাঙা থাকা বস্ত্র ও মিউচুয়াল ফান্ড খাতে খুব বেশি ভালো দিন যায়নি। এর মধ্যে বস্ত্র খাতে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক ২৮টি কোম্পানির দর বেড়েছে, যা মোট কোম্পানির ৪৭ শতাংশ। অন্যদিকে মিউচুয়াল খাতে দর বৃদ্ধি পেয়েছে ১১ শতাংশ কোম্পানির।

বাজেট ঘোষণার দিন বৃহস্পতিবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেনের চিত্র

খাত হিসেবে কিছুটা ভালো অবস্থানে ছিল প্রকৌশল, ব্যাংক ও খাদ্য খাত। এর মধ্যে প্রকৌশল খাতে ৫২ শতাংশ, ব্যাংক ৫১ এবং খাদ্য খাতে ৫৭ শতাংশ কোম্পানির দর বৃদ্ধি হয়।

বৃহস্পতিবারের লেনদেনের বিষয়ে মিয়া আব্দুর রশিদ সিকিউরিটিজের শীর্ষ কর্মকর্তা শেখ ওহিদুজ্জামান স্বাধীন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আজকে লেনদেন ও সূচক কমেছে। কারণ অনেকেই বাই অর্ডার হোল্ড করে রেখেছে। যেহেতু বাজেট ঘোষণা হচ্ছে আজকে, তাই বাজেটে কী আসছে, পুঁজিবাজারের জন্য কী রয়েছে, এসব জেনে বিনিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নেবেন অনেকে।’

সূচক কমাল যারা

সূচক সবচেয়ে সূচকের পতন নামিয়েছে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো। কোম্পানিটি একাই সূচক ফেলেছে ১৩.৫৮ পয়েন্ট। এদিন কোম্পানিটির দর ১.০৩৬ শতাংশ কমার ফলে এই পরিমাণ সূচক কমেছে।

এরপরেই ন্যাশনাল ক্রেডিট অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের ফলে সূচক কমেছে ৩.৯৭ পয়েন্ট। ব্যাংকটির দর কমেছে ৫.৭৩ শতাংশ।

আল আরাফাহ ব্যাংকের দর ১.৮৮ শতাংশ কমার কারণে সূচক কমেছে ২.৩১ পয়েন্ট।

বিকন ফার্মার ০.৭৮ শতাংশ দর পতনে ২.২ পয়েন্ট এবং বার্জার পেইন্টসের ০.৫৭ শতাংশ দর কমায় সূচক কমেছে ২.০৩ পয়েন্ট।

এছাড়া বেক্সিমকো ফার্মার দর পতনে ১.৭৪ পয়েন্ট, বিএসআরএম স্টিলের কারণে ১.৩ পয়েন্ট, রূপালী ব্যাংকের কারণে ১.১৯ পয়েন্ট, জিপিএইচ ইস্পাতের কারণে ০.৯৫ পয়েন্ট এবং সিটি ব্যাংকের কারণে ০.৯৩ পয়েন্ট সূচক কমেছে।

সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক ফেলেছে ৩০.২ পয়েন্ট।

দর বৃদ্ধির সর্বোচ্চ সীমায় যেসব কোম্পানি ছিল, তার মধ্যে সিংহভাগই দুর্বল ও স্বল্প মূলধনি কোম্পানি

সূচক বাড়ানোর চেষ্টায় যারা

সূচক বাড়াতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে গ্রামীণফোন। এদিন কোম্পানিটির দর বেড়েছে ০.৩৩ শতাংশ, যার কারণে সূচক বেড়েছে ৫.৮৫ পয়েন্ট।

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩.১ পয়েন্ট যোগ হয়েছে ফরচুন শুজের দর বৃদ্ধির কারণে। কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়েছে ৪.২৬ শতাংশ।

বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলসের দর ১.৮১ শতাংশ বাড়ার ফলে সূচক বেড়েছে ২.৭৯ পয়েন্ট।

ওয়ালটন হাইটেকের দর০.১৯ শতাংশ বাড়ার কারণে সূচক বৃদ্ধি পেয়েছে ২.৭৬ পয়েন্ট। আর রবির ০.৩৪ শতাংশ দর বৃদ্ধিতে সূচক বেড়েছে ২.২৭ পয়েন্ট।

ব্র্যাক ব্যাংক ও বেক্সিমকো সুকুক বন্ড ১.৯৫ পয়েন্ট করে সূচক বাড়িয়েছে।

এছাড়া সোনালী পেপার ১.৯৪ পয়েন্ট। ইউনিলিভার ১.৭৩ পয়েন্ট এবং ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স ১.৬৯ পয়েন্ট সূচক বাড়িয়েছে।

সব মিলিয়ে এই ১০ কোম্পানি সূচক বাড়িয়েছে ২৬.০৩ পয়েন্ট।

দর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০

অপেক্ষাকৃত দুর্বল ভিত্তির কোম্পানিগুলো শীর্ষ দশে জায়গা করে নিয়েছে। এসব কোম্পানি বিনিয়োগকারীদের নিয়মিত লভ্যাংশ প্রদান করে না। কোনোটি লভ্যাংশ দিলে খুবই নগন্য। শীর্ষ দশের একটির দর বেড়েছে ১০ শতাংশ, তিনটির ৬ শতাংশের বেশি, একটির ৫ শতাংশের বেশি, দুটির ৪ শতাংশের বেশি এবং তিনটি কোম্পানির দর বেড়েছে ৩ শতাংশের বেশি।

সবচেয়ে বেশি ১০ শতাংশ দর বেড়েছে দুলামিয়া কটনের, যে কোম্পানিটি লোকসানের কারণে লভ্যাংশ দিতে পারছে না এক যুগ হয়ে গেল। একই হারে দর বেড়েছে দর বেড়েছে মেঘনা ইন্স্যুরেন্সের। নতুন তালিকাভুক্ত কোম্পানিটি গতকাল ১১ টাকা লেনদেন হয়েছিল। আজকে ১২ টাকা ১০ পয়সায় হাতবদল হয়েছে প্রতিটি শেয়ার।

তৃতীয় অবস্থানে থাকা ইমাম বাটনের দর বেড়েছে ৯.৫৭ শতাংশ। এই কোম্পানিটিও লোকসানের কারণে লভ্যাংশ দিতে পারে না। কিন্তু গত কয়েক মাসে শেয়ারদর বেড়ে তিন গুণের বেশি হয়ে গেছে।

চতুর্থ অবস্থানে থাকা মাইডাস ফাইন্যান্সের দর বেড়েছে ৬.৯৯ শতাংশ। প্রতিটি শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৫ টাকা ৩০ পয়সায়। আগের দিনে এটি লেনদেন হয় ১৪ টাকা ৩০ পয়সায়।

এই কোম্পানিটি বিপুল পরিমাণ লোকসান থেকে বের হয়ে দুই শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। তবে চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে শেয়ার প্রতি ১ টাকা ২১ পয়সা লোকসান দিয়েছে।

চতুর্থ অবস্থানে থাকা এস আলম স্টিলসের দর ৬.২৫ শতাংশ বেড়ে ৩০ টাকা ৪০ পয়সা থেকে ৩২ টাকা ৩০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে।

বেক্সিমকো গ্রুপের শাইনপুকুর সিরামিকসের দর ৬.২০ শতাংশ বেড়ে ৪১ টাকা ১০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে প্রতিটি শেয়ার। এই কোম্পানিটির ল্যভাংশের ইতিহাস ভালো নয়। তার পরেও প্রায়ই কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়ে যায়।

স্বল্প মূলধনি ও আয়ের ধারাবাহিকতা না থাকা জেমিনি সি ফুডের দর বেড়েছে ৫.৪১ শতাংশ। হাতবদল হয়েছে ৩৭৩ টাকা ২০ পয়সায়। গতকাল এটি ছিল ৩৫২ টাকা ৭০ পয়সা।

৪ শতাংশের বেশি দর বেড়েছে দুর্বল কোম্পানি কে অ্যান্ড কিউয়ের। হাতবদল হয়েছে ২৫১ টাকা ১০ পয়সায়। ফরচুন শুজ ১০৭ টাকা ৮ পয়সায় লেনদেন হয়েছে।

আর ৩ শতাংশের বেশি দর বেড়ে ন্যাশনাল ফিড মিল ৫৬ টাকা ৫০ পয়সা, সিনোবাংলা ইন্ডাস্ট্রিজ ৫৬ টাকা ৫০ পয়সা এবং সোনালী পেপার ৫৫২ টাকা ৭০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দুটি স্বল্প মূলধনি কোম্পানি।

দর পতনের শীর্ষ ১০

দুই আগেও ঊর্ধ্বমুখী বিমা খাতে ব্যাপক পতন দেখা গেছে আজ। দর পতনের শীর্ষ ১০টির ৮টিই বিমা খাতের কোম্পানি। বাকি দুটি ব্যাংক খাতের।

সবচেয়ে বেশি দর ৭.৪৩ শতাংশ কমেছে ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্সের। কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের জন্য ৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এদিন কোনো প্রাইস লিমিট না থাকায় ওই পরিমাণ দর কমে শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩৮ টাকা ৬০ পয়সায়।

এরপরেই ৫.৭৩ শতাংশ দর কমেছে এনসিসি ব্যাংকের। বিনিয়োগকারীদের জন্য ১২ শতাংশ নগদ ও ৪ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণার পর রেকর্ড ডেট শেষে বৃহস্পতিবার লেনদেন শুরু হয়। ফলে দর সমন্বয়ের পরে ১৪ টাকা ৮০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে প্রতিটি শেয়ার। আগের দিন এটি ছিল ১৫ টাকা ৭০ পয়সা।

এরপরেই ২.৫৪ শতাংশ দর কমেছে প্রাইম ইন্স্যুরেন্সের। ৯০ টাকা ৫০ পয়সা থেকে কমে প্রতিটি শেয়ার হাতবদল হয়েছে ৮৮ টাকা ২০ পয়সায়।

জনতা ইন্স্যুরেন্স, কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্স, রূপালী ব্যাংক, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স, রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স, সেনাকল্যাণ ইন্স্যুরেন্স এবং পিপলস ইন্স্যুরেন্স ছিল দরপতনের সর্বোচ্চ তালিকায়।

এ বিভাগের আরো খবর