বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

দর সংশোধনে ফের চাঙা সাধারণ বিমা

  •    
  • ৭ জুন, ২০২২ ১৫:৩৯

রেমন্ড ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড সিকিউরিটিজ লিমিটেডের উপদেষ্টা ও প্রিমিয়ার ব্যাংক সিকিউরিটিজের সাবেক প্রধান নির্বাহী সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘বাজার গত কয়েক দিনে বেশ কিছুটা বেড়েছে। এটা স্বাভাবিক সংশোধন চলছে, কিছু প্রফিট টেকিং হচ্ছে। সাত দিনে যতখানি উঠেছে তাতে ৪০-৫০ পয়েন্ট পড়ে যাওয়া কোনো বিষয় না।’

টানা সাত কর্মদিবস উত্থানের পরে টানা দুই দিন সংশোধনের মধ্যে দিয়ে গেল দেশের পুঁজিবাজার। এই দুই দিনেই বাজিমাত করেছেন বিমা খাতের বিনিয়োগকারীরা।

গতকাল সাধারণ বিমা খাতে সবগুলো কোম্পানির শেয়ারদর বাড়ে এবং সবচেয়ে বেশি দর বৃদ্ধি পাওয়া ২০টি কোম্পানির মধ্যে ১৯টিই ছিল এই খাতের। আজকেও সেই ধারাতেই ছিল খাতটি। মাত্র একটি কোম্পানির দরপতন ও একটির অপরিবর্তিত থাকা ছাড়া দর বেড়েছে সবগুলোর। আর দরবৃদ্ধির শীর্ষ বিশে জায়গা করে নিয়েছে ১৪টি বিমা কোম্পানি।

সাধারণ বিমার এমন উত্থানের মধ্যে পরপর দুই দিনই কিছুটা অনড় রইল জীবন বিমা। আগের দিনের চেয়ে একটি বেশি অর্থাৎ আটটি কোম্পানির দর বেড়েছে। একটির অপরিবর্তিত থাকার বিপরীতে কমেছে চারটির দর।

সংশোধনের বাজারে মিউচ্যুয়াল ফান্ডেও ভালো দিন গেছে বলা যায়। বেশিসংখ্যক কোম্পানির দর না বাড়লেও দর ধরে রাখতে পেরেছে বেশ কিছু কোম্পানি। ফলে পতনের সংখ্যাটা কমেছে। ১২টির দর বৃদ্ধি ও ১৪টির অপরিবর্তিত থাকার বিপরীতে দর কমেছে ৯টি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের। আর কোনো খাতে দর বৃদ্ধি দেখা যায়নি।

ফলে দিন শেষে যতগুলো সিকিউরিটিজের দর বেড়েছে, কমেছে তার দ্বিগুণ। ২২৮টি কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে, যেখানে দাম বেড়েছে মাত্র ১১৪টির। আর ৩৮টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে গতকালের দামেই।

বিপুলসংখ্যক শেয়ারের দরপতনের কারণে সূচক কমেছে ২০ পয়েন্ট। আগের দিনে কমেছিল ৮ পয়েন্ট। ফলে সাত দিনে ৩০৯ পয়েন্ট বাড়ার পরে সূচক কমল ২৮ পয়েন্ট।

দরপতনের সীমা ২ শতাংশ নির্ধারণ না করা হলে হয়তো পতনটা আরও বেশি হতো। কারণ প্রায় দেড় শতাধিক কোম্পানির শেয়ারের লেনদেন হয়েছে পতনের সর্বোচ্চ সীমা ও এর আশপাশের দামে।

দিনভর সূচকের ব্যাপক উত্থান-পতন ছিল। লেনদেন শুরুর আধা ঘণ্টার মধ্যেই আগের দিনের চেয়ে প্রায় ১১ পয়েন্ট বেড়ে সূচক সাড়ে ৬ হাজার পয়েন্টে অবস্থান করে। তবে ঢালাও দরপতনে সেটা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। বেলা ১১টা ২ মিনিটে সেখান থেকে ৪৩ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৪৫৭ পয়েন্টে অবস্থান করে সূচক। এরপর দুপুর ১টা বাজার কিছুক্ষণ আগে ৩৬ পয়েন্ট বেড়ে যায়। কিন্তু সেখান থেকে পতনের পর আর উঠে দাঁড়াতে পারেনি ডিএসইএক্স।

মঙ্গলবার সূচকের পাশাপাশি লেনদেনও অনেকটাই কমেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে

সূচকের সঙ্গে কমেছে লেনদেন। ডিএসইতে হাতবদল হয়েছে ৭৩৯ কোটি ৮১ লাখ ৩৮ হাজার টাকার, যা গত পাঁচ দিনের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে এর চেয়ে কম লেনদেন হয়েছিল ৩১ মে। সেদিন হাতবদল হয়েছে ৬৩৭ কোটি ৮৭ লাখ ৬৮ হাজার টাকার।

রেমন্ড ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড সিকিউরিটিজ লিমিটেডের উপদেষ্টা ও প্রিমিয়ার ব্যাংক সিকিউরিটিজের সাবেক প্রধান নির্বাহী সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘বাজার গত কয়েক দিনে বেশ কিছুটা বেড়েছে। এটা স্বাভাবিক সংশোধন চলছে, কিছু প্রফিট টেকিং হচ্ছে। সাত দিনে যতখানি উঠেছে তাতে ৪০-৫০ পয়েন্ট পড়ে যাওয়া কোনো বিষয় না।’

বিমা খাতের চাঙাভাবের কারণ কী জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বাজারে যে মানি ছিল তার ৬০ শতাংশ বিমাতে আছে। বিমাতে আগামীতে আরও টাকা ঢুকবে। বিমা খাতে আগ্রহের কারণ হচ্ছে এর পেইড আপ কম। তারা নিয়মিত ডিভিডেন্ড দেয় এবং প্রত্যেকটা শেয়ার এ গ্রুপের। যার কারণে বিমার শেয়ারের প্রতি মানুষের আগ্রহ বেশি।’

দর বৃদ্ধির শীর্ষে আবার বিমা

সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে এমন ১০টি কোম্পানির মধ্যে ৮টিই বিমা খাতের। এর মধ্যে তিনটির দর বেড়েছে ৯ শতাংশের ওপরে। একটির ৭ শতাংশ এবং একটির ৬ শতাংশের ওপরে দর বেড়েছে। বাকি ৫টির দর বেড়েছে ৫ শতাংশের বেশি।

পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্স ৮৫ টাকা ৮০ পয়সা থেকে ৯৪ টাকা ৩০ পয়সা, প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স ৫৭ টাকা থেকে ৬২ টাকা ৫০ পয়সা ও প্রভাতী ইন্স্যুরেন্স ৭৫ টাকা ৮০ পয়সা থেকে ৮৩ টাকায় লেনদেন হয়েছে।

গত সেপ্টেম্বর থেকে সবচেয়ে বেশি দর হারানো বিমা খাতেই দুই দিন ধরে দাম বাড়ছে সবচেয়ে বেশি

সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের দর ৭.১২ শতাংশ বেড়ে ৩৪ টাকা ৬০ পয়সায়, রেনউইক যজ্ঞেশ্বরের ৬.২৪ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ৯০ টাকা ৩০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে।

এ ছাড়া পাঁচ শতাংশের বেশি দর বেড়ে প্রগতি ইন্স্যুরেন্স ৭৩ টাকা ৫০ পয়সায়, সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স ৬৫ টাকায়, গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্স ৪৪ টাকা ৮০ পয়সায়, রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স ৭১ টাকা ৮০ পয়সায় লেনদেন শেষ করেছে। রূপালী ব্যাংকের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৯ টাকায়।

দরপতনের শীর্ষ ১০

সবচেয়ে বেশি দর হারানো কোম্পানির ১০টিই দিনের সর্বোচ্চ সীমা ২ শতাংশ বা এর আশপাশে দর হারিয়েছে।

জেমিনি সি ফুডের দর কমে লেনদেন হয়েছে ৩৫৩ টাকা ৪০ পয়সায়। আগের দিনে এটি লেনদেন হয় ৩৬০ টাকা ৬০ পয়সায়।

এর পরেই লিনডে বিডি ১ হাজার ৫১৩ টাকা ৩০ পয়সা থেকে কমে ১ হাজার ৪৮৩ টাকা ১০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে।

স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক লেনদেন হয়েছে ১৪২ টাকা ৫০ পয়সায়। আগের দিনে এটির ক্লোজিং প্রাইস ছিল ১৪৫ টাকা ৪০ পয়সা।

এ ছাড়া ২ শতাংশের কাছাকাছি দর কমে রহিমা ফুড ২৯০ টাকা ২০ পয়সা, অ্যাপেক্স ট্যানারি ১৬৭ টাকা ৭০ পয়সা, কপারটেক ৩৯ টাকা ৬০ পয়সা, মুনোস্পুল ১৯৩ টাকা ২০ পয়সা, আইপিডিসি ৫৪ টাকা ৫০ পয়সা, মেঘনা পেট ২৯ টাকা ৮০ পয়সা ও বিডি ওয়েলডিং ১৯ টাকা ৯০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে।

সূচক কমাল যারা

সূচকের পতনে বেশি ভূমিকা রেখেছে এমন ১০টি কোম্পানির মধ্যে শীর্ষে ছিল ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো লিমিটেড। কোম্পানিটির ১.৫৪ শতাংশ দরপতনে সূচক কমেছে ৭.৭৯ পয়েন্ট।

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২.৫৮ পয়েন্ট সূচক কমিয়েছে রবি। কোম্পানিটির দর কমেছে এক শতাংশ।

ওয়ালটন হাইটেকের ০.৪৫ শতাংশ দর কমায় সূচক কমেছে ২.৪৮ পয়েন্ট এবং বেক্সিমকো লিমিটেডের ১.০৪ শতাংশ দরপতনের কারণে সূচক কমেছে ২.০১ শতাংশ।

এ ছাড়া লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশ ১.৭১পয়েন্ট, আইসিবি ১.৪৫ পয়েন্ট, বেক্সিমকো ফার্মা ১.০২ পয়েন্ট, রেনাটা ০.৯৭ পয়েন্ট, তিতাস গ্যাস ০.৯৭ পয়েন্ট এবং ডাচ্ বাংলা ব্যাক ০.৯১ পয়েন্ট সূচক কমিয়েছে।

সব মিলিয়ে এই দশটি কোম্পানিই সূচক ফেলেছে ২১.৮৯ পয়েন্ট।

সূচক বাড়ানোর চেষ্টায় যারা

বিপরীতে গ্রামীণফোন, ব্র্যাক ব্যাংক, পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্স, রূপালী ব্যাংক, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্‌লস, রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স, ব্যাংক এশিয়া, বিএসআরএম স্টিল, বার্জার পেইন্টস এবং স্কয়ার ফার্মার দরবৃদ্ধিতে সূচকে পয়েন্ট যোগ হয়েছে।

এই ১০টি কোম্পানি সূচকে যোগ করতে পেরেছে মাত্র ১১. ৮৬ পয়েন্ট।

এ বিভাগের আরো খবর