চালভর্তি একটি ভ্যান আসছিল রাজধানীর বাবুবাজার থেকে। পথিমধ্যে গুলিস্তান ফ্লাইওভারসংলগ্ন ঢাকা ট্রেড সেন্টারের সামনে প্রচণ্ড জ্যামে আটকা পড়ে ভ্যানটি। বৃষ্টি আর ভ্যাপসা গরমের মধ্যে অন্যান্য যানবাহনের মতো রিকশাওয়ালারাও যার যার সুবিধামতো একটু আগ-পাশ করতে বেশ বেপরোয়া। হঠাৎ অসাবধানতাবশত ঘা ঘেঁষে থাকা একটি রিকশার তিন কোণা হুকটি বেঁকে গিয়ে আঘাত হানে চালের বস্তায়। আর অমনি বস্তা থেকে দরদর করে পড়তে থাকে চাল।
বৃষ্টিস্নাত রাস্তাটি কাদা ও ড্রেনের উপচে পড়া ময়লা-আবর্জনা মিলেমিশে একাকার। রিকশাওয়ালা আর ভ্যানওয়ালার বাগবিতণ্ডা তখনও চলছিল। কিন্তু সেটিও থেমে যায় পঞ্চাশোর্ধ এক মহিলার কাণ্ডে। তাকে দেখা গেল বৃষ্টি উপেক্ষা করে দৌড়ে এসে সেই কাদা ও ড্রেনের উপচে পড়া ময়লা-আবর্জনা থেকে গভীর মনোযোগ দিয়ে চালগুলো কেঁচে তুলে শাড়ির আচলে গুঁজতে।
প্রত্যক্ষদর্শী এক ভদ্রলোক ওই মহিলাকে উদ্দেশ করে বললেন, ‘আরে কী করছেন। এগুলো তো খেতে পারবেন না। খাওয়ার জন্য এই চাল অনিরাপদ হয়ে গেছে।’
মহিলার এক কথায় জবাব ‘আগে পেটটা বাঁচুক, তারপর দেখমু নিরাপদ না অনিরাপদ।’
রাজধানীর বিভিন্ন বাজারগুলোতে প্রায় প্রতিদিন দেখা মেলে একই রকম চিত্র। সেখানে বিক্রেতার বিক্রয়-অযোগ্য মাছ ও পচে যাওয়া পেঁয়াজ থেকে শুরু করে সবজি, ফল কিংবা অন্যান্য উচ্ছিষ্ট খাদ্যপণ্যও অনেককে সংগ্রহ করতে দেখা যায়।
টেকসই জীবন ও সুস্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাবারের বিকল্প নেই। অনিরাপদ খাদ্য শুধু স্বাস্থ্যঝুঁকিরই কারণ না, দেহে রোগের বাসা বাঁধারও অন্যতম কারণ। এ কারণে নিরাপদ খাদ্যের সংজ্ঞায় স্বাস্থ্যবিজ্ঞান পচাবাসি, পরিত্যক্ত কিংবা উচ্ছিষ্ট খাদ্যের কোনোটিকেই নিরাপদ স্বীকৃতি দেয় না।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে, প্রতি বছর বিশ্বে প্রায় ৬০ কোটি মানুষ দূষিত খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়। যার থেকে মারা যায় ৪ লাখ ৪২ হাজার মানুষ। এ ছাড়া ৫ বছরের চেয়ে কম বয়সী শিশুদের ৪৩ শতাংশই অনিরাপদ খাবারজনিত রোগে আক্রান্ত হয়, যার থেকে প্রতি বছর মৃত্যুবরণ করে ১ লাখ ২৫ হাজার শিশু।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার তথ্য মতে, বিশ্বে এখন প্রায় ৮৫ কোটি মানুষ খাদ্যের অভাবে দারিদ্র্যের কশাঘাতে জর্জরিত।
বাংলাদেশেও অনিরাপদ খাদ্যের ঝুঁকি প্রবল। তবে কখনও কখনও নিরাপদ খাদ্যের চেয়ে খাদ্য প্রাপ্তিই বড় হয়ে দেখা দেয়। করোনা মহামারি এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের দামামায় বাংলাদেশে তেল, চাল, ডাল, চিনি, পেঁয়াজ, মাংস, দুধ, ডিমসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্যে সরবরাহ ঘাটতি এবং দামের উত্তাপে সেটি আঁচ করা যায়। পরিত্যক্ত চাল কুড়িয়ে পেট বাঁচানোর চেষ্টাই তার বহিঃপ্রকাশ।
এই যখন পরিস্থিতি, তখন ৭ জুন মঙ্গলবার ‘সেইফার ফুড বেটার হেলথ’ শিরোনামের জাতিসংঘ নির্ধারিত প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও পালিত হচ্ছে ‘বিশ্ব নিরাপদ খাদ্য দিবস।’
বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সচিব আব্দুন নাসের খান নিউজবাংলাকে জানান, ‘প্রতি বছরের মতো এবারও আমরা বিশ্বব্যাপী আয়োজিত এই নিরাপদ খাদ্য দিবসটি দেশেও পালন করতে যাচ্ছি। এ দিন বিষয়ের ওপর রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে একটি সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে। এ ছাড়া দিবস উদযাপনে প্রতিটি বিভাগীয় ও জেলা শহরে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।’
জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস সতর্ক করে বলেছেন, আগামী কয়েক মাসে বিশ্বজুড়ে খাদ্য ঘাটতি দেখা দিতে পারে। ফলে উচ্চমূল্যের কারণে দরিদ্র দেশগুলোতে খাদ্য নিরাপত্তা পরিস্থিতির চরম অবনতি হবে। এই সংঘাত কমপক্ষে ১ কোটি মানুষকে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার অবস্থায় নিয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে, যা তৈরি করতে পারে দুর্ভিক্ষ।
এবার ‘বিশ্ব নিরাপদ খাদ্য দিবসটি’ বিশ্বজুড়ে এমন একসময়ে পালিত হচ্ছে যখন গোটা বিশ্বই খাদ্য নিরাপত্তার ঝুঁকিতে। ফলে নিরাপদ খাদ্যের চেয়ে এই মুহূর্তে সবার জন্য খাদ্য নিশ্চিত করাই বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
তারা বলছেন, দীর্ঘমেয়াদি করোনার নেতিবাচক প্রভাব সামলে ওঠার আগেই ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘায়ের’ মতো বিশ্ব পরিস্থিতির ওপর প্রভাব ফেলেছে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ। এই যুদ্ধে ইউক্রেনের বন্দরগুলো দিয়ে রপ্তানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিশ্বব্যাপী খাদ্যের স্বাভাবিক সরবরাহ অনিশ্চয়তায় পড়েছে। সংঘাতের আগে এসব বন্দর দিয়ে বিপুল পরিমাণ ভুট্টা, গম, সূর্যমুখীর তেল ছাড়াও বিভিন্ন খাদ্যশস্য রপ্তানি হয়েছে। এখন সেটি না হওয়ায় বিশ্বব্যাপী এসব নিত্যপণ্যের সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিয়েছে এবং এর বিকল্প পণ্যগুলোর দামও বেড়ে গেছে। একইভাবে জ্বালানি সরবরাহ না হওয়ায় তার প্রভাবও পড়েছে দামে। ফলে বিশ্বব্যাপী তৈরি করছে আশঙ্কাজনক মূল্যস্ফীতি।
অন্যদিকে খাদ্যসংকটের আশঙ্কায় ইন্দোনেশিয়াও পাম তেল রপ্তানি বন্ধ করে দেয়, যদিও পরে তারা তুলে নেয়। তার রেশ কাটতে না কাটতেই খাদ্যপণ্যের বৈশ্বিক বাজারজাতকরণ নিয়ে রক্ষণশীল অবস্থান নেয় বিভিন্ন দেশ। নিজেদের নিরাপত্তার চিন্তা করে ভারত গম রপ্তানি বন্ধ রেখেছে, এর পাশাপাশি তারা চিনি রপ্তানিও সীমিত করেছে। ব্রাজিলও বন্ধ রেখেছে চিনি রপ্তানি। বিশ্বে শীর্ষ গম উৎপাদনকারী দেশ চীনে এ বছর উৎপাদন ভালো হয়নি। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়াসহ অন্যান্য দেশেও চাল-গমের দাম বেড়ে গেছে।
জাতিসংঘের তথ্য মতে, খাদ্যের সরবরাহ কমে যাওয়ায় এই বছর বিশ্বে খাদ্যের দাম ৩০ শতাংশের বেশি বেড়েছে।
আমরাও মনে করি আগে পেটটা বাঁচুক, তারপর দেখা যাবে নিরাপদ খাচ্ছি না অনিরাপদ খাচ্ছি। কিন্তু এটাও ভুলে গেলে চলবে না, আমরা এখন সেই অবস্থায় নেই। পেটটা বাঁচানোর মতো অবস্থা অনেক আগেই তৈরি হয়ে গেছে।
মুক্তবাজার অর্থনীতির কারণে এর চাপ থেকে বাদ পড়েনি বাংলাদেশও। কুড়িয়ে নেয়া সেই চালের ভরা মৌসুমেও দাম বেড়েছে কেজিতে ১৫ থেকে ২০ টাকা। সবচেয়ে বড় কথা এর সরবরাহে তৈরি হয়েছে কৃত্রিম ঘাটতি। ভোজ্যতেলেও তাই ঘটেছে। ভারতের গম রপ্তানি বন্ধের খবরে আটা-ময়দার দাম বেড়েছে ১৫ শতাংশ। তাতে বেকারি পণ্যের দাম বেড়েছে ৫০ শতাংশ। একই হুজগে বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। চিনির দামেও আগুন। লবণ, দুধ, কলা, রুটি, পরোটা ছাড়াও মাছ-মাংস, ডিম ও শাক-সবজিসহ সব ধরনের খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে লাগামহীন। অথচ মানুষের আয় সেই আগের জায়গায়ই স্থির রয়েছে। সংসার চালাতে হিমশিম খাওয়া অবস্থা সবার। কী খাবে মানুষ?
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে খাদ্যসচিব ড. নাজমানারা খানম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরাও মনে করি আগে পেটটা বাঁচুক, তারপর দেখা যাবে নিরাপদ খাচ্ছি না অনিরাপদ খাচ্ছি। কিন্তু এটাও ভুলে গেলে চলবে না, আমরা এখন সেই অবস্থায় নেই। পেটটা বাঁচানোর মতো অবস্থা অনেক আগেই তৈরি হয়ে গেছে। এ কথা সত্যি, কিছু জিনিসের দাম বেড়েছে। কিন্তু বাড়তি দামেও মানুষ খেতে পারছে।’
খাদ্যসচিব বলেন, ‘আপনার যখন পেট ভরবে, তখন আপনি চেষ্টা করবেন অন্যান্য চাহিদা কীভাবে মেটে। নিরাপদ খাদ্যের প্রসঙ্গটিও ঠিক তাই। আমরা উন্নত দেশের কাতারে শামিল হওয়ার পথে। সেই ক্ষেত্রে আমরা নিরাপদ খাদ্য আর খাদ্যের নিরাপত্তা দুটোকেই সমানভাবে গুরুত্ব দিয়ে এগোচ্ছি। কেননা খাদ্য যদি নিরাপদ না হয়, তাহলে খাদ্য নিরাপত্তা অর্জন করেও তেমন লাভ হবে না। তখন অনেক ধরনের অসুখ-বিসুখের পেছনে টাকা-পয়সা ঢালতে হবে। হাসপাতাল, চিকিৎসক, নার্স বাড়াতে হবে। আমরা যদি ওষুধ কেনার চেয়ে নিরাপদ খাবার কেনার পেছনে ব্যয় করতে পারি, তাহলেই কিন্তু খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়ে যায়। ফলে আমরা দুটোতেই নজর রাখছি।
বিশ্বে মোট গম উৎপাদনের ৩০ শতাংশ হয় ইউক্রেন ও রাশিয়ায়। আর ভুট্টার ২০ শতাংশ উৎপাদিত হয় এই দুই দেশে। যুদ্ধের কারণে এরই মধ্যে এই দুই দেশ থেকে গম ও ভুট্টাসহ অধিকাংশ খাদ্যপণ্যের রপ্তানি বন্ধ হয়ে গোটা বিশ্বকে খাদ্যসংকটের দিকে ঠেলে দিয়েছে।
সম্প্রতি জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস সতর্ক করে বলেছেন, আগামী কয়েক মাসে বিশ্বজুড়ে খাদ্য ঘাটতি দেখা দিতে পারে। ফলে উচ্চমূল্যের কারণে দরিদ্র দেশগুলোতে খাদ্য নিরাপত্তা পরিস্থিতির চরম অবনতি হবে। এই সংঘাত কমপক্ষে ১ কোটি মানুষকে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার অবস্থায় নিয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে, যা তৈরি করতে পারে দুর্ভিক্ষ। সহসাই যুদ্ধ বন্ধ না হলে সেই দুর্ভিক্ষ চলতে পারে কয়েক বছর।
বিষয়টি নিয়ে ভাবছে অর্থ মন্ত্রণালয়ও। বাজেট প্রণয়নে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যুদ্ধ পরিস্থিতিতে বৈশ্বিক যে খাদ্যসংকটের আশঙ্কা করা হচ্ছে, এবার বাজেটে সাত পদক্ষেপের মাধ্যমে সেই ঝুঁকি মোকাবেলার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। যদি যুদ্ধ পরিস্থিতি বছরব্যাপী দীর্ঘ না হয় তাহলে এসব পদক্ষেপ বাংলাদেশকে সুরক্ষিত রাখার পাশাপাশি খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে সহায়ক হবে, যা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও খাদ্যপণ্যের দাম কমাতেও ভূমিকা রাখবে। ফলে দেশে মানুষের খাদ্য পাওয়ার নিশ্চয়তাও নিশ্চিত করবে।
জানতে চাইলে এ বিষয়ে কৃষিসচিব মো সায়েদুল ইসলাম নিউজবাংলাকে জানান, ‘খাদ্য নিরাপত্তারই একটি অংশ হলো নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা। এর জন্য আমরা খাদ্যপণ্যের নিরাপদ উৎপাদনেও জোর দিচ্ছি। গ্লোবাল ফুড প্রোডাকশনে যে গুড প্র্যাকটিসগুলো রয়েছে, তার আলোকে আমরা নীতিমালা করেছি। একই সঙ্গে তার বাস্তবায়নে অ্যাকশন প্লান নিয়ে কাজ করছি। এতে সার ও কীটনাশক ব্যবহার বিজ্ঞানভিত্তিক করা হচ্ছে। পাশাপাশি ফসল উৎপাদনে আইবিএম ব্যবহার বহুগুণ বেড়েছে, যা নিরাপদ খাদ্য সরবরাহ বাড়াতে সহায়ক হচ্ছে।’
কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে খাদ্যের চাহিদা মেটাতে ৩ কোটি ৮৬ লাখ টন ধান এবং দানাজাতীয় ফসল মিলে সাড়ে ৪ কোটি টন খাদ্য উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
কৃষিসচিব আরও বলেন, ‘খাদ্য নিরাপত্তার জন্য আমরা ধান, গম ও ভুট্টা ছাড়াও সব ধরনের দানাদার ফসল শাক-সবজি ও ফলমূলসহ অন্যান্য কৃষিপণ্যেরও উৎপাদন বাড়াতে জোর দিয়েছি। সব ফসলেই আমরা প্রতি বছর প্রবৃদ্ধির ধারাতে রয়েছি। ফলে করোনার মধ্যেও আমাদের খাদ্যের উৎপাদন সুরক্ষিত অব্যাহত ছিল। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে খাদ্য উৎপাদনে সরকার বাজেটের মাধ্যমে প্রতিবছর আমাদের নীতি সহায়তা দিয়ে থাকে। আগামী বছরও বাজেটের মাধ্যমে আমরা কৃষককে উৎসাহিত করতে সার, বীজ, সেচ, বিদ্যুৎ, কীটনাশক, মাড়াই যন্ত্রপাতিতে ভর্তুকি দেব। সেটি আগের চেয়ে আরও বাড়বে। কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সহায়তা দেব। এসব পদক্ষেপে খাদ্য উৎপাদনও বাড়বে এবং আমাদের খাদ্য নিরাপত্তাও নিশ্চিত করবে।’
কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে খাদ্যের চাহিদা মেটাতে ৩ কোটি ৮৬ লাখ টন ধান এবং দানাজাতীয় ফসল মিলে সাড়ে ৪ কোটি টন খাদ্য উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এবার সেই লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি খাদ্য উৎপাদন আশা করছে তারা।
খাদ্য নিরাপত্তার ঝুঁকি থেকে দেশকে সুরক্ষা দিতে সরকারের সমন্বিত পদক্ষেপ প্রসঙ্গে খাদ্যসচিব ড. নাজমানারা খানম জানান, ‘করোনা এবং যুদ্ধ অবস্থা মিলে বিশ্ব পরিস্থিতির কারণে হয়তো আমরা কিছুটা খারাপ পরিস্থিতিতে আছি, তবে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো অতটা প্রবল নয়। বাংলাদেশের যে প্রেক্ষাপট, তাতে সার্বিক উৎপাদন পরিস্থিতি ও অন্যান্য বিবেচনায় খাদ্যঝুঁকিতে পড়ার কোনো আশঙ্কাই নেই। তা ছাড়া আমাদের মানুষ কর্মঠ। কৃষকরা সচেতন। কৃষি মন্ত্রণালয়, খাদ্য ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তথা পুরো সরকার অভ্যন্তরীণ উৎপাদন এবং অত্যাবশ্যকীয় ঘাটতি পণ্যের আমদানির মাধ্যমে সরবরাহ বাড়ানোর কাজ সার্বক্ষণিক করে যাচ্ছে, যা ঝুঁকির বিপরীতে নিরাপত্তা দেয়াল বলেও ভুল হবে না।’
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান নিউজবাংলাকে জানান, ‘ভোক্তার নিরাপদ খাবার নিশ্চিত করা যেমন জরুরি, চাহিদা অনুযায়ী সেই খাদ্য সঠিক দামে পাওয়াও ভোক্তা অধিকারের মধ্যে পড়ে। তাই যেখানে ভোক্তার স্বার্থ জড়িত, আমরা সেই স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোর সরবরাহ নিরাপদ করতে সবার সঙ্গেই সমন্বিত উদ্যোগে কাজ করছি।’