বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পোশাক রপ্তানিতে বড় ধাক্কা লাগবে: বিজিএমইএ

  •    
  • ৫ জুন, ২০২২ ১৫:৩২

বিজিএমইএ সহসভাপতি শহীদউল্লাহ আজিম বলেন, ‘সবমিলিয়ে মোট কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা এখন সঠিকভাবে বলা যাবে না। আমরা বিজিএমইর সকল সদস্যকে চিঠি দিয়েছি, জানতে চেয়েছি, কার কত ক্ষতি হয়েছে। সে সব তথ্য পাওয়া গেলে বলা যাবে মোট কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে।’

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ আগুনে রপ্তানির অপেক্ষায় থাকা বিপুল পরিমাণ তৈরি পোশাক পুড়ে যাওয়ায় এবং অনেক মানুষের মৃত্যুর ঘটনায় আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন পোশাক শিল্পমালিকরা।

সাভারের রানা প্লাজা, তাজরীন গার্মেন্টসের পর বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক শিল্পে এটা বড় ধাক্কা বলে মনে করছেন তারা।

তাদের ভাষ্য, এর ফলে ক্রেতারা হতাশ ও ক্ষুব্ধ হবেন, অর্ডার কমিয়ে দেবেন। বাংলাদেশ থেকে মুখ ফিরিয়ে অন্য দেশে চলে যাবেন। সবমিলিয়ে সামগ্রিক রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

কনটেইনার ডিপোতে আগুনে পোশাক শিল্পের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে জানতে চাইলে তৈরি পোশাক শিল্পমালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ সহসভাপতি শহীদউল্লাহ আজিম রোববার দুপুরে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সবমিলিয়ে মোট কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা এখন সঠিকভাবে বলা যাবে না। আমরা বিজিএমইর সকল সদস্যকে চিঠি দিয়েছি, জানতে চেয়েছি, কার কত ক্ষতি হয়েছে। সে সব তথ্য পাওয়া গেলে বলা যাবে মোট কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘তবে আমাদের পোশাক মালিকরা কিন্তু কনটেইনার ভর্তি সব পোশাক ডিপো কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দিয়েছিল। যুক্তি অনুযায়ী, ডিপোতে পণ্য বুঝিয়ে দেয়ার পর সেই পণ্যের সব দায়-দায়িত্ব ডিপো কর্তৃপক্ষের। তাই ডিপোতে আগুনের ঘটনায় যে ক্ষতি, তার সকল দায় ডিপো কর্তৃপক্ষকে বহন করতে হবে।’

শহীদউল্লাহ আজিম বলেন, ‘আমাদের পোশাক শিল্পের জন্য বড় ক্ষতি হয়ে গেলো। এমনিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব পড়েছে আমাদের শিল্পে। মে মাসে নয় মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম রপ্তানি আয় দেশে এসেছে। যুদ্ধের কারণে আমাদের পোশাকের প্রধান বাজার ইউরোপ ও আমেরিকায় মূল্যস্ফীতি অনেক বেড়ে গেছে। সে কারণে এখন সেখানকার মানুষদের খাদ্যের জন্য বেশি খরচ করতে হচ্ছে। বাধ্য হয়ে তারা পোশাক কেনা কমিয়ে দিয়েছেন। যার প্রভাব পড়েছে রপ্তানি আয়ে।’

এই ব্যবসায়ী নেতা বলেন, ‘এই ভয়াবহ আগুনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও অনেক মানুষ মারা যাওয়ায় আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে আমাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে। সাভারের রানা প্লাজা, গার্মেন্টসের পর বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক শিল্পে আরেকটি বড় ধাক্কা লাগলো। এর ফলে ক্রেতারা হতাশ ও ক্ষুব্ধ হবেন। অর্ডার কমিয়ে দেবে। বাংলাদেশ থেকে মুখ ফিরিয়ে অন্য দেশে চলে যাবে। সবমিলিয়ে সামগ্রিক রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। আমরা পোশাক শিল্প মালিকরা এ ঘটনায় উদ্বিগ্ন।’

বিজিএমইএ সহসভাপতি বলেন, ‘রানা প্লাজা, তাজরীন গার্মেন্টসে দুর্ঘটনার পর আমরা আমাদের পোশাক শিল্পের অনেক উন্নতি করেছিলাম। প্রচুর বিনিয়োগ করে কারখানাগুলোর মান উন্নতি করেছিলাম। বায়াররা খুব খুশি হয়েছিলেন। প্রচুর অর্ডার দিচ্ছিলেন। দামও আগের চেয়ে বেশি পাচ্ছিলাম। সবমিলিয়ে পোশাক শিল্পে সুবাতাস বইতেছিল। কিন্তু এই ভয়াবহ আগুনের ঘটনা সব ওলোটপালট করে দিল। আমাদের অনেক ক্ষতি হলো।’

বিজিএমইএর মুখপাত্র ও পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আগুনে সবচেয়ে বেশি পুড়েছে সুইডেনভিত্তিক তৈরি পোশাকের খুচরা বিক্রেতা ব্র্যান্ড হ্যানস অ্যান্ড মৌরিটজ (এইচঅ্যান্ডএম) এর পোশাক। অর্থাৎ আমাদের পোশাক মালিকদের কাছ থেকে এইচঅ্যান্ডএম অর্ডার দিয়ে পোশাক কিনেছিল। আমাদের মালিকরা সব বুঝে দিয়ে রপ্তানির জন্য ওই ডিপোতে রেখেছিল। অন্য কোম্পানির কেনা পোশাকও ছিল ডিপোতে। তবে বেশিরভাগ পোশাক ছিল এইচঅ্যান্ডএমের।’

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য বলছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বড় ধরনের প্রভাব পড়েছে দেশের রপ্তানি আয়ে। সদ্য সমাপ্ত মে মাসে বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে ৩৮৩ কোটি (৩.৮৩ বিলিয়ন) ডলার আয় করেছে বাংলাদেশ।

এই আয় গত ৯ মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম। নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম ১ দশমিক ৬৪ শতাংশ। আগের মাস এপ্রিলের চেয়ে কম এসেছে ১৯ দশমিক ১৭ শতাংশ।

মে মাসে লক্ষ্যমাত্রা ধরা ছিল ৩৮৩ কোটি ডলার। এপ্রিলে আয় হয়েছিল ৪৭৩ কোটি ৮৬ কোটি ডলার। গত বছরের মে মাসে আয় হয়েছিল ৩১০ কোটি ৮০ লাখ ডলার।

গত বছরের আগস্টে পণ্য রপ্তানি থেকে ৩৩৮ কোটি ৩০ লাখ ডলার আয় করেছিল বাংলাদেশ। এর পর থেকে প্রতি মাসেই ৪০০ কোটি (৪ বিলিয়ন) ডলারের বেশি রপ্তানি দেশে এসেছে। সবচেয়ে বেশি এসেছিল গত বছরের ডিসেম্বরে, ৪৯০ কোটি ৭৭ লাখ ডলার।

এ বিভাগের আরো খবর