বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পদ্মা সেতু ঘিরে অর্থনৈতিক করিডর গড়ার পরামর্শ

  •    
  • ৪ জুন, ২০২২ ১৯:৪৮

সিপিডির বিশেষ ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘পদ্মাসেতু জাতীয় আকঙ্খার প্রতীক। এটা শুধু পরিবহনের জন্য ব্যবহার করলে চলবে না, এটাকে ইকোনোমিক করিডর করতে হবে। পদ্মা সেতু ঘিরে ১৭টা ইকোনোমিক জোন গড়ে তোলার পরিকল্পনা ছিল। সেগুলো করতে হবে। তাহলে জাতীয় অর্থনীতি ও কর্মসংস্থানে অবদান রাখতে পারবে।’

পদ্মা সেতু দেশের জাতীয় আশা-আকাঙ্খার প্রতীক উল্লেখ করে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, কেবল এই সেতুকে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের জন্য ব্যবহার করলে চলবে না। সেতুকে অর্থনৈতিক করিডর হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। একে কেন্দ্র করে ইকোনোমিক জোন ও শিল্প পার্ক গড়ে তুলতে পারলে সেটি জাতীয় অর্থনীতির বিকাশ ও কর্মসংস্থান তৈরিতে অবদান রাখতে পারবে।

শনিবার ‘সামষ্টিক অর্থনীতির বর্তমান অবস্থা: বাংলাদেশ প্রেক্ষিত’ বিষয়ক এক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা এমন কথা বলেন।

রাজধানীর কারওয়ান বাজারের সিএ ভবন অডিটোরিয়ামে দ্য ইনস্টিটিউট অফ চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টস অফ বাংলাদেশ (আইসিএবি) ও ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) যৌথভাবে এই আলোচনার আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

এ সময় পদ্মা সেতুকে কার্যকর ব্যবহার করার পরামর্শ রাখেন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) এর বিশেষ ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান।

তিনি বলেন, ‘পদ্মাসেতু জাতীয় আকঙ্খার প্রতীক। এটা শুধু পরিবহনের জন্য ব্যবহার করলে চলবে না, এটাকে ইকোনোমিক করিডর করতে হবে। পদ্মা সেতু ঘিরে ১৭টা ইকোনোমিক জোন গড়ে তোলার পরিকল্পনা ছিল। সেগুলো করতে হবে। তাহলে জাতীয় অর্থনীতি ও কর্মসংস্থানে অবদান রাখতে পারবে।’

অর্থনীতির প্রত্যাশিত উন্নয়নে দীর্ঘসূত্রিতায় প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা আমাদের উন্নয়নের বড় বাধা। যেমন এখনও এনবিআরের কর আদায়ে অনেক ঘাটতি আছে। মাথাপিছু আয় বাড়ছে, কিন্তু রেভিনিউ জিডিপি কমছে। আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলোতে আগে বিনিয়োগ করে উপযুক্ত করতে হবে। প্রবৃদ্ধির জন্য বিনিয়োগ দরকার, বিনিয়োগ ছাড়া প্রবৃদ্ধি আসবে না।’

বর্তমান দেশের অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় বিনিময় হারের স্থিতিশীলতার পাশাপাশি টাকার মান বাড়ানোর পরামর্শ দেন পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর।

তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে মুদ্রার বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখা যেমন জরুরি, তেমনি টাকার মানও বাড়াতে হবে। যেমন এই সংকটে রাশিয়া যেভাবে তার মুদ্রা রুবলকে আকর্ষণীয় করেছে আমাদেরও সে পদক্ষেপে যেতে হবে।’

বাজেট পদক্ষেপ প্রসঙ্গে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘বাজেট জিডিপির ২০ শতাংশ করলে ভালো। কারণ আমাদের বাজেট হয় জিপিডির মাত্র ১৪ শতাংশ। যেটা অন্যান্য দেশের তুলনায় কম। তাছাড়া আবার বাজেটের একটা বড় ব্যয় চলে যায় বেতন ভাতা দিতে। বাকি টাকা সরকারি উন্নয়ন কাজে ব্যবহার করা হয়।

‘তাই জিডিপির রেশিও অনুযায়ী বাজেট বাড়াতে হবে। আবার প্রকল্প গ্রহণেও তিনি অগ্রাধিকার মূল্যায়নের পরামর্শ দিয়ে বলেন, এবার রেলখাতে ১ লাখ কোটি টাকা বরাদ্দ আছে। এই টাকা কবে রিটার্ন পাবো আমরা জানি না। তাই প্রকল্প ভেবে চিন্তে নিতে হবে যাতে করে রিটার্ন ভালো আসে। দ্রুত আসে।’

বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা পথে এমন দাবি উড়িয়ে দেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেন।

তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘আমরা কেন শ্রীলঙ্কা হব? বর্তমানে অর্থনীতিতে কোন চাপ দেখছি না। আমাদের অর্থনীতির যে চারটি ড্রাইভার আছে তা ঠিক আছে। আমাদের কৃষি খাতে ভালো আছে। এ ছাড়া রপ্তানি আয় ভালো। চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত রপ্তানি আয় ছিল ৪৪ শতাংশ; নন- এক্সপোর্ট ম্যানুফ্যাকচারিংও ভালো। বর্তমানে ভারত ও পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ ভালো অবস্থানে আছি। তবে রেমিট্যান্স কিছুটা কমেছে। চারটা ড্রাইভারের মধ্যে তিনটাই ভালো।’

এ সময় তিনি আমদানি ব্যয় হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার কারণ উল্লেখ করে বলেন, ‘আমদানি বেড়ে হঠাৎ ৬০ শতাংশ হয়েছিল। এটার কারণ হলো দীর্ঘদিন কোভিড ছিল। কোভিডের পর মানুষ কেনাকাটা করেছে। এ ছাড়া অনেক শিল্প কারখানায় কাঁচামাল প্রয়োজন হয়। তাই পরিস্থিতি স্বাভাবিকতায় যতো এগিয়েছে, আমদানিও ততো বেড়েছে।’

তবে বর্তমানে ৬০ শতাংশ থেকে আমদানি কমে ২৮ শতাংশ হচ্ছে বলেও তিনি জানান।

এমসিসিআই সভাপতি সাইফুল ইসলাম রেমিট্যান্সের উপর যে পরিমাণ প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে-তা আরও বাড়ানোর প্রস্তাব করেন।

অন্যদের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান ড. মাসরুর রিয়াজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এম আবু ইউসুফ, আইসিএবির সভাপ‌তি শাহদাৎ হোসেন, বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্টের (বিল্ড) ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপারসন আবুল কাসেম খান, ইআরএফ সভাপতি শারমীন রিনভী, সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলাম, বার্তা সংস্থা এএফপির ব্যুরো চিফ এম শফিকুল আলম প্রমুখ।

এ বিভাগের আরো খবর