বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম ফের বাড়ছে। সোমবার বাংলাদেশ সময় রাত ১১টায় ব্রেন্ট অপরিশোধিত তেলের দর ২ শতাংশ বেড়ে ১২১ ডলার ৪০ সেন্টে উঠেছে। আর ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট তেলের দাম ১ দশমিক ৬০ শতাংশ বেড়ে ১১৬ ডলার ৭০ সেন্টে বিক্রি হচ্ছে।
এই দর গত দুই মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়তে শুরু করে। করোনা মহামারির মধ্যেও টানা বেড়েছে তেলের দাম। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করায় তা আরও ঊর্ধ্বমুখী হয়।
গত বছরের অক্টোবরের শেষ দিকে দুই ধরনের তেলের দামই ৮০ ডলার ছাড়িয়ে যায়। সে সময় বাংলাদেশ সরকারও ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে এক লাফে ১৫ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম ৮০ টাকা নির্ধারণ করে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেনে হামলার পর থেকে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে তেলের দাম; এক পর্যায়ে প্রতি ব্যারেল ১৩৯ ডলারে গিয়ে ঠেকেছিল। এরপর থেকে বিভিন্ন উদ্যোগে ওঠানামার মধ্যেই ছিল তেলের দর; ১১০ থেকে ১১৫ ডলারের মধ্যে ছিল। কিন্তু গত এক সপ্তাহ ধরে অল্প অল্প করে করে বেড়ে টানা ১২০ ডলার ছাড়িয়েছে।
২০২০ সালের কোভিড মহামারির শুরুতে সারা বিশ্বে যখন লকডাউন চলছিল, তখন জ্বালানির তেলের দাম মাইনাস ৩৭ ডলারে নেমে এসেছিল। অর্থাৎ এক ব্যারেল তেল কিনলে ক্রেতাকে উল্টো ৩৭ ডলার দেওয়া হয়েছে। এরপর ওপেক ও রাশিয়া ধারাবাহিকভাবে তেল সরবরাহ কমিয়ে মূল্যবৃদ্ধি করে।
বিশ্বের জনপ্রিয় এনার্জি বিষয়ক নিউজ সাইট ওয়েলপ্রাইস ডটকম বলেছে, রাশিয়ান অপরিশোধিত তেলের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যদের মধ্যে কোনো চুক্তিতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হওয়ায় বিশ্ববাজারে তেলের দাম আবার বাড়তে শুরু করেছে। এছাড়া বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্রে ‘ড্রাইভিং সিজন’ শুরু হওয়ায় তেলের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দাম বৃদ্ধি একটি কারণ।
চিনের প্রধান শহরগুলোতে কোভিড-১৯ এর লকডাউন শিথিলের কারণে চাহিদা বাড়ার কারণেও তেলের দাম ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে বলে জানিয়েছে ওয়েলপ্রাইস ডটকম।
২০২০ সালের ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিক বাজারে গড়ে প্রতি ব্যারেল তেলের দাম ছিল ৪২ ডলার। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে ছিল ৪৯ ডলার। এর পর থেকে গড়ে প্রতি ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ছিল ফেব্রুয়ারিতে ৫৩ ডলার, মার্চে ৬০, এপ্রিলে ৬৫, মে মাসে ৬৪, জুনে ৬৬, জুলাইয়ে ৭৩ এবং আগস্টে ৭৪ ডলার। অক্টোবরে এই দাম ৮৫ ডলারে ওঠে।
এরপর অবশ্য তেলের দাম খানিকটা কমে আসে। যুদ্ধের ডামাডোলে ফের তা বাড়তে থাকে। ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেনে হামলার সঙ্গে সঙ্গে তেলের দাম ১০০ ডলার ছাড়িয়ে যায়।