ইউক্রেন-রাশিয়ার চলমান যুদ্ধের জেরে বিশ্বে খাদ্য, জ্বালানি ও সারের দাম লাফিয়ে বাড়ছে। সরবরাহ ব্যবস্থাও ব্যাহত হচ্ছে। এ অবস্থায় বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দার আশঙ্কা করছেন বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার যুক্তরাষ্ট্র চেম্বার অফ কমার্সের এক অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ শঙ্কার কথা জানান।
মন্দা এড়ানোর পথ খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। বলেন, ‘করোনার কারণে চীনের ধারাবাহিক লকডাউনের কারণে বিশ্ব অর্থনীতি ধীর হয়ে যাচ্ছে। সামনের দিনগুলোয় বৈশ্বিক অর্থনীতি আরও সংকুচিত হয়ে আসতে পারে।’
ম্যালপাস বলেন, ‘আমরা বৈশ্বিক জিডিপির দিকে যদি তাকাই তাহলে দেখব, কীভাবে মন্দা এড়াব তার একটি পথ পাওয়া এ মুহূর্তে খুবই মুশকিল। শুধু জ্বালানির দাম দ্বিগুণ হওয়ায় এককভাবে মন্দা শুরুর জন্য যথেষ্ট।’
গত মাসে বিশ্বব্যাংক বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক ২ শতাংশে নেমে আসার পূর্বাভাস দিয়েছিল, যা আগের চেয়ে ১ শতাংশ কম।
ব্যবসায়ীদের ওই অনুষ্ঠানে বিশ্বব্যাংকপ্রধান বলেন, ‘পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার ওপর থেকে জ্বালানির নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনার পরিকল্পনা নিলেও ইউরোপের অনেক দেশই এখনও জ্বালানিতে রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীল। রাশিয়া ওই অঞ্চলে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে মন্দা দেখা দেবে।
‘জ্বালানির বাড়তি দাম বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ জার্মানিকে বিপাকে ফেলে দিয়েছে। বিশ্বে এরই মধ্যে সার, খাদ্য ও জ্বালানি সংকট দেখা দিয়েছে। এ কারণে উন্নয়নশীল দেশগুলো সবচেয়ে বেশি ভুগছে।’
চীনের বড় শহরগুলোয় লকডাউন চলার বিষয়টি নিয়েও উদ্বেগ জানান ম্যালপাস। বলেন, ‘করোনাভাইরাস ঠেকাতে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ অর্থনীতির দেশ চীন আর্থিক, উৎপাদন ও জাহাজ যোগাযোগের কেন্দ্র সাংহাইসহ বিভিন্ন শহরে ধারাবাহিক লকডাউন দিচ্ছে, যা উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এতে বিশ্ব অর্থনীতির গতিও ধীর হয়ে যাচ্ছে।
‘চীনের আবাসন খাতে এক ধরনের সংকোচন চলছে। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর আগে থেকেই চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি উল্লেখযোগ্যভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে। এরপর নতুন করে লকডাউনের কারণে দেশটির প্রবৃদ্ধির প্রত্যাশাকে আরও কমিয়ে দিয়েছে।’