বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

শেখ হাসিনা মডেলে ‘উদ্ধার পেতে পারে শ্রীলঙ্কা’

  •    
  • ২২ মে, ২০২২ ১৬:২৫

জন রোজারিও তার নিবন্ধে লেখেন, শেখ হাসিনার প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের মতো স্বল্পোন্নত একটি দেশ এখন অর্থনৈতিক সূচকগুলোর নিরিখে উন্নয়নশীল। শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে মধ্য আয়ের দেশে পরিণত করেছেন। বাংলাদেশ মডেলের নেপথ্যের অন্যতম কারণ বলিষ্ঠ নেতৃত্ব।

বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ সংকট ও ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতিতে স্বাধীনতার পর সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক সংকটে শ্রীলঙ্কা।

সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে দেশটির বিভিন্ন প্রান্তে বড় ধরনের বিক্ষোভ হয়েছে। এর কোনো কোনোটি রূপ নিয়েছে সহিংস।

এ সংকট থেকে উত্তরণে বড় কোনো ত্রাণকর্তা পায়নি দক্ষিণ এশিয়ার দেশটি। এমন বাস্তবতায় সমাধানের পথ বাতলে দিয়েছেন জন রোজারিও নামের এক কলামলেখক।

ভিয়েতনামভিত্তিক সংবাদমাধ্যম খেমার টাইমসে লেখা নিবন্ধে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহের জন্য সম্ভাব্য সমাধান হাজির করেন ভারতের জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্তর্জাতিক সম্পর্কে স্নাতকোত্তর করা এ ব্যক্তি।

জন রোজারিও তার নিবন্ধে লেখেন, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর টেলিভিশনে দেয়া প্রথম ভাষণে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে তার সামনে থাকা দুঃসাধ্য চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরেন। সে সময় চ্যালেঞ্জ উত্তরণে নিজের দৃঢ়প্রতিজ্ঞার কথাও জানান তিনি।

সে ভাষণে সব দলকে নিয়ে জাতীয় পরিষদ গঠনের কথাও বলেন বিক্রমাসিংহে। তার সামনে সম্ভাব্য একটি নজির আছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মডেল অনুসরণ করে তিনি সংকট থেকে মুক্তি পেতে পারেন।

শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতি তুলে ধরে রোজারিও লেখেন, মুদ্রাস্ফীতি, বেকারত্ব ও প্রয়োজনীয় সামগ্রীর সংকট এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, উন্নত জীবনের আশায় বিদেশে চলে যাচ্ছেন লঙ্কানরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রতিবেশী ভারতের কাছে দেড় শ কোটি ডলার ঋণ চেয়েছে শ্রীলঙ্কা।

দক্ষিণ এশিয়ার দেশটির সংকটকালে প্রথমবারের মতো ২৫ কোটি ডলার ঋণ দেয় বাংলাদেশ। এটি ছিল বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রথম কোনো দেশকে দেয়া ঋণ। সে ঋণ পাওয়ার পর আবার বাংলাদেশের কাছে অর্থ সহায়তা চায় শ্রীলঙ্কা।

জন রোজারিওর নিবন্ধে বলা হয়, মানবসম্পদ ও অভ্যন্তরীণ সমৃদ্ধি বিবেচনায় শ্রীলঙ্কা যথেষ্ট সক্ষম দেশ ছিল, কিন্তু এরপরও এ পরিস্থিতি কেন? শ্রীলঙ্কা বেশ কিছু মহাপ্রকল্প হাতে নিয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে সমুদ্রববন্দর, বিমানবন্দর, সড়কসহ বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়ন। এ পর্যায়ে এসে এগুলোকে অদরকারি ও বাহুল্য মনে হচ্ছে।

ভারতীয় কলামলেখক তার নিবন্ধে লেখেন, দেশ-বিদেশে বিভিন্ন পক্ষের কাছ থেকে ঋণ নেয় শ্রীলঙ্কা সরকার। এ কারণে তাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ধীরে ধীরে ফুরিয়ে আসে। শ্রীলঙ্কার সরকারগুলো বিনিয়োগের পরিবর্তে ধার করায় নজর দিয়েছে।

বাংলাদেশের অবস্থা শ্রীলঙ্কার ঠিক বিপরীত বলে মন্তব্য করেন জন রোজারিও। তার মতে, বাংলাদেশ উন্নয়নের বিস্ময়।

তিনি লেখেন, শেখ হাসিনার প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের মতো স্বল্পোন্নত একটি দেশ এখন অর্থনৈতিক সূচকগুলোর নিরিখে উন্নয়নশীল। শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে মধ্য আয়ের দেশে পরিণত করেছেন। বাংলাদেশ মডেলের নেপথ্যের অন্যতম কারণ বলিষ্ঠ নেতৃত্ব।

শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের চলমান উন্নয়ন তুলে ধরে জন রোজারিও লেখেন, বড় প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন এখন সময়ের ব্যাপার। গ্রামেও পৌঁছে গেছে নগরের সুবিধা। কিছুদিনের মধ্যেই মেট্রোরেল উদ্বোধন হবে।

সুদীর্ঘ পদ্মা সেতু এখন আর স্বপ্ন নয়; এটি বাস্তবতা। সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে এ ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়ন একসময় ভাবা যেত না।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্ধৃত করে রোজারিও লেখেন, মানব উন্নয়নের বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখিয়েছে। ২০১৯ সালে গড় আয়ু ছিল ৭২.৬ বছর। ২০০০ সালের তুলনায় ২০১৯ সালে গড় আয়ু বেড়েছে ৭ বছর। উনিশে মানব উন্নয়ন সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ১৮৯টি দেশের মধ্যে ১৩৩তম।

নিবন্ধে একজন নারী হাইকমিশনারের বক্তব্য উদ্ধৃত করেন জন রোজারিও। সে হাইকমিশনার কোন দেশে দায়িত্বরত এবং তার নাম কী, সেটি উল্লেখ না করে তিনি লেখেন, বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির পেছনে রয়েছে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে সাফল্য, যা দেশটির মোট রপ্তানির ৮৩ শতাংশ। এর বাইরে প্রবাসীরা বিপুল অর্থ পাঠায় বাংলাদেশে, যা মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৭ শতাংশ। এরপরও প্রবৃদ্ধির চালিকাশক্তি বিভিন্ন প্রকল্পে বিনিয়োগ। ২০০০ সালে প্রবৃদ্ধিতে বিনিয়োগের অবদান যেখানে ছিল ২৪ শতাংশ, ২০১৯ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩২ শতাংশে।

ওই হাইকমিশনারকে উদ্ধৃত করে রোজারিও আরও লেখেন, বাংলাদেশের নজরকাড়া উত্থান ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি (হাইকমিশনার) একে ‘শেখ হাসিনা ফ্যাক্টর’ আখ্যা দেন।

খেমার টাইমসের নিবন্ধে রোজারিও উল্লেখ করেন, শেখ হাসিনা সরকারের অর্থনৈতিক অর্জন নেই কারও মধ্যে বিতর্ক নেই। বাংলাদেশের প্রশংসা করা সর্বশেষ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর একটি এশিয়ান ডেভলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি)।

সংস্থাটি বাংলাদেশকে আখ্যা দিয়েছে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে দ্রুততম প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী দেশ হিসেবে, যে দেশ ছাড়িয়ে গেছে চীন, ভিয়েতনাম, ভারতকেও।

এ বিভাগের আরো খবর