বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ব্যক্তি আয়করে ছাড়ের সম্ভাবনা নেই

  •    
  • ২১ মে, ২০২২ ১৮:০১

বাজেট প্রণয়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নতুন বাজেটে ব্যক্তিশ্রেণি করদাতাদের করমুক্ত আয়ের সীমা একই থাকতে পারে। আয়কর ধাপে কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না।

আসন্ন জাতীয় বাজেটে আয়করে মধ্যবিত্তদের স্বস্তি দেয়ার মতো কোনো খবর নেই। অন্তত আয়করের দিক থেকে। আসন্ন ২০২২-২৩ বাজেটে ব্যক্তিশ্রেণির আয়করে ছাড় দেয়ার ক্ষেত্রে নতুন কোনো ঘোষণা এখন পর্যন্ত নেই।

বাজেট প্রণয়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নতুন বাজেটে ব্যক্তিশ্রেণি করদাতাদের করমুক্ত আয়ের সীমা একই থাকতে পারে। আয়কর ধাপে কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না।

করোনা-পরবর্তী জনগণের ক্রয়ক্ষমতা কমে যাওয়া ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির পরিপ্রেক্ষিতে দেশের সীমিত আয়ের মানুষ কষ্টে আছে।

এ পরিপ্রেক্ষিতে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের বার্ষিক করমুক্ত আয়সীমা বিদ্যমান ৩ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে কমপক্ষে সাড়ে ৩ লাখ টাকায় উন্নীত করার দাবি ওঠে ব্যবসায়ীদের সংগঠন এফবিসিসিআইসহ সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বৈঠকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের পক্ষ থেকে ব্যক্তি করে ছাড় দেয়ার বিষয়ে কোনো প্রস্তাব করা হয়নি।

এনবিআরের পক্ষ থেকে বলা হয়, সাড়ে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত ছাড় দেয়া হলে আয়কর আহরণের দিক থেকে অনেক ক্ষতি হবে।

এর চেয়ে কম ছাড় দেয়া হলে প্রান্তিক করদাতারা তেমন উপকৃত হবে না। যে কারণে ব্যক্তি করদাতার আয়করে ছাড়ের প্রস্তাবটি আগের মতোই অপরিবর্তিত রাখার পক্ষে এনবিআর।

অর্থ মন্ত্রণালয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তৃতায় এ বিষয়ে কিছু উল্লেখ না থাকলেও অর্থবিল পাসের দিন সংসদে কিছু সুবিধা দেয়ার কথা বলতে পারেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

২০২০ সালের মার্চে দেশে করোনা অতিমারি শুরু হওয়ার পর অর্থনীতি বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। বিরূপ প্রভাব পড়ে ব্যবসা-বাণিজ্যে। এতে করে দেশের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে যায়।

তখনকার প্রেক্ষাপটে, সাধারণ মানুষের অবস্থা বিবেচনা করে ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে ব্যক্তি করদাতার আয়ে ব্যাপক ছাড় দেয়া হয়।

ওই অর্থবছর বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা ও যাতায়াত ভাতা বাদ দিয়ে ব্যক্তিশ্রেণির করমুক্ত আয়সীমা আড়াই লাখ টাকার পরিবর্তে বার্ষিক ৩ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এর পর থেকে তা অপিরবর্তিত রাখা হয়।

করোনা নিয়ন্ত্রণে এলে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ালেও রাশিয়া-ইউক্রেন সাম্প্রতিক যুদ্ধের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে সবকিছুর দাম বেড়ে যায়। এর প্রভাব পড়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিতে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসহ অন্যান্য পণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় জনগণের জীবনযাত্রার ব্যয়ও বাড়ে।

বর্তমান বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে আগামী বাজেটে ব্যক্তিশ্রেণি করে আরও ছাড় দেয়ার জোরালো দাবি ওঠে।

গবেষণা সংস্থা পিআরআইয়ের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘জীবনযাত্রার ব্যয় যেভাবে বেড়েছে, তাতে করমুক্ত আয়ের সীমা আরও বাড়ানো উচিত। তবে এটাও ঠিক, বাংলাদেশে অনেকেরই কর দেয়ার সামর্থ্য আছে । তাদের বেশির ভাগই এখনও করের নেটে নেই। যোগ্য সবাইকে করের আওতায় আনতে হবে।’

পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে এবারের বাজেটে ব্যক্তি করদাতার করমুক্ত আয়ের সীমা আগের মতো অর্থাৎ ৩ লাখ টাকা বহাল রাখা হয়েছে। ভারতে মোট জনসংখ্যার ৪ শতাংশ মানুষ আয়কর দেন। আর বাংলাদেশ মাত্র ১ শতাংশ লোক কর দেন।

যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশেই ব্যক্তিশ্রেণির করমুক্ত আয়ের সীমা কয়েক বছরের জন্য নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়, যাতে করদাতা আগাম তার হিসাব সহজেই করতে পারেন।

বাংলাদেশে জোট সরকারের আমলে একবার তিন বছরের জন্য করমুক্ত সীমা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তী সময়ে তা বাতিল করা হয়।

জনসংখ্যা অনুপাতে বাংলাদেশে ব্যক্তি করদাতার সংখ্যা খুবই কম। অথচ কর দেয়ার সামর্থ্য রয়েছে অনেকেরই।

এখন নিবন্ধিত বা টিআইএনধারীর সংখ্যা প্রায় ৭০ লাখ হলেও আয়কর রিটার্ন জমা দেন মাত্র ২৫ লাখ। এর মধ্যে কমপক্ষে তিন লাখ রিটার্ন আছে যাদের আয় শূন্য। তাদের কাছ থেকে কোনো কর পায় না সরকার। ফলে নিয়মিত রিটার্ন দিচ্ছেন মাত্র ২২ থেকে ২৩ লাখ।

আয় অনুযায়ী বাংলাদেশে কতজনের কর দেয়ার সক্ষমতা রয়েছে, তার সঠিক পরিসংখ্যান নেই। এনবিআর এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো জরিপ করেনি।

তবে অর্থনীতিবিদসহ আয়কর বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, তিন-চার কোটি লোকের কর দেয়ার সামর্থ্য রয়েছে। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালও তাই মনে করেন।

আয়কর আইনে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার করদাতার রিটার্ন জমা দেয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আয় থাকুক আর না থাকুক, বার্ষিক রিটার্ন জমা দিতেই হবে। না দিলে প্রচলিত আইনে জরিমানার বিধান রয়েছে।

এ বিভাগের আরো খবর