ইন্দোনেশিয়া পাম তেল রপ্তানির নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে। ২৩ মে থেকে আগের মতোই দেশটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাম তেল রপ্তানি করবে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো তার দেশ থেকে পাম তেল রপ্তানির নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
ইন্দোনেশিয়া বিশ্বের শীর্ষ পাম তেল উৎপাদক দেশ। অভ্যন্তরীণ বাজারে রান্নার তেলের দাম নিয়ন্ত্রণে গত ২৮ এপ্রিল অপরিশোধিত পাম তেল রপ্তানি বন্ধ করে দেয় দেশটি।
সেসময় দেশটি জানায়, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, কম উৎপাদন এবং করোনা মহামারির কারণে সৃষ্ট শ্রমিক সংকটে ইন্দোনেশিয়াতেই তেল সংকট দেখা দিয়েছে।
এই সংকট মোকাবিলায় গত ২২ এপ্রিল ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট তেল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেন।
নিষেধাজ্ঞা ঘোষণার পর বিশ্বের শীর্ষ পাম তেল রপ্তানিকারক দেশটি ২৮ এপ্রিল থেকে অপরিশোধিত পাম তেলের চালান বন্ধ করে দেয়।
পাম তেলের চালান বন্ধের ফলে বিশ্বব্যাপী উদ্ভিজ্জ তেলের বাজার বড় রকমের ধাক্কা খায়। এর প্রভাব পড়ে বাংলাদেশের তেলের বাজারেও।
চলতি মাসের শুরুতে সয়াবিন তেলের দাম এক লাফে বাড়ানো হয় লিটারে ৩৮ টাকা। নতুন দাম নির্ধারণ করা হয় ১৯৮ টাকা। খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৮০ টাকা লিটার আর এক লিটার পাম তেলের মূল্য নির্ধারণ করা হয় ১৭২ টাকা।
এক বছর আগেও বোতলজাত সয়াবিন তেলের লিটার ছিল ১৩৪ টাকা করে। গত ৬ ফেব্রুয়ারি তা নির্ধারণ করা হয় ১৬৮ টাকা। ব্যবসায়ীরা মার্চ থেকে লিটারে আরও ১২ টাকা বাড়িয়ে ১৮০ টাকা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সরকার রাজি না হয়ে ভোজ্যতেল উৎপাদন ও বিক্রির ওপর থেকে ভ্যাট পুরোপুরি আর আমদানিতে ৫ শতাংশ রেখে বাকি সব ভ্যাট প্রত্যাহার করে নেয়। পরে গত ২০ মার্চ লিটারে ৮ টাকা কমিয়ে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ঠিক করা হয় ১৬০ টাকা।
প্রতি লিটার রান্নার তেলের দাম ১৪ হাজার রুপিয়ায় (ইন্দোনেশিয়ান মুদ্রা) নামিয়ে আনার লক্ষ্যে রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল ইন্দোনেশিয়ার সরকার। তেলের দাম এখনও সেই লক্ষ্যমাত্রায় নেমে না আসলেও পাম তেল শিল্পের শ্রমিকদের কথা বিবেচনা করে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির সরকার।
দেশটির প্রেসিডেন্ট বৃহস্পতিবার এক ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘পাম তেল শিল্পের সঙ্গে যুক্ত দেশের ১ কোটি ৭০ লাখ শ্রমিকের কথা ভেবে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’
দেশটিতে রান্নার তেলের সরবরাহ এখন অভ্যন্তরীণ বাজারে যা প্রয়োজন তার চেয়ে বেশি বলে জানিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘এপ্রিল মাসে রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার আগে দেশে রান্নার তেলের গড় দাম ছিল ১৯ হাজার ৮০০ রুপিয়া প্রতি লিটার। নিষেধাজ্ঞার পরে গড় দাম প্রায় ১৭ হাজার ২০০ থেকে ১৭ হাজার ৬০০ রুপিয়া প্রতি লিটারে নেমে এসেছে।’