বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পুঁজিবাজারে ধস: এবার ফ্লোর প্রাইস নয়

  •    
  • ১৮ মে, ২০২২ ২১:০২

রোড শো করে বিদেশি বিনিয়োগ নিয়ে আসার চেষ্টা করছি। ছয় মাস ধরে চেষ্টা করে মার্কেটকে এই জায়গায় নিয়ে এসেছি। ফ্লোর প্রাইস দিলে বিদেশি বিনিয়োগকারী আসতে চায় না। এতে করে বিদেশি বিনিয়োগ কমে যায়। তারা মনে করে মার্কেট স্ট্যাবল নয়। তারা চায় একটা ফেয়ার মার্কেট: বিএসইসি চেয়ারম্যান

পুঁজিবাজারে অব্যাহত দরপতনের কারণে বিনিয়োগকারীরা নতুন করে সব শেয়ারের সর্বনিম্ন মূল্য বা ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেয়ার দাবি তুললেও এই ধরনের কোনো চিন্তা নেই পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির।

সংস্থাটির চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেছেন, এই ধরনের সিদ্ধান্তে বিদেশি বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত হয়। গত মার্চে দরপতনের সর্বোচ্চ সীমা ২ শতাংশে নামিয়ে আনার কারণেও বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ বের হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

টালমাটাল বিশ্ব পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনীতি নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে পুঁজিবাজারে টানা তৃতীয় দিন বড় পতন হলো। আরও শতাধিক পয়েন্ট সূচক হারিয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক ডিএসইএক্সের অবস্থান দাঁড়িয়েছে ১০ মাসের সর্বনিম্ন অবস্থানে।

চলতি সপ্তাহের তিন কর্মদিবসেই সূচক পড়েছে ২৫৫ পয়েন্ট। দরপতনের সর্বোচ্চ সীমা পাঁচ শতাংশ না থাকলে পরিস্থিতির আরও অবনতি হতো কি না তা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।

নিউজবাংলাকে ফোন করে একজন বিনিয়োগকারী বলেছেন, তিনি মার্জিন ঋণ নিয়ে বিনিয়োগ করে বিপাকে পড়েছেন। যদি ফ্লোর প্রাইস না দেয়া হয় তাহলে তার সব টাকা শেষ হয়ে যাবে।

পুঁজিবাজারকেন্দ্রিক বিভিন্ন ফেসবুক পেজেও ক্রমাগত এই দাবি উঠছে। কেউ কেউ দাবি করছেন, বিএসইসি এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতেও যাচ্ছে।

২০২০ সালে দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর সব শেয়ারের ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেয়া হয়। ওই বছরের মাঝামাঝি সময় থেকে বাজার চাঙা হয়ে উঠতে থাকলে ধীরে ধীরে সেই ফ্লোর প্রাইস তুলে দেয়া হয়।

তবে এবার সেই পথে না হাঁটার সিদ্ধান্ত জানিয়ে বিএসইসি চেয়ারম্যান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ফ্লোর প্রাইস দেয়ার কোনো ইচ্ছে নেই। বাজার যতটুকু পড়েছে, আবার দুই-এক দিনের মধ্যে ঠিক হয়ে যাবে।’

তিনি বলেন, ‘রোড শো করে বিদেশি বিনিয়োগ নিয়ে আসার চেষ্টা করছি। ছয় মাস ধরে চেষ্টা করে মার্কেটকে এই জায়গায় নিয়ে এসেছি। ফ্লোর প্রাইস দিলে বিদেশি বিনিয়োগকারী আসতে চায় না। এতে করে বিদেশি বিনিয়োগ কমে যায়। তারা মনে করে মার্কেট স্ট্যাবল নয়। তারা চায় একটা ফেয়ার মার্কেট।’

ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের সময়ে সার্কিট ব্রেকার ২ শতাংশে নামিয়ে আনার কারণেও অনেক বিদেশি বিনিয়োগ চলে গেছে বলে জানান শিবলী রুবাইয়াত। বলেন, ‘আনুমানিক ১২-১৩ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ চলে গেছে।’

‘এমনিতেই তো ৫ শতাংশ দিয়ে রেখেছি (এক দিনে দরপতনের সর্বোচ্চ সীমা, যা আগে ছিল ১০ শতাংশ)। এখন আবার ফ্লোর প্রাইস দিয়ে মার্কেট পিছিয়ে দিতে চাই না।’

পুঁজিবাজারে দরপতনের ক্ষেত্রে নতুন ইস্যু হিসেবে যোগ হয়েছে ডলারের বিপরীতে টাকার দরপতন। মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ছায়েদুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেছেন, ‘নতুন গুজব যোগ হয়েছে, অনেকেই নাকি শেয়ার বিক্রি করে দিয়ে ডলার কিনছে। কিন্তু আমার প্রশ্ন হচ্ছে, সবাই ডলার কিনতে গেলে এত ডলার পাবে কোথায়? আসলে পুঁজিবাজারে পতন শুরু হলেই অনেক গুজব ছড়ানো হয়, এর-ওর সঙ্গে মেলানো হয়। এখন বাজারের অবস্থা খারাপ, তাই নানা গুজব ঘুরছে চারদিকে। সেই গুজবেই পড়ছে বাজার।’

বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘বিভিন্ন নেগেটিভ নিউজ হচ্ছে, এটা ঠিক না। করোনা-পরবর্তী সময়ে উৎপাদনে ফেরার কারণে প্রতি মাসে আমদানি বেড়েছে।’

ডলারের দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে বিপুল পরিমাণ আমদানি ব্যয়ের বিষয়টি একটি কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। তবে আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি দেশের জন্য সব সময় খারাপ না বলেও মূল্যায়ন করেন বিএসইসি চেয়ারম্যান।

তিনি বলেন, ‘৫০ মিলিয়ন এক্সপোর্ট করতে দেখা যায় কম করে হলেও ৩০ মিলিয়নের সুতা, তুলা আমদানি করতে হচ্ছে। যার কারণে আমদানি ব্যয় বেড়েছে। কিন্তু এমন কিছু হয়নি, যেখানে ৪১, ৪২ বিলিয়ন ডলারের রিজার্ভ রয়েছে সেখানে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।’

বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশেও কী বার্তা থাকবে- এমন প্রশ্নে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। দেশের অর্থনৈতিক ভিত্তি অনেক এগিয়ে রয়েছে। অন্তত শেয়ার বাজারের জন্য নেতিবাচক কিছু ঘটার মতো হয়নি।’

এ বিভাগের আরো খবর