দেশের রেলখাত আধুনিকায়নে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) আরও ঋণ দিতে আগ্রহী বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। বলেছেন, রেলখাতে ঋণ দিতে এডিবি এক ধরনের ব্ল্যাঙ্ক চেক নিয়ে বসে আছে।
বৃহস্পতিবার পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের সঙ্গে সাক্ষাতে এডিবির প্রতিনিধি দল এ আগ্রহের কথা জানায়।
পরিকল্পনামন্ত্রীর কার্যালয়ে সাক্ষাতে বাংলাদেশ সফররত এডিবির ভাইস প্রেসিডেন্ট শিজিন চেন, এডিবির দক্ষিণ এশিয়া বিভাগের উপ-মহাপরিচালক মনমোহন প্রকাশ, কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিন্টিং, ঢাকা অফিসের বহিঃসম্পর্ক বিভাগের প্রধান গোবিন্দ বারসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘এডিবি রেল খাতে আরও বিনিয়োগ করতে চায়, এতে আমরা অনেক খুশি। রেলখাতে ঋণ দিতে এডিবি এক ধরনের ব্ল্যাঙ্ক চেক নিয়ে বসে আছে। আমরা যা চাইব তাই দেবে এডিবি। এডিবি বলেছে, আপনারা আসেন। যদি যুক্তিসঙ্গত প্রস্তাব নিয়ে আসেন, চাহিদা ফুলফিল করব। অবকাঠামো খাতে যা টাকা লাগবে তা দিতে রাজি এডিবি।’
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘রেলটাকে আমরা আধুনিক করতে চাই। ক্রমান্বয়ে মিটারগেজ রেলকে ডুয়েলগেজে রূপান্তর দিতে চাই। আমরা পর্যায়ক্রমে সব রেলপথকে প্রথমে ডুয়েল গেজ, পরে ব্রডগেজে রূপান্তর করা হবে। রেলপথ ডাবলগেজ করলে কোথাও আসা-যাওয়ার জন্য থামতে হবে না। সিগন্যালে পড়তে হবে না। এটা একটা বিশাল কাজ।
‘এখানে বিশাল বিনিয়োগের দরকার। এডিবির আছে, অভিজ্ঞতা আছে। আমরা এক সঙ্গে কাজ করব। রেলকে আরও এগিয়ে নেব।’
বাংলাদেশ কখনও ঋণের কিস্তি দিতে ব্যর্থ হয়নি জানিয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, ‘ঋণের কিস্তির বিষয়ে আমাদের কখনও রিমাইন্ডার দিতে হয়নি। কোভিডের সময় এডিবি আমাদের জরুরি সহায়তা দিয়েছে। এটা আমাদের খুবই প্রয়োজন ছিল। টিকা সংগ্রহ করতে এডিবি ঋণ দিয়েছে। শিক্ষা খাতেও এডিবি অনেক বড় অবদান রেখেছে। এ বছর বাজেট সহায়তা হিসেবে এডিবি ৫০ কোটি ডলার দেবে। আগামী বছরও একই পরিমাণে বাজেট সহায়তা করবে।’
এডিবির ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘সামাজিক নিরাপত্তা, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ অন্যান্য অবকাঠামো খাতে বাংলাদেশের পাশে থেকেছে এডিবি। আমরা রেলখাতে আরও বিনিয়োগে আগ্রহী। এ খাতকে ঢেলে সাজাতে হবে। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হচ্ছে, সে অনুপাতে রেলখাতকেও আধুনিক করতে হবে।’
দক্ষিণ এশিয়া বিভাগের উপ-মহাপরিচালক মনমোহন প্রকাশ বলেন, ‘রেলে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটকে ডাবল লাইন করতে হবে। এখানে আরও দ্রুতগতির রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রয়োজন। কারণ এ দুটি শহর দেশের অর্থনীতির লাইফলাইন। তবে এজন্য নারায়ণগঞ্জ হয়ে সরাসরি লাইন প্রয়োজন। তাহলে দূরত্ব ৩৩০ কিলোমিটার থেকে ২৩০ কিলোমিটারে নেমে আসবে। বুলেট ট্রেন নয়, দেড়শ কিলোমিটার গতির ট্রেন চললেও সময় লাগবে ৯০ মিনেটের কম।’