করোনা মহামারির ধাক্কা সামলাতে বাংলাদেশকে ২২০ কোটি (২.২০ বিলিয়ন) ডলার ঋণসহায়তা দিয়েছে ম্যানিলাভিত্তিক উন্নয়ন সংস্থা এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক-এডিবি।
বর্তমান বিনিময় হার (প্রতি ডলার ৮৬ টাকা ৪৫ পয়সা) হিসাবে টাকার অঙ্কে এই অর্থের পরিমাণ ১৯ হাজার ১৯ কোটি টাকা।
রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে সোমবার সফররত এডিবির ভাইস প্রেসিডেন্ট শিজিন চেনের সঙ্গে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের বৈঠকে এ তথ্য জানানো হয় বলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এডিবি করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে বাংলাদেশের সম্ভাব্য অর্থনৈতিক প্রভাব উত্তরণের লক্ষ্যে ১ বিলিয়ন ডলার বাজেট সহায়তা, কোভিড-১৯ রেসপন্স ইর্মাজেন্সি অ্যাসিসটেন্স শীর্ষক প্রকল্পে স্বাস্থ্যখাতে ১০ কোটি ডলার, কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ক্রয়ে ৯৪ কোটি ডলার ঋণ ও ৯৩ লাখ ৪০ হাজার ডলার অনুদান এবং দ্রুত অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার, কর্মসৃষ্টি, অভিবাসী শ্রমিকদের দক্ষতা উন্নয়নে ১৫ কোটি ডলার ঋণ দিয়েছে।
বৈঠকে অর্থমন্ত্রী করোনা মোকাবিলা এবং বাংলাদেশের উন্নয়নে অব্যাহতভাবে সহায়তার জন্য এডিবি ভাইস প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ জানান। এর ধারাবাহিকতায় এলডিসি (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্যও এডিবিকে সহযোগিতা প্রদানের অনুরোধ জানিয়েছেন মন্ত্রী।
বৈঠকে এডিবি ভাইস প্রেসিডেন্ট ও বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী সামগ্রিকভাবে উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জনে ভবিষ্যতে বাংলাদেশ ও এডিবির মধ্যে এ ধরণের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
মহামারি কাটিয়ে উঠতে বাংলাদেশের সামাজিক এবং অর্থনৈতিক নিরাপত্তা পুনরুদ্ধারে এডিবি শুরু থেকেই বাংলাদেশের পাশে থেকে সহযোগিতা করছে এবং ভবিষ্যতেও বাংলাদেশের পাশে থাকবে বলে আশা ব্যক্ত করেন এডিবির ভাইস প্রেসিডেন্ট শিজিন চেন।
এডিবি বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান উন্নয়ন সহযোগী। এ যাবৎ বাংলাদেশ সরকারকে ২৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণসহায়তা দিয়েছে সংস্থাটি। সহায়তার ক্ষেত্রে এডিবি প্রধানত বিদ্যুৎ, পানি সম্পদ, কৃষি, স্থানীয় সরকার, শিক্ষা, পরিবহন, জ্বালানি, সুশাসন, আর্থিক এবং বেসরকারি খাতকে প্রাধান্য দেয়।
বৈঠকে অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল এডিবি ভাইস প্রেসিডেন্টকে অবহিত করে বলেন, করোনার ক্ষতি দ্রুত কাটিয়ে উঠতে বাংলাদেশ ২২ বিলিয়ন ডলারের প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়ন করে চলেছে। যা জিডিপির ৬ দশমিক ২৩ শতাংশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার দক্ষ, যোগ্য ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বের মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
বৈঠকে অর্থ সচিব জনাব আব্দুর রউফ তালুকদার, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন এবং এডিবির ঢাকা অফিসের প্রধান মনমোহন প্রকাশ উপস্থিত ছিলেন।