পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বাংলাদেশ সফররত ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল, ইউএসএআইডির উপ-প্রশাসক ইসোবেল কোলম্যান এবং জনসংখ্যা, শরণার্থী ও অভিবাসন ব্যুরোর উপ-সহকারী সচিব স্কট টার্নার।
বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ী দল বাংলাদেশের আইটি, জ্বালানি ও আর্থিক খাতে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
সোমবার বিকেলে ঢাকায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের এক্সিকিউটিভ বিজনেস ডেলিগেশনের সঙ্গে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়িক প্রতিনিধি দলে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ, ডিজিটাল অর্থনীতি, আর্থিক পরিষেবা, আর্থিক প্রযুক্তি, ডিজিটাল পেমেন্ট, কৃষি, ভোগ্যপণ্য, স্বাস্থ্যসেবা, পানি, উদ্যোগের মূলধন এবং মহাকাশসহ বিভিন্ন সেক্টরের ২৭টিরও বেশি কোম্পানির নির্বাহীরা অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।
২০২১ সালের এপ্রিলে প্রতিষ্ঠার পর এটিই ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের প্রথম সফর। বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলে ছিলেন এনবিআর, বিডা, বেজা, এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ এবং ডি-৮ সিসিআই প্রতিনিধিরা। উভয় পক্ষের ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য, বাণিজ্যিক ও বিনিয়োগ সম্পর্ককে জোরদার করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বৈঠকটি হয়েছে দুই দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক সম্পর্ককে কেন্দ্র করে, যা পরবর্তী ৫০ বছরের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ভিত্তি স্থাপন করবে। কারণ বাংলাদেশ ‘সহায়তা-নির্ভর’ অর্থনীতি থেকে ‘বিনিয়োগ ও বাণিজ্য চালিত’ অর্থনীতিতে রূপান্তরিত হবে।
বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, বাংলাদেশে জ্বালানি, তেল, গ্যাস, খনিজসম্পদ ইত্যাদির মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতে যুক্তরাষ্ট্রের একটি শক্তিশালী বিনিয়োগ উপস্থিতি রয়েছে। কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ, অটোমোবাইল, জাহাজ নির্মাণ, ফার্মাসিউটিক্যালস, নবায়নযোগ্য শক্তি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এবং নীল অর্থনীতির মতো উদীয়মান ক্ষেত্রগুলোতেও যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ দরকার।
যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ী নেতারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে অর্থনৈতিক অগ্রগতির প্রশংসা করেছেন। ব্যবসায়িক প্রতিনিধি দল আইটি, জ্বালানি, আর্থিক পরিষেবা, প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
রোহিঙ্গা ফেরাতে আসিয়ানকে প্রভাবিত করতে পারে যুক্তরাষ্ট্র
ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের সঙ্গে বৈঠক শেষে বিকেলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইউএসএআইডির উপ-প্রশাসক ইসোবেল কোলম্যান এবং ইউএস ব্যুরো ফর পপুলেশন, রিফিউজিস অ্যান্ড মাইগ্রেশনের (পিআরএম) উপ-সহকারী সচিব স্কট টার্নারের সঙ্গে বৈঠক করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের প্রতি তাদের অব্যাহত সমর্থনের জন্য ইউএসএআইডিকে ধন্যবাদ জানান। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ৫০ বছরের কার্যকর ও শক্তিশালী অংশীদারত্বের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
তিনি ইউএসএআইডিকে উপকূলীয় বাঁধ পুনর্নির্মাণ ও বনায়নের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে একটি প্রকল্প শুরুর অনুরোধ জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্র মিয়ানমার সরকারকে তার নাগরিকদের ওপর নৃশংসতা বন্ধ করতে এবং রোহিঙ্গাদের নিজ ভূমিতে ফিরিয়ে নিতে রাজি করাতে আসিয়ান সদস্যদের প্রভাবিত করতে পারে।
ইসোবেল কোলম্যান মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত এতো বিপুলসংখ্যক মানুষকে আশ্রয় দেয়ায় বাংলাদেশের প্রশংসা করেন। তিনি ভাসানচরে প্রাথমিক শিক্ষা, জীবিকা, যোগাযোগ ও যাতায়াত সুবিধার ব্যবস্থা করার ওপর জোর দেন।