বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সূচক পাঁচ সপ্তাহের সর্বোচ্চ, লেনদেন তিন মাসের

  •    
  • ৯ মে, ২০২২ ১৪:৫৯

সোমবারের চেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছিল ৫১ কর্মদিবস আগে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি। সেদিন লেনদেন ছিল ১ হাজার ২১৩ কোটি ৬৪ লাখ ৪৫ হাজার টাকা।

দীর্ঘ মন্দা কাটিয়ে ঈদের আগের সপ্তাহে পুঁজিবাজারে ঘুরে দাঁড়ানোর যে ইঙ্গিত ছিল, সেটি ঈদের অবসর শেষে আরও স্পষ্ট হচ্ছে।

ঈদের ছুটি শেষে দুই দিনের সাপ্তাহিক বন্ধের আগে একটি মাত্র কর্মদিবসে লেনদেন কমে গেলেও রোববার লেনদেন হয় গত ৩১ মার্চের পর সর্বোচ্চ।

সোমবার সেটি আরও বেড়ে গত প্রায় তিন মাসের সর্বোচ্চ অবস্থানে গেল। দিন শেষে লেনদেন হয়েছে এক হাজার ২০৮ কোটি ৩১ লাখ ৮৭ হাজার টাকা।

এর চেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছিল ৫১ কর্মদিবস আগে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি। সেদিন লেনদেন ছিল ১ হাজার ২১৩ কোটি ৬৪ লাখ ৪৫ হাজার টাকা।

রোজা শুরুর আগের কর্মদিবস গত ৩১ মার্চের পর এই প্রথম লেনদেন হাজার কোটি টাকার ঘর ছাড়াল।

সূচকের অবস্থানও গত পাঁচ সপ্তাহের মধ্যে সর্বোচ্চ। দিনশেষে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে সার্বিক সূচক ডিএসইএক্সের অবস্থান ছিল ৬ হাজার ৬৯৮ পয়েন্ট, যা গত ৪ এপ্রিলের পর সর্বোচ্চ। সেদিন সূচক ছিল ৬ হাজার ৭১৮ পয়েন্ট।

২০২০ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে পুঁজিবাজারে যে চাঙাভাব দেখা যায়, তা চালু থাকে পৌনে দুই বছরেরও বেশি সময়। তবে গত সেপ্টেম্বরে বাজার সংশোধনে যাওয়ার পর দুই নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যে মতভিন্নতাসহ নানা ইস্যু সামনে আসে।

চলতি বছরের শুরুতে সংশোধন শেষে বাজারে আবার স্বাভাবিক গতি ফেরে কি না- এই আলোচনার মধ্যে আবার জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে বাজারে ধীরগতি দেখা দেয়।

২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রুশ হামলার পর ধস নামে। শ্রীলঙ্কায় অর্থনৈতিক সংকট তৈরি হলে পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়।

সে সময় ধস ঠেকাতে বাজারে বিনিয়োগ বাড়াতে বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে আলোচনা করে বিএসইসি। পাশাপাশি এক দিনে দর পতনের সর্বোচ্চ সীমা ২ শতাংশ নির্ধারণ করে দেয়া হয়।

তাৎক্ষণিকভাবে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর প্রমাণ হলেও পরে দেখা যায় ২ শতাংশের এই নির্দেশনার কারণে লেনদেন কমে যাচ্ছে। কারণ এই পরিমাণ দাম কমার পর ভালো কোম্পানির শেয়ারেরও ক্রেতা উধাও হয়ে যাচ্ছে।

এভাবে দিনের পর দিন দরপতন আর লেনদেন একপর্যায়ে ৪০০ কোটি টাকার নিচে নেমে আসার পর বিএসইসি গত ২০ এপ্রিল এক দিনে দরপতনের সীমা ২ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করে।

পর দিন থেকেই বাজারে লেনদেন বাড়তে থাকে। হাতে গোনা দুই-এক দিন কেবল কমে।

কোনো কোম্পানির ২ শতাংশ দরপতন পুঁজিবাজারে খুবই স্বাভাবিক একটি চিত্র। এমনটিও দেখা গেছে দাম কমার পর চাহিদা বাড়লে পরে আবার দর বাড়ে।

২ শতাংশের বাধা কাটার পর এভাবেই শেয়ারের কেনাবেচা বাড়ে। আর ক্রয়চাপ বাড়তে থাকলে শেয়ারদর, সূচক, লেনদেন সবই বাড়তে থাকে।

দিন শেষে বেড়েছে ২৪২টি কোম্পানির দর। বিপরীতে দর হারিয়েছে ৭৭টি কোম্পানির আর অপরিবর্তিত থাকে ৬১টির দর।

দর পতনের সর্বোচ্চ সীমা ৫ শতাংশের কাছাকাছি কমেছে কেবল দুটি কোম্পানি, যার একটির দর গত তিন মাসে আড়াই গুণ হয়ে গেছে।

সোমবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের লেনদেনের চিত্র

অন্যদিকে দিনের দর বৃদ্ধির সর্বোচ্চ সীমা ছুঁয়ে লেনদেন হয়েছে ছয়টি কোম্পানির। আগের দিন এই সংখ্যাটি ছিল আরও তিনটি বেশি।

ওষুধ ও রসায়ন, প্রকৌশল, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, বিমা, আর্থিক, তথ্যপ্রযুক্তি ও বিবিধ খাতে দেখা গেছে চাঙাভাব। তবে আকর্ষণীয় লভ্যাংশ ঘোষণা করা ব্যাংক খাতে বেশির ভাগ কোম্পানি দর হারিয়েছে।

পুঁজিবাজারের এই প্রবণতা নিয়ে এক্সপো ট্রেডার্সের সিইও শহিদুল হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, 'ঈদের পরে বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বেড়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা কিছু শেয়ার কিনছেন, ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদেরও অংশগ্রহণ বেড়েছে। যার কারণে শেয়ারের দাম অল্প পরিমাণ বেড়েছে। লেনদেনও বেশ ভালো হয়েছে।

তিনি বলেন, 'বাজার এখন স্বাভাবিক। আশা করা যায়, এই বিনিয়োগটা আরও কিছুদিন অব্যাহত থাকবে এবং বাজার ইতিবাচক থাকবে।'

সূচক বাড়াল যেসব কোম্পানি

সূচক সবচেয়ে বেশি ৫.৬২ পয়েন্ট বাড়িয়েছে আইসিবি। কোম্পানিটির শেয়ারদর ৬.০২ শতাংশ বাড়ায় সূচকে এই পয়েন্ট যোগ হয়েছে।

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২.৪ পয়েন্ট সূচক বেড়েছে রবির শেয়ারদর ১.২৬ শতাংশ বাড়ার কারণে।

তৃতীয় সর্বোচ্চ ১.২২ পয়েন্ট সূচক বাড়িয়েছে আরএকে সিরামিকস, যার শেয়ারদর বেড়েছে ৫.৫৪ শতাংশ।

এছাড়া একমি ল্যাবরেটরিজ ১.১৯ পয়েন্ট, ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো কোম্পানি ১.১১ পয়েন্ট, বার্জার পেইন্টস ১.০৭ পয়েন্ট, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি ০.৯৪ পয়েন্ট, এসিআই এবং এসিআই ফর্মুলেশন ও স্কয়ার ফার্মা ০.৯১ পয়েন্ট করে সূচক বাড়িয়েছে।

সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক বাড়িয়েছে ১৬.২৮ পয়েন্ট।

বিপরীতে সূচক সবচেয়ে বেশি ৩.০৯ পয়েন্ট কমেছে গ্রামীণ ফোনের দর ০.৬২ শতাংশ কমার কারণে।

পূবালী ব্যাংকের দর ৩.৬১ শতাংশ কমার কারণে সূচক কমেছে ১.১৮ পয়েন্ট।

তৃতীয় অবস্থানে থাকা বেক্সিমকো সূচক কমিয়েছে ১ পয়েন্ট। কোম্পানিটির শেয়ার দর কমেছে ০.৬৮ শতাংশ।

এছাড়া ইবিএল, ইউনিলিভার, বিকন ফার্মা, ব্র্যাক ব্যাংক, জেনেক্সিল ও ইউসিবি ব্যাংক সূচক নিচের দিকে টেনে ধরায় মুখ্য ভূমিকায় ছিল।

সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক কমিয়েছে ৯ পয়েন্ট।

দর বৃদ্ধির শীর্ষে যারা

এক দিনে দর বৃদ্ধির সর্বোচ্চ সীমা ১০ শতাংশ ছুঁয়ে লেনদেন হয়েছে মোট পাঁচটি কোম্পানির দর।

এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৯.৯৯ শতাংশ দর বেড়েছে এসিআই ফর্মুলেশনের দর। আগের দির দর ছিল ১৬৯ টাকা ১০ পয়সা। দিন শেষে দর দাঁড়িয়েছে ১৮৬ টাকা।

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৯.৯৭ শতাংশ বেড়েছে ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্সের দর।

তৃতীয় অবস্থানে থাকা শাইনপুকুর সিরামিকসের দর বেড়েছে ৯.৯৪ শতাংশ। কোম্পানিটির দর পর পর তৃতীয় দিন দর বৃদ্ধির সর্বোচ্চ সীমা ছুঁয়েছে।

এছাড়া ন্যাশনাল ফিডমিল, ইস্টার্ন হাউজিং ও সিভিও পেট্রোক্যামিকেলসের দর বেড়েছে ৯ শতাংশের বেশি।

শীর্ষ দশে থাকা এপেক্স ট্যানারির দর ৮.৯৯ শতাংশ, লোকসানি ইউনিয়ন ক্যাপিটালের দর ৮.৩৩ শতাংশ, বিডি থাই অ্যালুমিনিয়ামের দর ৬.৭৪ এবং এডিএন টেলিকমের দর বেড়েছে ৬.৭৪ শতাংশ।

শীর্ষ দশের বাইরে আরও চারটি কোম্পানির দর ৬ শতাংশের বেশি, ৭টি কোম্পানির দর ৫ শতাংশের বেশি, আরও ৭টির দর ৪ শতাংশের বেশি এবং ১৫টির দর বেড়েছে ৩ শতাংশের বেশি।

দর পতনের শীর্ষ ১০

পর পর দ্বিতীয় দিন এই তালিকার শীর্ষে দেখা গেছে ইমাম বাটন, যার দর কমেছে ৪.৯২ শতাংশ।

দিনে দরপতনের সর্বোচ্চ সীমা ছুঁয়ে লেনদেন হয়েছে আইসিবি ইসলামী ব্যাংকেরও। ৪ টাকা ৪০ পয়সার শেয়ারটির দর সর্বোচ্চ ২০ পয়সা কমার সুযোগ ছিল। কমেছেও ততটাই। শতকরা হিসেবে দর কমেছে ৪.৫৪ শতাংশ।

অন্য আটটি কোম্পানির মধ্যে পাঁচটি কোম্পানির দর কমেছে ৩ শতাংশের বেশি। এগুলো হলো পূবালী ব্যাংক, জেনেক্সিল ইনফোসিস, কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজ, নাহি অ্যালুমিনিয়াম, মেঘনা পেট ইন্ডাস্ট্রিজ।

দর পতনের শীর্ষ দশের অন্য দুটি কোম্পানি হলো আইপিডিসি ও লাভোলো আইসক্রিম।

আরও দুটির দর ২ শতাংশের বেশি এবং ২০টির দর কমেছে এক শতাংশের বেশি।

এ বিভাগের আরো খবর