বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

এরদোয়ানের ‘অদ্ভুত’ আর্থিক নীতিতে ধুঁকছে তুরস্ক

  •    
  • ৫ মে, ২০২২ ২১:৫২

জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান ব্যয়ের সংকট মোকাবিলায় এখন অনেক দেশই লড়াই করছে। তবে তুরস্কের পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠেছে দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ানের একটি সিদ্ধান্তে। তিনি সুদের হার বাড়ানোর বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।

অনেক দিন ধরেই মুদ্রাস্ফীতিতে ধুঁকছে তুরস্ক। নিত্যপ্যণের দাম আকাশছোঁয়া। দেশটির সরকার বলছে, গত এক বছরে ভোগ্যপ্যণের দাম প্রায় ৭০ শতাংশ বেড়েছে।

পরিবহন, খাদ্য এবং গৃহস্থালির আসবাবপত্রের দাম বার্ষিক মুদ্রাস্ফীতিতে রেকর্ড গড়েছে। এক বছরে পরিবহন খরচ বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি।

জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান ব্যয়ের সংকট মোকাবিলায় এখন অনেক দেশই লড়াই করছে। তবে তুরস্কের পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠেছে দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ানের একটি সিদ্ধান্তে। তিনি সুদের হার বাড়ানোর বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। সুদের হার বাড়ানোর মাধ্যমে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা হয় অনেকটায়।

খাদ্য এবং নন-অ্যালকোহলযুক্ত পানীয়ের দাম বছরে বেড়েছে ৮৯ দশমিক ১ শতাংশ। আসবাবপত্র এবং গৃহস্থালির সরঞ্জামে বেড়েছে ৭৭ দশমিক ৬৪ শতাংশ।

টার্কিশ পরিসংখ্যান ইনস্টিটিউটের তথ্য বলছে, এপ্রিলে দাম বেড়েছে ৭ দশমিক ২৫ শতাংশ।

তুরস্ক মুদ্রা লিরার দাম পড়ে যাওয়ার বিষয়টি সবার জানা। আর এর কারণ প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান মুদ্রার স্থিতিশীলতার চেয়ে রপ্তানিকে অগ্রাধিকার দিতে থাকেন।

তুর্কি প্রেসিডেন্ট সুদের হারকে ‘সব মন্দের বাবা-মা’ বলে বর্ণনা করেছেন। ভোগ্যপণ্যের মূল্য কমানোর জন্য তিনি বৈদেশিক মুদ্রার বাজারে হস্তক্ষেপসহ অপ্রথাগত কিছু নীতিও প্রয়োগ করেছেন।

এরদোয়ানের চাপে গত সেপ্টেম্বরে সুদের হার ১৯ থেকে ১৪ শতাংশে নামিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এপ্রিলে ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি সত্ত্বেও সিদ্ধান্তে অটল আছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট।

ইস্তাম্বুলের বাসিন্দা সাবেক স্বাস্থ্যকর্মী তুবা ক্যানপোলাট। তিনি বলেন, কেবল স্বামীর বেতন দিয়ে সংসার চালাতে খুব কষ্ট হচ্ছে। আমার স্বামী নির্মাণ শ্রমিক।’

তিন মাসের মাতৃত্বকালীন ছুটি কাটিয়ে চাকরিতে ফিরতে চেয়েছিলেন তুবা। কিন্তু সন্তানের দেখভালের জন্য বাড়তি খরচ জোগাড় করা তাদের পক্ষে সম্ভব না। তাই আর কাজে ফেরেননি তুর্কি এই নারী।

নিত্যপ্যণের দাম আকাশছোঁয়া হওয়ায় সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন তুবা। ছবি: সংগৃহীত

তুবা বলেন, ‘তুরস্কে যাকে আমরা বেকারত্বের সুবিধা বলি সবই পাচ্ছি। তবে এই সুবিধা এতই কম যে বাচ্চার মাসিক ডায়াপারের চাহিদাও পূরণ হয় না এতে।

‘অনলাইনে করা যায় এমন ছোটখাটো চাকরি খুঁজছি। তবে এখন আমাদের পক্ষে ৫ হাজার লিরার বেতনে জীবনযাপন করা সম্ভব নয়। বাড়ি ভাড়াই ৩ থেকে ৪ হাজার লিরা।’

তুবা আরও বলেন, ‘বাচ্চার জন্য সস্তায় ন্যাপি কিনতে বাধ্য হচ্ছি। এখন খাবারের খরচ বেড়ে যাওয়ায় ন্যাপি বদল করছি অনেক পর পর।

‘আমরা আর পারছি না। বেঁচে আছি আসলে পরিবারের সমর্থনে।’

‘অদ্ভুত আর্থিক নীতি’

রেনেসাঁ ক্যাপিটালের গ্লোবাল চিফ ইকোনমিস্ট চার্লি রবার্টসন বলছেন, ‘ইউক্রেনের যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট ব্যাঘাত খাদ্যের দামসহ উচ্চমূল্যের অন্যতম কারণ। তবে তুরস্কের মুদ্রাস্ফীতির কারণ তাদের ‘অদ্ভুত আর্থিক নীতি’।

তবে ক্যাপিটাল ইকোনমিকসের উদীয়মান বাজার অর্থনীতিবিদ জেসন টুভে বলছেন, ‘সুদের হারে পরিবর্তন কিংবা সুদের হার বাড়াতে চলেছেন এমন কোনো লক্ষণ নেই নীতিনির্ধারকদের মধ্যে। তাই এ বছরের বেশির ভাগ সময় মুদ্রাস্ফীতি উচ্চহারের কাছাকাছি থাকতে পারে।’

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ান। ছবি: সংগৃহীত

করোনার কারণে সরবরাহে ঘাটতি এবং ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে জ্বালানি এবং খাদ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। এতে বিশ্বজুড়ে দাম বাড়ছে দ্রুত।

অনেক দেশ মুদ্রাস্ফীতি কমানোর লক্ষ্যে সুদের হার বাড়িয়েছে। তাদের ধারণা, এতে করে খরচ কমবে।

ব্যাংক অফ ইংল্যান্ড ২০০৯ সাল থেকে সর্বোচ্চ স্তরে সুদের হার বাড়ায়। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ বুধবার দুই দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বড় হার বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছে। ভারত, অস্ট্রেলিয়াসহ অনেক দেশ বাড়িয়েছে ঋণের খরচ।

এ বিভাগের আরো খবর