বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বড় বাজেটে এবারও রাজস্বে ‘উচ্চাভিলাষী’ লক্ষ্যমাত্রা

  •    
  • ৩ মে, ২০২২ ১৫:১৪

আসন্ন অর্থবছরে এনবিআরকে ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয় করতে বলা হবে। এটি চলতি অর্থবছরের মূল লক্ষ্যমাত্রা থেকে প্রায় ১১ শতাংশ এবং সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা থেকে ২১ শতাংশ বেশি।

সময়টা কঠিন। একদিকে বিশ্ব অর্থনীতিতে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের প্রভাব, অন্যদিকে অতিমারি করোনা পিছু ছাড়েনি এখনও। এমন প্রতিকূল পরিবেশে জুনের ৯ তারিখে নতুন বাজেট দিতে যাচ্ছে সরকার।

আসন্ন ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে অর্থায়ন নিশ্চিত করাই হবে বড় চ্যালেঞ্জ। আর অর্থায়নের বড় উৎস হচ্ছে অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণ তথা রাজস্ব আয়। এই আদায়ের জন্য এনবিআরের ওপরই ভর করতে হচ্ছে সরকারকে।

অর্থ মন্ত্রণালয় ও এনবিআরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগামী অর্থবছরের জন্য রাজস্ব আদায়ের আরেকটি ‘উচ্চাভিলাষী’ লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেয়া হচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর)।

আসন্ন অর্থবছরে এনবিআরকে ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয় করতে বলা হবে। এটি চলতি অর্থবছরের মূল লক্ষ্যমাত্রা থেকে প্রায় ১১ শতাংশ এবং সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা থেকে ২১ শতাংশ বেশি।

চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আহরণের মূল লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। ঘাটতির কারণে পরে মূল লক্ষ্যমাত্রা থেকে ৯ শতাংশ বা ২৫ হাজার টাকা কমিয়ে সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ২ লাখ ৯৫ হাজার কোটি টাকা।

অবশ্য এনবিআর কোনো বছরেই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারে না। প্রতি বছরই সংশোধন করে কমাতে হয়। শেষ পর্যন্ত সেই সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রাও অর্জন করা সম্ভব হয় না।

গত অর্থবছরে আদায় হয় প্রায় ২ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা। ঘাটতি হয়েছিল প্রায় ৪১ হাজার কোটি টাকা।

আগামী বাজেটের জন্য প্রস্তাবিত লক্ষ্যমাত্রাকে ‘অত্যন্ত উচ্চাভিলাষী’ হিসেবে অভিহিত করে রাজস্ব বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, বাজেটে সরকার বেশি ব্যয় করার লক্ষ্য নিয়ে রাজস্ব আয়ের উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করতে যাচ্ছে, যার সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই।

এত বেশি শুল্ক-কর আদায়ে এনবিআরের যেমন সক্ষমতা নেই, তেমনি অর্থনীতিতেও সেই পরিস্থিতি নেই। বাস্তবতার সঙ্গে সামাঞ্জস্য রেখে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের পরামর্শ দেন তারা।

বাজেট প্রণয়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘করোনা সংকট কাটিয়ে দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্য আগের জায়গায় ফিরেছে। এটি রাজস্ব আয়ে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। আশা করছি , নতুন অর্থবছরও এ ধারা অব্যাহত থাকবে এবং আদায় আরও বাড়বে।’

এনবিআরের সর্বশেষ পরিসংখ্যানে দেখা যায়, মার্চ পর্যন্ত রাজস্ব আহরণে প্রবৃদ্ধি ১৬ শতাংশের ওপরে, যা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সর্বোচ্চ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজস্ব বোর্ডের এক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পয়লা বৈশাখ ও ঈদ উৎসবকে কেন্দ্র করে অভ্যন্তরীণ অর্থনীতি চাঙা হয়ে উঠেছে। এ ছাড়া আমদানিও বেড়েছে। এসব কারণে সামনের মাসগুলোতে আদায় আরও বাড়বে এবং অর্থবছর শেষে লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি অর্জন সম্ভব হবে।’

জাতীয় বাজেটে অর্থায়নের সবচেয়ে বড় জোগানদাতা সংস্থা জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। এই সংস্থাটি মোট অর্থায়নের ৮৫ শতাংশ জোগান দেয় মূল্য সংযোজন কর, আয়কর ও আমদানি শুল্ক থেকে । এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থ ৩৯ শতাংশ আসে মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট থেকে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্পদ কমিটি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) জন্য রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে। গত মার্চে অনুষ্ঠিত বৈঠকে আগামী অর্থবছরের জন্য ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা প্রাক্কলনের প্রস্তাব করা হয়েছে।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী অর্থবছরে সর্বোচ্চ ১ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকা আদায় করতে হবে ভ্যাট বিভাগকে। এ ছাড়া আয়কর বিভাগকে ১ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা এবং শুল্ক বিভাগকে ১ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা আদায় করতে হবে।

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পিআরআই ও আইএমএফের সাবেক কর্মকর্তা ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘প্রতি বছর বাজেটে এনবিআরকে যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেয়া হয়, এটি তা কখনই অর্জন করতে পারেন না। এমনকি সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা পূরণেও ব্যর্থ হয় সংস্থাটি। এর প্রধান কারণ হচ্ছে অবাস্তব লক্ষ্যমাত্রা।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতির যে আকার, তার সঙ্গে রাজস্ব আহরণ সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। রাজস্ব আয়ের যথেষ্ট সুযোগ আছে। কিন্তু এনবিআরের সক্ষমতার প্রচণ্ড ঘাটতি আছে। কাঙ্ক্ষিত আদায় বাড়াতে রাজস্ব বোর্ডকে ঢেলে সাজাতে হবে।’

করোনার মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) রাজস্ব আহরণের প্রবৃদ্ধি সন্তোষজনক হলেও সংস্থাটি তার লক্ষ্য থেকে অনেক পিছিয়ে এখনও। চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে পৌনে ২ লাখ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় হয়েছে।

এ বিভাগের আরো খবর