বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ঈদে কেমন চলছে লুঙ্গির বাজার

  •    
  • ২৯ এপ্রিল, ২০২২ ১৯:৪০

জাকের সুপার মার্কেটের থ্রি স্টার গার্মেন্টস অ্যান্ড হোসিয়ারির দোকানের তারা মিয়া বলেন, ‘স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণ লুঙ্গি বিক্রি হচ্ছে। অনেকে জাকাতের লুঙ্গি কিনছেন। গত দুই বছর তো করোনার কারণে ঈদের সময় বেচাবিক্রি হয়নি।’

অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম। রাজধানীর পুরান ঢাকার আজহার মার্কেটে এসেছেন লুঙ্গি কিনতে। চারটি লুঙ্গি কিনবেন তিনি। কিন্তু দাম একটু বেশিই মনে হচ্ছে তার।

রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘অবসর নেয়ার পর সব সময়ই বাসাতেই থাকি। বাসায় লুঙ্গিতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। এ জন্য একবারে চারটি লুঙ্গি কিনতে এসেছি। কিন্তু অন্যান্যবারের চেয়ে এবার দাম বেশি। আগে যে লুঙ্গি ৩৫০ টাকায় কিনেছি, এখন সেটা ৪০০ টাকার নিচে কিনতে পারছি না।’

দাম বাড়ার বিষয়টি স্বীকার করেন দোকানি সোহেল হোসেন। বলেন, ‘সুতার দাম বেড়েছে। পাশাপাশি রঙের দামও বাড়তি। এ জন্য আগের দামে লুঙ্গি তারা কিনতে পারছেন না। বাড়তি টাকা গুনতে হচ্ছে। ফলে ক্রেতাদেরও বাড়তি দাম গুনতে হবে।’

আর দুদিন পরেই ঈদ। রাজধানীর বিভিন্ন বিপণিবিতানে ক্রেতার ভিড়।

রাজধানীর পুরান ঢাকা, গুলিস্তান, ফুলবাড়িয়ার বিভিন্ন পাইকারি ও খুচরা মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, ঈদে নতুন লুঙ্গির বিক্রিও মন্দ না। বাজারে এখন বিপুলসংখ্যক ব্র্যান্ডের লুঙ্গির মধ্যে প্রতিযোগিতা। সোনার বাংলা টেক্সটাইল, এটিএম লুঙ্গি, ডিসেন্ট, ইউনিক, প্রাইড, স্ট্যান্ডার্ড, আমানত শাহ, রোহিতপুরী, স্মার্ট, সম্রাট, অমর, পাকিজা, ইউনিক, বোখারি, ফজর আলী, অমর, অনুসন্ধান, তামাই, জেএম, স্কাই, ওয়েস্ট, রংধনুসহ ১২৫ ব্র্যান্ডের লুঙ্গি বাজারে বিক্রি হচ্ছে। মানভেদে এসব লুঙ্গির দাম ২০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা।

গতানুগতিক ডিজাইন থেকে সাম্প্রতিক সময়ে পরিবর্তন এসেছে লুঙ্গি বাজারে। আকর্ষণীয় করতে ডিজাইনে ভিন্নতা আনা হয়েছে। এসব লুঙ্গির বেশির ভাগই সুতি। পাঁচ থেকে ছয় হাত লম্বা এসব লুঙ্গি বেশির ভাগই সেলাই করা বিক্রি হয়।

জাকের সুপার মার্কেটের থ্রি স্টার গার্মেন্টস অ্যান্ড হোসিয়ারির দোকানের তারা মিয়া বলেন, ‘স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণ লুঙ্গি বিক্রি হচ্ছে। অনেকে জাকাতের লুঙ্গি কিনছেন। গত দুই বছর তো করোনার কারণে ঈদের সময় বেচাবিক্রি হয়নি। তবে এ বছর ভালো বিক্রি হচ্ছে।’

ফুলবাড়িয়া সুপার মার্কেটের হাবিব ট্রেডার্সের সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘লুঙ্গিতে আনা হয়েছে বিভিন্ন ডিজাইন। মানের কারণে সব বয়সী মানুষের দৃষ্টি কাড়ছে। এখন ক্রেতারা লুঙ্গি কেনার ক্ষেত্রে ব্যান্ডকে প্রাধান্য দেন। নরসিংদী, পাবনা ও সিরাজগঞ্জ জেলায় সবচেয়ে বেশি লুঙ্গি তৈরি হয়। এসব বাজার থেকেই সারা দেশের পাইকারি ব্যবসায়ীরা লুঙ্গি কিনে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করেন।’

ভাই-ভাই ফেব্রিক্সের সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘বর্তমানে রং, সুতার দাম বেড়ে গেছে। এ জন্য কাপড়ের দামও কিছুটা বেড়েছে। পাশাপাশি কেমিক্যালের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে লুঙ্গি তৈরির খরচ বেড়েছে।’

জাকের মার্কেটের শিরিনা মশারি স্টোরের দোকানি জানান, সাধারণত রোজার ঈদে মানুষ জাকাত হিসেবে অনেকে শাড়ি-লুঙ্গি কেনেন। এ জন্য এটার অনেক চাহিদা থাকে। কিন্তু করোনার কারণে অনেকে পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে গেছে। যেসব তাঁতির কাছে লুঙ্গি অর্ডার করা হতো, তাদের অনেকে এখন এই কাজ করে না। তাঁতির সংখ্যা কমে যাওয়ায় অল্প কিছু লোক দিয়ে কাজ চালাচ্ছেন তাঁতমালিকরা। ফলে চাপ বাড়ছে।

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল ও নরসিংদী জেলার তাঁতমালিকদের কাছে অর্ডার দিয়ে লুঙ্গি তৈরি করিয়ে আনেন ঢাকার ব্যবসায়ীরা। পরে নিজেদের প্রতীক বা স্টিকার লাগিয়ে ওই লুঙ্গি বাজারজাত করেন।

প্রস্তুতকারকরা জানিয়েছেন, বর্তমানে সুতাসহ বিভিন্ন উপকরণের দাম বেড়েছে। সাড়ে আট বান্ডিল সুতার দাম ২৩ হাজার টাকা, আগে তা ছিল ১৩ হাজার টাকা। কাপড়ের দামও বেড়েছে। ৮০০ টাকা দামের প্রতি থান বা চারটি লুঙ্গির দাম বেড়েছে মাত্র ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। ফলে লুঙ্গি কিনতে তাদেরও বেশি টাকা গুনতে হচ্ছে।

এ বিভাগের আরো খবর