চলতি মূলধন ঋণসীমা বাড়ানোর সুযোগ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে এ ঋণ সীমা বাড়াতে পারবে।
অর্থাৎ কোনো গ্রাহকের চলতি মূলধন ঋণসীমা যেটা নির্ধারণ করা থাকে, চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংকগুলো এখন ওই গ্রাহককে সীমার বেশি ঋণ দিতে পারবে।
তবে ঋণ ঝুঁকি বিবেচনা ও গ্রাহকের আর্থিক সক্ষমতা যাচাই করতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়ায় এই পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করে সব তফসিলী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়।
সার্কুলারে বলা হয়, আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালসহ বিভিন্ন উপকরণের মূল্য এবং পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় উৎপাদন ব্যয় বাড়ছে। এ কারণে ব্যাংকগুলোর চলতি মূলধন ঋণসীমার সর্বোচ্চ ব্যবহার সত্ত্বেও চাহিদা মোতাবেক প্রয়োজনীয় কাঁচামালের মূল্য পরিশোধসহ উৎপাদন কার্যক্রম করা সম্ভব হচ্ছে না। এতে করে উৎপাদন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আমদানি-রপ্তানিসহ চলমান অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের গতিশীলতা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এমন প্রেক্ষাপটে, উৎপাদন কার্যক্রম চলমান রাখা এবং আমদানি-রপ্তানিসহ দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের গতিশীলতা বজায় রাখার জন্য চলতি মূলধন ঋণসীমা প্রয়োজন অনুযায়ী যৌক্তিক পর্যায়ে বৃদ্ধির জন্য নির্দেশনা পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
গত ৩১ মার্চ চলতি মূলধন ঋণসীমা অন্তত ৪০ শতাংশ বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংককে বিশেষ অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দেয় ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন বা এফবিসিসিআই।
চিঠিতে এফবিসিসিআই জানায়, করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালসহ অন্যান্য পণ্যের মূল্য ও জাহাজ ভাড়া প্রতিনিয়ত বাড়ছে। কাঁচামাল, শিপিং, যাবতীয় লেনদেন চার্জসহ অন্যান্য খরচ বাড়ার কারণে দেশের উৎপাদন ও ব্যবসা-বাণিজ্যের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম বাড়ার কারণে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনায় ব্যাঘাত ঘটছে।
কাঁচামালের দাম বাড়ার কারণে ব্যবসায়ীদের ঋণসীমা উত্তীর্ণ হয়ে গেছে। ফলে আমদানিকারক ও রপ্তানিকারক উভয়ই স্বাভাবিক ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করতে পারছেন না। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় মূলধন সীমা বাড়ানোর বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের হস্তক্ষেপ জরুরি।