হলমার্কের ঋণ কেলেঙ্কারি কাঁপিয়ে দিয়েছিল সোনালী ব্যাংকের ভিত। ঋণের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা তছরুপ করে নেয়ায় সংকটে পড়ে যায় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকটি। সেই ঘটনার প্রায় ১০ বছর পর এসে আশার কথা শোনালেন ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আতাউর রহমান প্রধান। তিনি বলেছেন, আগামী বছরেই এই ঋণ জালিয়াতি ঘটনার পরিসমাপ্তি ঘটবে।
রাজধানীর মতিঝিলে সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন প্রতিশ্রুতি দেন।
হলমার্কের ঋণ জালিয়াতির খবর প্রথম প্রকাশ পায় ২০১২ সালে। হলমার্কসহ পাঁচটি প্রতিষ্ঠান সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা (হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল) শাখা থেকে ঋণের নামে ৩ হাজার ৬০৬ কোটি ৪৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়।
আলোচিত হলমার্ক ঋণ জালিয়াতির হোতা প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর মাহমুদ। তবে এর সঙ্গে সোনালী ব্যাংকের বেশ কিছু ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাও জড়িত ছিলেন। এ ঘটনায় ২০১২ সালের ৪ অক্টোবর রমনা থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
এই বিপুল পরিমাণ ঋণের টাকা পুনরুদ্ধার সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তরে সোনালী ব্যাংকের এমডি বলেন, ‘আগামী বছরের মধ্যে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা উদ্ধার হয়ে যাবে বলে আমরা প্রত্যাশা করছি।’
আতাউর রহমান জানান, হলমার্ক কেলেঙ্কারির পর ব্যাংকটির আইনি কাঠামো জোরালো করা হয়েছে। হলমার্ক-পরবর্তী সময়ে ভালোভাবেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে ব্যাংকটি। এ ধরনের দুর্ঘটনা ব্যাংকটিতে আর ঘটেনি। তবে মূলধন ঘাটতির কারণে রাষ্ট্রায়ত্ত এ ব্যাংকের আন্তর্জাতিক ব্যবসা ও লেনদেন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সোনালী ব্যাংকের এমডি বলেন, দেশের সবচেয়ে বড় এ ব্যাংকের আমানতের পরিমাণ এখন ১ লাখ ৩১ হাজার ৫৯০ কোটি টাকা। এর বিপরীতে ঋণ রয়েছে ৬৯ হাজার ১১ কোটি টাকা। খেলাপি ঋণের হার ১৬ শতাংশ। চলতি বছরের মার্চে ব্যাংকটির ৫৬৮ কোটি টাকা পরিচালন মুনাফা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘করোনার মধ্যে সোনালী ব্যাংক তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারে ব্যাপক এগিয়েছে। আগামী দিনে গ্রাহকসেবার মান বাড়াতে প্রযুক্তির ব্যবহারে আরও বেশি জোর দেয়া হচ্ছে।’