পদ্মা সেতু নির্মাণের পর পাটুরিয়া-গোয়ালন্দ রুটে দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে চায় সরকার। তবে এ রুটে সেতুর পরিবর্তে টানেল নির্মাণ করার পক্ষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। এতে নদী ও পরিবেশ বাঁচবে বলে মনে করেন তিনি।
শেরে বাংলা নগরের মঙ্গলবার এনইসি সম্মেলন কক্ষে ডেভলপমেন্ট জার্নালিস্ট ফোরাম অফ বাংলাদেশ (ডিজেএফবি) আয়োজিত ইফতার অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘পদ্মার দ্বিতীয় সেতু জায়গায় আমি টানেল নির্মাণের পক্ষে। কারণ টানেল একদিকে ব্যয় সাশ্রয়ী। আবার নদীর বুকে ব্রিজ নির্মাণের কারণে নদী ও পরিবেশের যে ক্ষতি হয় তাও হবে না। এ জন্য সেতুর চেয়ে টানেল নির্মাণ ভালো।
‘দ্বিতীয় যমুনা সেতুর জায়গায়ও টানেল হলে ভালো হয়। সেতুর বদলে এসব স্থানে টানেল নির্মাণ করা যায় কি না চিন্তা করা দরকার। প্রধানমন্ত্রীর খুব ইচ্ছা এখানে কিছু হোক। আপনারা প্রধানমন্ত্রীর ওপর ভরসা রাখেন, এখানে টানেল বা সেতু হবে।’
দেশের চলমান উন্নয়ন প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘দেশের যারা মালিক, জনগণ, তাদের কাছে বিষয়টি পরিষ্কার। দেশে এখন উন্নয়ন খুবই জরুরি। উন্নয়নই মৌলিক, উন্নয়নই ভিত্তি। সংস্কৃতি, রাজনীতি যাই কিছু হোক না কেন উন্নয়ন সবার চায়। সবার মধ্যে একটু পরিবর্তন এসেছে কেউ হানাহানি চায় না সবাই উন্নয়ন চায়। আগামীতে আরও উন্নয়ন হবে।
‘গ্রামের মানুষ এখন একনেক সম্পর্কে জানে। তারা মঙ্গলবার সম্পর্কে জানতে চায়। সাধারণত একনেক সভা মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। তারা আমাকে জিজ্ঞেস করে মঙ্গলবার কী কী প্রকল্প পাশ হবে। কোন মন্ত্রীর কি হলো, কোন মন্ত্রী মরে গেল না বেঁচে গেল এটা নিয়ে তাদের আগ্রহ নেই। মানুষের আগ্রহ এখন উন্নয়ন নিয়ে।’
গণমাধ্যম, আমলা, মন্ত্রী সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে বলে মনে করেন এম এ মান্নান। তিনি বলেন, ‘দেশের উন্নয়নে আরও বেশি করে কাজ করতে হবে। পরিকল্পিত উন্নয়ন হয়েছে বলেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের অর্থনীতি শক্ত ভিতের ওপর দাঁড়িয়েছে।’
পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, ‘বাংলাদেশ কোনোদিনও শ্রীলঙ্কা হবে না। কেননা আমরা এখনো ঋণ সীমার অনেক নিচে আছি। শ্রীলঙ্কার হাম্মাম টোটা বন্দর তৈরি হয়েছে অপরিকল্পিত ভাবে। ফলে তাদের চীনের কাছে ৯৯ বছরের জন্য লিজ দিতে হয়েছে।
‘আমাদের জিডিপির আকার অনেক বড়। আমাদের প্রকল্পগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ফলে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে তুলনা করে কেউ ফায়দা হাসিলের চেষ্ট করছে, যা মোটেই ঠিক নয়।’
পরিকল্পনা বিভাগের সচিব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, ‘উন্নয়ন প্রকল্প নেয়ার ক্ষেত্রে আমরা সতর্ক রয়েছি। জনগণের প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। অপ্রয়োজনীয় কোনো ব্যয় সরকার করে না। গণমাধ্যমও দেশের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। ভুলত্রুটি যেমন ধরিয়ে দেয়া গণমাধ্যমের দায়িত্ব, তেমনি ভালো কাজগুলো তুলে ধরাও দায়িত্ব।’
পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব শাহনাজ আরেফিন বলেন, ‘যে উন্নয়ন টেকসই নয়, সেটি কোনো উন্নয়নই নয়। তাই সরকার টেকসই উন্নয়ন করে যাচ্ছে। এ দেশ এককভাবে আমলার, রাজনীতিবিদের বা সাংবাদিকদের নয়। এই দেশ সবার। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মতো সবাইকে উন্নয়নে সামিল হতে হবে।’
ডিজেএফবির সভাপতি হামিদ-উজ-জামানের সভাপতিত্বে ইফতার মাহফিলে অংশ নেন সংগঠনের সহসভাপতি মাসুম বিল্লাহ, সাধারণ সম্পাদ সাহনেওয়ার সহিদ শাহীন, যুগ্মসম্পাদক মফিজুল সাদিক।