ঈদের পর ভোজ্যতেলের নতুন দাম নির্ধারণের ঘোষণা ছিল আগেই। এর আগ পর্যন্ত আমদানিকারক ও মিলারদের প্রতিশ্রুতি ছিল বাজারে সরবরাহ পরিস্থিতি ঠিক রাখাসহ মিলগেটে সরকার নির্ধারিত বর্তমান দাম বহাল রাখার। অথচ ঈদের সপ্তাহ দেড়েক আগেই বাজারে সরবরাহ কমিয়ে ভোজ্যতেলের দাম বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ভোজ্যতেলের সরবরাহ পরিস্থিতি যাচাইয়ে আজ বুধবার মিলগুলোতে পুনরায় অভিযান শুরু করতে যাচ্ছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
রাজধানীসহ সারাদেশে বোতলজাত ও খোলা সয়াবিন এবং পাম অয়েলের এক ধরনের কৃত্রিম সংকট তৈরি হয়েছে। এতে ভোক্তাদের বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে ভোজ্যতেল।
খুচরা বিক্রেতাদের অভিযোগ, বেশি দামে তেল বিক্রির জন্য মিলাররা কৃত্রিম সংকট তৈরি করছেন।
অন্যদিকে কোথাও কোথাও খুচরা বিক্রেতারাও বাড়তি মুনাফার চেষ্টা করছেন। বোতলজাত সয়াবিন তেলের ক্ষেত্রে মূল্য নির্ধারণ করে দেয়ায় কোথাও কোথাও বোতলজাত ভোজ্যতেল পাওয়া যাচ্ছে না। ব্যবসায়ীরা বোতল থেকে ঢেলে খোলা অবস্থায় লিটারপ্রতি ৪৫ থেকে ৫০ টাকা বেশি দামে সয়াবিন তেল বিক্রি করছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তৎপর হয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। ভোজ্যতেলের সরবরাহ পরিস্থিতি ও সরকার নির্ধারিত দাম কতটা মান হচ্ছে তা যাচাইয়ে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান এবং মিলগুলোতে আবারও অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
অধিদপ্তরের একাধিক টিম আজ বুধবার থেকে এ অভিযান চালাবে বলে জানা গেছে। এই অভিযানে কোম্পানিগুলোর গত এক মাসের ভোজ্যতেলের সার্বিক সরবরাহ পরিস্থিতি যাচাই এবং কোন দামে বাজারজাত হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হবে।
কোম্পানির উৎপাদন বা পরিশোধন ও বাজারজাতকরণ স্বাভাবিক সক্ষমতার কম হলে তার ব্যাখ্যা চাওয়া হবে।
পাশাপাশি এ সময়ের মধ্যে কোনো আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান কী পরিমাণ এলসি খুলেছে, আগে খোলা এলসির কতটা জাহাজীকরণ হয়েছে এবং তার কতটা পথে আছে (সমুদ্রগামী), বন্দরে কী পরিমাণ এসে পৌঁছেছে, তার নিষ্পত্তি কেমন হয়েছে, গুদামে কতটা ঢুকেছে এবং তার কী পরিমাণ পরিশোধন হয়েছে-এসব মূল্যায়ন করা হবে।
একইসঙ্গে পরিশোধিত তেলের কী পরিমাণ কোম্পানিগুলো ডিও বা এসও দিয়েছে, তার বিপরীতে কী পরিমাণ তেল সরবরাহ করা হয়েছে– সেসব ডকুমেন্ট যাচাই করা হবে। অভিযানে পাওয়া এসব তথ্য প্রতিবেদন আকারে সরকারের বিভিন্ন বিভাগে পেশ করা হবে।
জানতে চাইলে অভিযান চালানোর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) এএইচএম সফিকুজ্জামান।
তিনি নিউজবাংলাকে জানান, ‘আগেই বলা হয়েছে ঈদের পর ভোজ্যতেলের নতুন দাম নির্ধারণ করা হবে। তার আগ পর্যন্ত উৎপাদক থেকে শুরু করে খুচরা পর্যায়ে বর্তমান দামই বহাল থাকবে। যথেষ্ট মজুতও আছে। কেন সরবরাহ সংকট তৈরি হচ্ছে তা খতিয়ে দেখতে অধিদপ্তর আবারও মিল পর্যায়ে অভিযান শুরু করছে। এর পাশাপশি বাজারেও আমাদের অভিযান জোরদার করা হয়েছে।’