ক্রেতার সঙ্গে কর্মচারীদের দুর্ব্যবহার রোধে কঠোর হচ্ছে নিউ মার্কেট দোকান মালিক সমিতি। এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির লাগাম টানতে এবার দোকান মালিককেই দোষী সাব্যস্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
সমিতির নেতারা জানিয়েছেন, এখন থেকে কর্মচারীর খারাপ আচরণের সম্পূর্ণ দায় বর্তাবে সংশ্লিষ্ট দোকান মালিকের ওপর।
নিউ মার্কেট দোকান মালিক সমিতির সভাপতি আমিনুল ইসলাম শাহিন বুধবার নিউজবাংলাকে এমন তথ্য জানান।
এ সময় ক্রেতাদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘আপনারা স্বাচ্ছন্দ্যে নিউ মার্কেটে আসুন। কেনাকাটা করুন। আপনাদের কোনো অভিযোগ থাকলে সমিতির অফিসে এসে জানান। আমরা ব্যবস্থা নেব।’
তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত সোমবার রাত সাড়ে ১১টায় নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ শুরু হয়। পরদিন মঙ্গলবার পর্যন্ত গড়ায় এই সংঘর্ষ। দুই দিনব্যাপী এই হামলা-সংঘর্ষে প্রাণ হারান দুজন। আহত হয়েছেন অনেকে।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বুধবারও নিউ মার্কেট এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি অব্যাহত থাকে। তবে বৃহস্পতিবার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসে। ফলে শুক্রবার নিউ মার্কেটে ঈদের বিকিকিনি জমে ওঠে। শনিবারও তা অব্যাহত থাকে।
এই সংঘর্ষের ঘটনার মধ্যেই নিউ মার্কেটের দোকানিদের বিরুদ্ধে গুরুতর একটি অভিযোগ আলোচনায় আসে। তা হলো–নিউ মার্কেটের দোকান কর্মচারীরা ক্রেতাদের সঙ্গে হরহামেশা আপত্তিকর আচরণ করেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শুরু করে সর্বত্র মানুষের মুখে মুখে এই অভিযোগ ঘুরেফিরে প্রচার হতে থাকে। এ অবস্থায় নিজেদের ব্যবসার স্বার্থেই বিষয়টি আমলে নিতে বাধ্য হয় নিউ মার্কেট দোকান মালিক সমিতি।
সমিতির সভাপতি আমিনুল ইসলাম শাহিন বলেন, ‘এবার আমরা সিরিয়াস। দোকান মালিকদের ডেকে বলে দিয়েছি- দোকানের কর্মচারীরা খারাপ ব্যবহার করবে, মারামারিতে জড়াবে, আর নিউ মার্কেটের বদনাম হবে- এটা আর চলতে পারে না। দোকান মালিক সমিতি এটা বরদাশত করবে না। এখন থেকে কর্মচারীর খারাপ আচরণের দায় নিতে হবে সংশ্লিষ্ট দোকান মালিককেই। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত দোকান মালিকের বিরুদ্ধে সমিতি তার নিজস্ব বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। একই সঙ্গে তাকে আইনি ফৌজদারি পদক্ষেপও মোকাবিলা করতে হবে।
‘এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা যাতে আর না ঘটে সে জন্য সমিতির পক্ষ থেকে দোকান মালিকদের অ্যাওয়ার্নেস বিল্ডআপ করারও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।’
শাহিন বলেন, ‘আমরা আশা করছি, এখন থেকে নিউ মার্কেটে ক্রেতাদের আর কোনো বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হবে না। কারণ কেউ দুর্ব্যবহার করলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে আমরা মার্কেটের বিভিন্ন জায়গায় স্টিকার লাগিয়ে দিয়েছি। সেখানে সমিতির কর্মকর্তাদের মোবাইল নম্বর ও ঢাকা নিউ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির অফিসে যোগাযোগের ঠিকানা রয়েছে। এখন থেকে ক্রেতারা সহজেই তাদের অভিযোগ জানাতে পারবেন।’
আগে কেন এমন উদ্যোগ নেয়া হয়নি- এমন প্রশ্নের উত্তরে আমিনুল ইসলাম শাহিন বলেন, ‘বিষয়টি সঠিক নয়। আগেও আমাদের কাছে কেউ অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নিতাম। সেখানে কাস্টমারের সন্তুষ্টি অনুযায়ীই সংশ্লিষ্ট কর্মচারীকে সাজা দেয়া হতো। মারধর, চাকরিচ্যুতি এমনকি কখনও কখনও পুলিশেও দেয়া হতো।’