কারখানায় গ্যাস রেশনিংয়ের যে পদক্ষেপ সরকার নিয়েছিল, শিল্প মালিকদের দাবির পরিপেক্ষিতে এক সপ্তাহের মধ্যে সেই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছে।
পেট্রোবাংলা বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, বিকাল ৫টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত (৪ ঘণ্টা) সব শ্রেণির শিল্প গ্রাহকের গ্যাস ব্যবহার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হল, যা ২২ এপ্রিল শুক্রবার থেকে কার্যকর হবে।
রমজান মাসে বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাসের সরবরাহ বাড়াতে প্রতিদিন ৬ ঘণ্টা সিএনজি স্টেশনে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রাখার পর গত ১১ এপ্রিল শিল্প কারখানায়ও ৪ ঘণ্টা গ্যাস সরবরাহ না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল পেট্রোবাংলা।
এই সিদ্ধান্তে শিল্পোদ্যোক্তারা অসন্তোষ জানিয়ে আসছিল। ফলে ১৫ এপ্রিল থেকে তা কার্যকরের পর সপ্তাহ না গড়াতেই সিদ্ধান্তে পরিবর্তন আনা হলো।
সিদ্ধান্ত বদলের বিষয়ে পেট্রোবাংলা বলছে, ‘গ্যাস সঙ্কটে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে সরবরাহ নির্বিঘ্ন রাখতে শিল্পে রেশনিংয়ের উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। কিন্তু শিল্প মালিকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তা আবার চালু করে দেয়া হয়েছে।’
বিবিয়ানা গ্যাস ক্ষেত্রে উৎপাদনে বিঘ্ন ঘটনায় সরবরাহ সংকটে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার পর দুই সপ্তাহ দেশের সব শিল্প-কলকারখানায় গ্যাস সরবরাহ চার ঘণ্টা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল পেট্রোবাংলা।
রোজার প্রথম দিন থেকে রাজধানীতে গ্যাস সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ায় বিদেশ থেকে তরল গ্যাস বা এলপিজি এনে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টার পর এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
গত ১১ এপ্রিল এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ তেল, গ্যাস, খনিজসম্পদ করপোরেশন-পেট্রোবাংলা জানিয়েছিল, ‘রমজান উপলক্ষে ১২ এপ্রিল থেকে পরবর্তী ১৫ দিন বিকেল ৫টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত অর্থাৎ প্রতিদিন মোট চার ঘণ্টা সব শ্রেণির শিল্প গ্রাহকদের গ্যাস ব্যবহার বন্ধ রাখার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো।’
গ্যাস বিতরণ কোম্পানির ভিজিল্যান্স টিম বিষয়টি নিয়মিত মনিটর করবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
সাময়িক এই অসুবিধার জন্য দুঃখপ্রকাশও করেছিল পেট্রোবাংলা।
এরপর থেকেই দেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক শিল্পের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠন এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছিল।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল সচিবালয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের সঙ্গে দেখা করে শিল্পে গ্যাস সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখার অনুরোধ জানান।
সেই অনুরোধের পরিপেক্ষিতে সন্ধ্যায় পেট্রোবাংলা শিল্পকারখানায় গ্যাস বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নেয়।