দেশে ব্যবসা করার সনদ পেতে ও নবায়নে জটিলতা অব্যাহত। সে কারণে স্থানীয় উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও উৎসাহ হারাচ্ছেন বলে মনে করে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অফ বাংলাদেশ চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)।
সংগঠনটি দেশি বিনিয়োগ বাড়াতে ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে ব্যবসার খরচ কমানোর পাশাপাশি সনদপ্রাপ্তি ও নবায়নে জটিলতার দ্রুত অবসান দাবি করেছে।
এফবিসিসিআই ও বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) যৌথভাবে বৃহস্পতিবার ‘প্রেজেন্ট সিচ্যুয়েশন অফ দ্য ওয়ান স্টপ সার্ভিস সিস্টেম অফ বিডা’ শীর্ষক এক সেমিনারের আয়োজন করে।
রাজধানীর মতিঝিলে আয়োজিত সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিডার পরিচালক জীবন কৃষ্ণ সাহা রায়।
প্রবন্ধের ওপর মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক মো. নাসের, সাবেক পরিচালক এস এম কামাল উদ্দীন, বিপিজিএমইএর সভাপতি শামীম আহমেদ, এফবিসিসিআইয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবু নাঈম মো. শহীদুল্লাহ, প্যানেল উপদেষ্টা ড. মোস্তফা আবিদ খানসহ ব্যবসায়ী নেতারা।
এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, ‘প্রতি বছর সনদ নবায়ন করতে বাড়তি টাকা, সময় ব্যয় ও ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। কারখানার নিরাপত্তা সনদ নিতে হয় ৮ থেকে ১০টি সংস্থার কাছ থেকে। একাধিক সংস্থার কাছ থেকে জটিল প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন সনদ সংগ্রহ পদ্ধতি ও বছর বছর নবায়ন প্রক্রিয়ার কারণে বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও বাংলাদেশে আসতে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন।’
প্রতি বছর নবায়নের পদ্ধতি বাতিল করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এসব সনদ একটি সংস্থার কাছ থেকে ইস্যু হওয়া দরকার। প্রয়োজনে সরকারি সংস্থাগুলো এ বিষয়ে নিরীক্ষা পরিচালনা করে দেখতে পারে।
‘পুরো ইপিজেড বন্ডেড হলেও এখানকার কারখানাগুলোকে বন্ড লাইসেন্স নিতে হচ্ছে। সরকারের দেয়া প্রতিশ্রুতির ওপর ভর করে বিদেশিরা এ দেশের ইপিজেডে বিনিয়োগ করেছেন। কিন্তু এমন পদক্ষেপে তারা নিরুৎসাহিত হচ্ছেন।’
বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম ব্যবসায়ীদের বিডার ওয়ান স্টপ সার্ভিসের সেবা গ্রহণের আহ্বান জানান। ওএসএসে অন্তর্ভুক্ত অন্য সংস্থাগুলোর সেবা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে না পেলে বিডাকে জানানোর অনুরোধও করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘কোনো সংস্থা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সেবা না দিলে ওয়ান স্টপ সার্ভিস আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার বিধান আছে। আইনটি বাস্তবায়নে অর্থমন্ত্রীকে প্রধান করে একটি কমিটি আছে। কমিটিতে অন্য মন্ত্রীরাও আছেন।’
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ নিষ্পত্তিতে প্রয়োজনে মন্ত্রীদের কাছে যাওয়ারও আশ্বাস দেন তিনি।
মূল প্রবন্ধে বিডার পরিচালক জীবন কৃষ্ণ সাহা রায় বলেন, ‘বিডার ওএসএসে সেবা দিতে ৩৯টি সংস্থার সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। আরও ১১টির সঙ্গে প্রক্রিয়াধীন। বর্তমানে ৫৮টি সেবা ওএসএসের মাধ্যমে দেয়া হচ্ছে। যার মধ্যে ১৮টি বিডার নিজস্ব সেবা, বাকিগুলো অন্যান্য সংস্থার।’